নরেন্দ্র মোদী। ছবি: এপি
এক সপ্তাহ বাদেই দেশের প্রধানমন্ত্রীর সভা মেদিনীপুরে। সভার সময় ও স্থান বাছাইয়ের অঙ্ক মাথায় রেখে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই মঞ্চ থেকেই আগামী লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করে দেবেন নরেন্দ্র মোদী।
বিজেপি অবশ্য আনুষ্ঠানিক ভাবে এই কর্মসূচির নাম দিয়েছে ‘কৃষক কল্যাণ সমাবেশ’। দলের তরফে জানানো হয়েছে, ধান-সহ ১৪টি খরিফ শস্যের সহায়কমূল্য বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত মোদীর মন্ত্রিসভা নিয়েছে, সে জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতেই ১৬ জুলাই মেদিনীপুরের কলেজ-কলেজিয়েট স্কুলের মাঠে সভা হবে। তবে সমীকরণ বলছে, এ সবই হচ্ছে লোকসভা ভোট মাথায় রেখে।
গত মাসে পুরুলিয়ায় সভা করে গিয়েছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। এ বার মোদী আসছেন মেদিনীপুরে। পুরুলিয়ার পাশাপাশি জঙ্গলমহলের জেলা ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরেও পঞ্চায়েত ভোটে দাগ কেটেছে বিজেপি। ফলে, আদিবাসী জনজাতি অধ্যুষিত এলাকার মানুষের কাছে গেরুয়া শিবিরের বার্তা পৌঁছে দিতেই মেদিনীপুরকে মোদীর সভাস্থল হিসেবে বাছা হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
মোদী যেখানে সভা করবেন, মেদিনীপুরের সেই কলেজ-কলেজিয়েট মাঠেই গত বছর ৯ অগস্ট ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সভা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অনুষঙ্গ টেনে সে দিন তৃণমূল নেত্রী স্লোগান বেঁধে দিয়েছিলেন— ‘বিজেপি ভারত ছাড়ো’। এ বার মোদীর সভা থেকে ‘তৃণমূল হটাও’-এর ডাক দেওয়া হবে বলে গেরুয়া শিবিরের ধারণা। ইতিমধ্যে শহরে মোদীর সভার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। শনিবার বিজেপির এক প্রতিনিধি দল মাঠ পরিদর্শন করে। ছিলেন বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শমিত দাশ। তিনি বলেন, ‘‘মেদিনীপুরে সভা করার জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ রেখেছিলাম। উনি সাড়া দিয়েছেন। আমাদের বিশ্বাস রাজ্য থেকে তৃণমূলকে উৎখাত করার বার্তাই দেবেন প্রধানমন্ত্রী।’’
এই প্রথম মেদিনীপুরে আসছেন নরেন্দ্র মোদী। তবে তাঁর জেলা সফর এই প্রথম নয়। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে খড়্গপুরে সভা করেছিলেন মোদী। বস্তুত, মেদিনীপুরের মাটিতে বরাবরই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে এসেছেন তাবড় নেতা-নেত্রীরা। জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়দের পাশাপাশি জাতীয় রাজনীতির তারকারা এখানে সভা করেছেন। নয়ের দশকে মেদিনীপুর কলেজ-কলেজিয়েট মাঠেই সভা করেন বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী। ১৯৮৪ সালের ৩০ অক্টোবর ওই মাঠে সভা করেছেন রাজীব গাঁধী। সেই সভাও ইতিহাসে ঢুকে পড়েছে। কারণ, পরদিন ৩১ অক্টোবর নিহত হন ইন্দিরা গাঁধী। ২০০১ সালে খড়্গপুরে সনিয়া গাঁধী ও ২০১৪ সালে ডেবরায় সভা করে গিয়েছেন রাহুল গাঁধীও।
বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত মানছেন, ‘‘মেদিনীপুরের মাটি স্বাধীনতা সংগ্রামের মাটি। সেই সংগ্রামী মানুষকে সম্মান জানাতেই প্রধানমন্ত্রী আসছেন।’’ তৃণমূল অবশ্য এই সভাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির মন্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সরকারের জনপ্রিয়তায় মোদীর সভা আঁচড় কাটতে পারবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy