Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
mukul roy

মুকুলের ৮০৩ নম্বর ঘরে তালা, নেমপ্লেট তোলার দাগ টাটকা, অনেক কিছুই বদলেছে বিজেপি দফতরে

অনেক দিনই ঘরের মালিক আসেননি। তবে নেমপ্লেটটা খুলে নেওয়া হয় শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে। জানালেন বিজেপি দফতরের এক কর্মী।

দাগ রয়ে গিয়েছে নেমপ্লেটের।

দাগ রয়ে গিয়েছে নেমপ্লেটের। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২১ ১৪:৪৩
Share: Save:

নীলবাড়ির দখলের লক্ষ্যে মধ্য কলকাতার ৬ নম্বর মুরলীধর সেন লেনের সাবেক রাজ্য দফতর ছেড়ে হেস্টিংসে তৈরি হয় বিজেপি-র নির্বাচনী কার্যালয়। সেই বাড়ির ন’তলায় চলে আসেন মুকুল রায়ও। ৮০৩ নম্বর ঘরটা ছিল মুকুলের অফিস। এখন মুকুল আবার তৃণমূলে। ওই ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে বিজেপি। দ্রুত খুলে নেওয়া হয়েছে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির নেমপ্লেটও। শুধু রয়ে গিয়েছে নেমপ্লেটের চৌকো ছাপ।

বিজেপি-র ওই দফতরের এক কর্মী জানালেন, মুকুলের নেমপ্লেট খুলে নেওয়া হয় শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে। তার কিছু ক্ষণ আগে বিকেলে, তৃণমূল ভবনে ছেলে শুভ্রাংশুকে সঙ্গে নিয়ে পুরনো দলে ফিরে যান মুকুল। তবে ওই ঘরে এখনও মুকুলের ব্যক্তিগত ব্যবহারের অনেক কিছুই রয়ে গিয়েছে। অনেক দিন ঘরের মালিক ঘরে না এলেও মুকুল তৃণমূলে ফেরার আগে পর্যন্ত প্রতিদিন নিয়ম করে ঘর ঝাড়পোছ হয়েছে। রয়ে গিয়েছে আরও অনেক কিছুই। বিজেপি দফতরের এক কর্মীর কথায়, ‘‘অফিসে থাকলে মুকুলদা রোজই দুপুরে ফল খেতেন। আবার যে সব দিন অনেকটা সময় থাকতেন তখন অন্য খাবারও। দাদার নিজস্ব থালা, প্লেট, কাপ, চামচ সবই রয়ে গিয়েছে ঘরের ভিতরে।’’

বিজেপি অফিসের এই ঘরটিতেই একটা সময় সবচেয়ে বেশি ভিড় লেগে থাকত। কারণ, ঘরের মালিকের নির্দেশে সকলের জন্য অবারিত দ্বার ছিল। দেখা করতে আগাম অ্যাপয়েন্টমেন্ট লাগত না। এক এক সময় অনুগামীদের ভিড় এতটাই থাকত যে মস্ত ঘরটায় চেয়ার কম পড়ে যেত। বাইরের বারান্দাতেও লেগে থাকত অনুগামীদের অপেক্ষা।

হেস্টিংস মোড়ের কাছে এই বাড়িটির নাম ‘আগরওয়াল হাউস’। ঠিকানা ২ নম্বর সেন্ট জর্জেস গেট রোড। এই ১০ তলা বাড়ির বেশ কয়েকটি তলা ভাড়া নিয়ে নির্বাচনের জন্য রাজ্য বিজেপি-র দফতর তৈরি হয়। গত বছর ৯ ডিসেম্বর রাজ্য সফরে এসে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা ওই দফতরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন বটে। কিন্তু বাড়ির কয়েকটি তলা বিজেপি ভাড়া নিয়েছে তারও বছর দেড়েক আগে। সিঁড়ি দিয়ে ন’তলায় উঠলে ডান দিকে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ঘর। আর বাঁ দিকে গেলে মুকুলের ছেড়ে যাওয়া ঘর। তার ঠিক পাশের ঘরটা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের। আট তলাটাও বিজেপি-র ভাড়া নেওয়া। সেখানে কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ রাজ্যের অন্যান্য বড় নেতাদের আলাদা আলাদা ঘর রয়েছে। সে সব যেমন ছিল তেমনই রয়েছে।

পাঁচ তলায় রয়েছে সাংবাদিক সম্মেলনের জন্য হল। তবে সাত তলার কলসেন্টারটা আর নেই যা নির্বাচনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। বিজেপি সূত্রে খবর, ওই তলাটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিন তলার একটি অংশ নিয়ে ভোটের আগে তৈরি হওয়া ক্যান্টিনও এখন আর নেই। তার বদলে ন’তলাতেই রান্নাবান্নার ব্যবস্থা হয়েছে। এই তলারই একটি ঘরে বসতেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে নেমপ্লেট ছিল না। দলের সঙ্গে রাজীবের সম্পর্ক কোন দিকে যাবে তা নিয়ে এখন অনেক জল্পনা। ফলে জল্পনায় এই ঘরের ভবিষ্যৎ-ও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC mukul roy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE