Advertisement
E-Paper

কলকাতাতেও প্রায় ৫০০ পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা পেতে সমস্যা! কোথাও ভুল কেওয়াইসিতে, কোথাও অ্যাকাউন্ট নম্বরে

কোনও কোনও ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বর লেখার সময় একটি অঙ্কে ভুল ছিল। আবার কোথাও আইএফএসসিতে ভুল ধরা পড়েছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে কেওয়াইসির সমস্যাও রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:১৭
ট্যাবের টাকা ঘিরে সমস্যা কলকাতার পড়ুয়াদেরও।

ট্যাবের টাকা ঘিরে সমস্যা কলকাতার পড়ুয়াদেরও। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নম্বর বা আইএফএসসিতে কোনও ভুল নেই। অথচ অ্যাকাউন্টে আসেনি স্কুলপড়ুয়াদের জন্য ট্যাব কেনার টাকার টাকা। এমন অভিযোগও রয়েছে কলকাতায়। ট্যাবের টাকা ঘিরে বিতর্ক তৈরির পর জেলা স্কুল পরিদর্শকেরা বিভিন্ন স্কুলে পড়ুয়াদের তথ্য আবার যাচাই করানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। সেই তথ্য যাচাইয়ের সময়েই বিভিন্ন স্কুল থেকে এই সমস্যাগুলি উঠে এসেছে। সূত্রের খবর, শহরে প্রায় পাঁচশোর কাছাকাছি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ঘিরে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ওই অ্যাকাউন্টগুলিতে ট্যাব কেনার টাকা প্রবেশ করেনি বলে অভিযোগ। কলকাতার প্রায় ৮০টি স্কুলে এই ধরনের সমস্যা রয়েছে বলে অভিযোগ।

এগুলির মধ্যে কোনও কোনও ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বর লেখার সময় একটি অঙ্কে ভুল ছিল। আবার কোথাও আইএফএসসিতে ভুল ধরা পড়েছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে কেওয়াইসির সমস্যাও রয়েছে। আবার এমন অ্যাকাউন্টও রয়েছে, যেগুলিতে অ্যাকাউন্ট নম্বর বা আইএফএসসিতে কোনও ভুল না থাকার পরেও টাকা প্রবেশ করেনি। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের ট্যাব কিনতে, ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে পড়ুয়াপ্রতি ১০ হাজার টাকা করে দেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই টাকা অ্যাকাউন্টে জমা পড়া নিয়েও শুরু হয়েছে বিতর্ক।

প্রথমে পূর্ব বর্ধমান জেলায় এবং তার পর ক্রমশ তা জেলার গণ্ডি ছাপিয়ে কলকাতাতেও প্রবেশ করেছে। কলকাতাতেও অনেক পড়ুয়াই ট্যাব কেনার টাকা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ। অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগ উঠছিল স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। স্কুল কর্তৃপক্ষ সঠিক ভাবে তথ্য তালিকাভুক্ত করেছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন অভিভাবকদের একাংশ। তবে অভিযোগ উঠছে কোনও কোনও ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্যে ভুল না থাকার পরেও ট্যাবের টাকা মেলেনি।

ট্যাব বিতর্কে ইতিমধ্যে কলকাতার একাধিক থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। প্রথমে যাদবপুর ও ঠাকরপুকুরের দু’টি করে স্কুল থেকে এই অভিযোগ উঠে এসেছিল। বুধবার রাতে জানা যায় আরও তিনটি নতুন অভিযোগ দায়ের হয়েছে কলকাতায়। ওয়াটগঞ্জ থানা, মানিকতলা থানা এবং বেনিয়াপুকুর থানায় অভিযোগ জমা পড়েছে। এই নিয়ে কলকাতায় মোট ৬টি থানায় অভিযোগ রুজু হল। যাদবপুর থানায় ১২টি, ঠাকুরপুকুর থানায় ৩১টি, কসবা থানায় ১০টি, ওয়াটগঞ্জ থানায় ২টি, মানিকতলা থানায় ২টি এবং বেনিয়াপুকুর থানায় ৫টি অভিযোগ জমা হয়েছে।

রাজ্য সরকারের ‘তরুণের স্বপ্ন’-এর উপভোক্তাদের জন্য পাঠানো টাকা কী ভাবে অন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশেই সোমবার বিকেলে বিশেষ বৈঠক হয় নবান্নে। মুখ্যসচিবের সঙ্গে ওই বৈঠকে ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার এবং বিভিন্ন জেলার প্রশাসনিক কর্তারা। ওই বৈঠকের সময়ে অভিযোগ উঠে এসেছিল, প্রায় ৩০৯ জন পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা অন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। সেই টাকা ফেরানোর প্রক্রিয়াও শুরু করেছিল রাজ্য সরকার। শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, ওই ৩০৯টি অ্যাকাউন্টের মধ্যে এখনও পর্যন্ত অন্তত ৭০টি অ্যাকাউন্টে টাকা ফেরানো হয়েছে।

রাজ্য ও কলকাতায় ট্যাবের টাকা ঘিরে এই বিতর্কের জন্য রাজ্য প্রশাসনকেই কাঠগড়ায় তুলছে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের কথায়, “এত সংখ্যক ‘ফেলড ট্রানজ়াকশন’ হল কী করে, তা খতিয়ে দেখা দরকার। এর জন্য তো স্কুল বা জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতরকে দায়ী করা যাবে না। এর জন্য দায়ী অর্থ দফতর ও শিক্ষা দফতর।”

শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারীর সন্দেহ ট্যাবের টাকা ঘিরে কোনও দুর্নীতি হয়ে থাকতে পারে। তাঁর বক্তব্য, “স্রেফ অনুমানের ভিত্তিতে এফআইআর না করে, প্রকৃত তদন্ত করা হোক।”

Education Kolkata Students
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy