বোলপুর থানার আইসি ও তাঁর পরিবারের প্রতি কু-কথা বলায় অভিযুক্ত বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত (কেষ্ট) মণ্ডলের বিরুদ্ধে পুলিশ কী পদক্ষেপ করেছে, জানতে চেয়ে ফের রিপোর্ট তলব করল জাতীয় মহিলা কমিশন। অনুব্রতের বিরুদ্ধে পুলিশ এখনও কেন কড়া পদক্ষেপ করেনি, প্রশ্ন তুলেছে তারা। সরব বিরোধীরাও। অনুব্রত এবং নিলম্বিত টিএমসিপি নেতা বিক্রমজিৎ সাউয়ের বিরুদ্ধে কু-কথা বলার অভিযোগ থাকলেও, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে বুধবার সিউড়ি থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি।
জাতীয় মহিলা কমিশন প্রথমে ‘অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট’ চেয়েছিল। কমিশন সূত্রের দাবি, যে রিপোর্ট তারা পেয়েছে, তা ‘সন্তোষজনক’ নয়। অনুব্রতের মামলায় অগ্রগতি ও ‘রিভিউ অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট’ চেয়ে মঙ্গলবার ফের রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে চিঠি দিয়েছে কমিশন। কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার এ দিন বলেন, “অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট চেয়েছিলাম। বীরভূমের পুলিশ সুপার যে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন, তা নিয়ে পর্যালোচনা হয়েছে। আমরা এই রিপোর্টে খুশি নই। রিপোর্টে অনেক তথ্য দেওয়া হয়নি।”
প্রথম ‘অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট’ পাওয়ার পরেই অর্চনা প্রশ্ন তুলেছিলেন, আইসি-র দু’টি ফোন বাজেয়াপ্ত করা হলেও কেন কেষ্টর ফোন বাজেয়াপ্ত করা যায়নি। এই অপরাধে আর কী-কী ধারা যুক্ত হতে পারে, জানতে চেয়েছে কমিশন। যদিও জেলা পুলিশ সূত্রের দাবি, কেষ্টর একটি ফোন বাজেয়াপ্ত হয়েছে। জেলা পুলিশের একাধিক শীর্ষ কর্তার দাবি, “অনুব্রতের বিরুদ্ধে যে ধারাগুলি প্রয়োগ হয়েছে, ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় সেগুলির মধ্যে কয়েকটি ধারার সর্বোচ্চ সাজা সাত বছর। এই পরিস্থিতিতে কাউকে গ্রেফতার করতেই হবে, এমন বাধ্যবাধকতা নেই। নোটিস দিয়ে অভিযুক্তকে ডাকা হবে। অনুব্রতের ক্ষেত্রে সেটাই করা হয়েছে। তিনি হাজিরাও দিয়েছেন।” তাঁদের মতে, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা যদি তদন্তে সহযোগিতা না করেন, তা হলে আদালতে জানিয়ে তাঁকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। সে পরিস্থিতি এখনও আসেনি।
তবে আঙুল উঠেছে আইসি লিটন হালদারের দিকেও। বালির অবৈধ কারবারের সঙ্গে আইসি-র ‘সম্পর্ক’ খতিয়ে দেখার দাবিও এই সূত্রে করছেন বোলপুরের বাসিন্দাদের একাংশ। পাশাপাশি, ফোন কলের ‘অডিয়ো রেকর্ডিং’ কী ভাবে সমাজমাধ্যমে এল, তা খতিয়ে দেখার দাবিও উঠছে। ২৯ মে রাতে ওই ‘অডিয়ো-ক্লিপ’ সমাজমাধ্যমে দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ঘটনাচক্রে, তার কয়েক ঘণ্টা আগে, আইসি-র বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগে প্রকাশ্যে তোপ দেগেছিলেন অনুব্রত। সে ব্যাপারে আইসি-র প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)