আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। — ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে ভাঙড়ে অশান্তি সংক্রান্ত ঘটনায় বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে তলব সিআইডির। সোমবার বিধানসভা থেকে বেরিয়ে সোজা সিআইডির দফতর ভবানী ভবনে যান ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) বিধায়ক। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে জানালেন, ৩১ অগস্ট আবার ডাকা হয়েছে তাঁকে। তবে এ ভাবে ডেকে তাঁকে চাপে রাখা যাবে না বলেও জানান। ৪২ দিন জেল খাটানো হয়েছে। তদন্তকারীদের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাশীপুর থানায় গত ১৬ জুন পঞ্চায়েত ভোটে খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। নওশাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছিল মামলা। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে নওশাদকে তলব করেছে সিআইডি। বিধানসভার অধিবেশন শেষ করে সোমবার সেখানে যান তিনি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে বলেন, ‘‘যেদিন আদিবাসী সমাজের পাশে দাঁড়াতে, আমি চোপড়া গেলাম, সে দিন নোটিস পেলাম। তাঁরা না খেয়ে ছিলেন। আমি গিয়ে খাবারের ব্যবস্থা করি।’’ এই তলবের বিষয়ে তদন্তকারীদের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘শাসকের যাঁরা অন্যায় করেছেন, তাঁরা বিচরণ করছেন। ভাঙড়ে যে অশান্তি হয়েছে, তাঁর মূল নায়ক শওকত মোল্লা। তাঁকে কোথায় ডাকা হচ্ছে? আরাবুল ইসলাম, তাঁর ছেলে, জুলু সাহেব, এঁদের কোথায় ডাকছে? এঁদের ডাকবেও না এই সরকার।’’ তবে এই তলব নিয়ে তিনি বিচলিত নন বলেও জানিয়েছেন নওশাদ। এমনকি তলব থেকে বাঁচতে হাই কোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টেও যাবেন না। তাঁর কথায়, ‘‘তদন্তের হাত থেকে বাঁচার জন্য হাই কোর্ট, সু্প্রিম কোর্টে ছুটে যেতে হবে, তা আমার দ্বারা হবে না। আমাকে রক্ষাকবচ দাও। বলব না।’’
গত ১৬ জুন নওশাদ-সহ ৬৮ জনের বিরুদ্ধে কাশীপুর থানায় মামলা দায়ের হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযোগ করেছিলেন ভাঙড় ২ ব্লকের হাটগাছা গ্রামের বাসিন্দা ঋত্বিক নস্কর। অভিযোগপত্রে তিনি জানিয়েছিলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন জমা করানোর জন্য হাটগাছার কয়েক জন বাসিন্দাকে নিয়ে তিনি এবং তাঁর শ্বশুর রাজু নস্কর ভাঙড় ২ ব্লকের দিকে যাওয়ার পথে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হন। পানাপুকুরের কাছে তাঁদের দু’জনকে ফেলে বাঁশ, লাঠি, লোহার রড দিয়ে পেটাতে থাকেন অভিযুক্তেরা। তাঁদের কাছে বোমা-বন্দুকও ছিল। দুষ্কৃতীরা ইট দিয়ে থেঁতলে এবং টাঙ্গি দিয়ে কুপিয়ে তাঁর শ্বশুর রাজু নস্করকে খুন করেন বলে অভিযোগ। এমনকি, মৃত্যু নিশ্চিত করতে তাঁকে গুলিও করা হয়। কোনওক্রমে পালিয়ে বেঁচেছিলেন ঋত্বিক। তাঁর দাবি, এর নেপথ্যে ছিলেন আইএসএফ আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। তাঁর আরও দাবি, নওশাদের ‘চক্রান্ত এবং প্ররোচনা’য় এই হামলা চালানো হয়েছিল। ঋত্বিকের অভিযোগের ভিত্তিতে নওশাদের বিরুদ্ধে ২৭৭ নম্বর এফআইআরে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুনের মামলা রুজু করেছিল কাশীপুর থানার পুলিশ। সেই মামলাতেই নওশাদকে তলব সিআইডির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy