চার বছরে এই নিয়ে ১২ বার। উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজে বাধা পেয়ে ফিরে এলেন সরকারি কর্মীরা। অথচ কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গের ডালখোলা পর্যন্ত ৪৫৩ কিলোমিটার লম্বা রাস্তার প্রায় পুরোটাতেই চার লেন তৈরি হয়ে গিয়েছে। কেবল আমডাঙার কয়েক কিলোমিটার এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধার জন্য গোটা রাস্তাটি থমকে রয়েছে। অগত্যা আজ, মঙ্গলবার স্থানীয় বাসিন্দাদের আবার বৈঠকে ডেকেছে প্রশাসন। এই নিয়ে এটা সম্ভবত ২১তম বৈঠক, বলছেন আধিকারিকরা।
উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে চলাচলের ধমনী বলা চলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ককে। কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গের ডালখোলা পর্যন্ত সড়কটি চার লেন করার প্রস্তাব নেওয়া হয় বছর পাঁচেক আগে। ২০০৯ সালে কেন্দ্রীয় বাজেটে ২০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। সম্প্রসারণের জন্য এখনও সাত জেলায় কয়েক লক্ষ একর জমি নেওয়া হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমডাঙায় মাত্র ৩০ একর জমির জন্য চার বছর ধরে আটকে যাচ্ছে কাজ। সোমবার রাস্তার কাজ করতে গিয়ে শ’খানেক বাসিন্দার কাছে বাধা পেয়ে ফিরে এসেছেন সরকারি কর্মীরা। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও রাজস্ব) বিজিত ধর বলেন, “জমি জরিপের কাজে বাধা পেয়ে কর্মীরা ফিরে এসেছেন। বাসিন্দাদের আলোচনায় ডাকা হয়েছে।” ওই দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ২০০৯ সাল থেকে বিষয়টি নিয়ে বারবার বৈঠক হয়েছে। সুরাহা হয়নি কিছুই। কেন এই দশা? বাসিন্দাদের একাংশ দোষ দিচ্ছেন রাজনৈতিক দলগুলোকে। বছর চারেক আগে বাম জমানায় রাস্তার কাজ আটকে দেয় তৃণমূল। ক্ষমতায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রসারণ চাইলেও দলের নেতা-কর্মীরাই কাজে অসহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ। জাতীয় সড়কের কর্তাদের দাবি, জনপ্রতিনিধিরা বৈঠকে আশ্বাস দিলেও কাজের কিছুই করছেন না। রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সোমবার বলেন, “জোর করে জমি নেওয়া বা উচ্ছেদ করা যাবে না। কেউ স্বেচ্ছায় জমি দিলে কাজ হবে। এটাই আমাদের সরকারি নীতি।” কিন্তু সব জায়গায় কাজ হলেও এই জেলায় বারবার কাজ আটকে যাচ্ছে কেন? মন্ত্রী বলেন, “জমি মালিকদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে কাজ করতে হবে। জেলাপ্রশাসন অনেকটাই এগিয়েছেন। একটু বাধা রয়েছে, সেটা হয়ে হবে।”