Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
NIA Arrest

ভূপতিনগরে বিস্ফোরণের ঘটনায় ধৃত দুই তৃণমূল নেতার পাঁচ দিনের এনআইএ হেফাজত

আদালতে এনআইএ জানিয়েছে, ধৃত দু’জনকে হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন। ইতিমধ্যেই তল্লাশি চালিয়ে নগদ ২ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা এবং চারটি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থাটি।

NIA produced two accused TMC leaders of Bhupatinagar blast case

আদালতে বলাইচরণ মাইতি (বাঁ দিকে) এবং মনোব্রত জানা। ছবি: সারমিন বেগম।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৫৭
Share: Save:

পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া দুই তৃণমূল নেতা বলাইচরণ মাইতি এবং মনোব্রত জানাকে শনিবার বিকেলে কলকাতার বিচার ভবনে হাজির করানো হয়। তাঁদের পাঁচ দিনের জন্য হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতের কাছে আর্জি জানায় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেসন এজেন্সি বা এনআইএ)। তাদের সেই আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। কলকাতার নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারক সৌমেন্দ্রনাথ দাস, ধৃত দু’জনকে আগামী বুধবার (১০ এপ্রিল) পর্যন্ত এনআইএ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

আদালতে এনআইএ জানিয়েছে, তদন্তের অগ্রগতির জন্য ওই দু’জনকে হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন। ইতিমধ্যেই তল্লাশি চালিয়ে নগদ ২ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা এবং চারটি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থাটি।

এনআইএ-র তরফে আদালতে সওয়াল করে জানানো হয়, বিস্ফোরণকাণ্ডে ধৃত দু’জনের নাম উঠে আসে। সাক্ষীদের বয়ানেও এই দুই নেতার প্রসঙ্গ এসেছে বলে দাবি করেছে এনআইএ। কেন্দ্রীয় সংস্থাটির আরও বক্তব্য, বার বার সমন পাঠালেও তাঁরা হাজিরা দেননি। উল্টে দু’জনের প্ররোচনায় শনিবার তাঁদের আধিকারিকদের উপরে হামলা চালানো হয়েছে বলে আদালতে জানায় এনআইএ।

অভিযুক্তদের আইনজীবী সব্যসাচী বন্দ্যোপাধ্যায় যে কোনও শর্তে অন্তর্বর্তিকালীন জামিনের জন্য আবেদন করেন। তিনি জানান, এনআইএ-র হাজিরা দেওয়া সংক্রান্ত নোটিসের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিযুক্তরা। ভোটের আগেই কেন দু’জনকে গ্রেফতার করা হল, আদালতে সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি।

এনআইএ-র তরফে জানানো হয়, শনিবার ভোর থেকে ভূপতিনগরের পাঁচটি জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে বলাইচরণ এবং মনোব্রতকে গ্রেফতার করা হয়। মনোব্রতের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়। অভিযোগ, সেখানে স্থানীয়েরা আধিকারিকদের বাধাদানের চেষ্টা করেন। এনআইএ-র এক আধিকারিক অল্প চোটও পান। কয়েক জন সংস্থার গাড়িতে হামলা চালায়। এনআইএ-র দাবি, ভূপতিনগর থানায় যেতে আধিকারিকদের বাধা দেওয়া হয়েছে। সেখানে গ্রেফতারি সংক্রান্ত প্রক্রিয়া শেষ করার কথা ছিল এনআইএ-র। সেই থানায় যেতেই বাধা দেওয়া হয়। এই নিয়ে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে এনআইএ। এনআইএ দাবি করেছে, তদন্তে জানা গিয়েছে, মনোব্রত এবং বলাইচরণ বোমা তৈরি এবং তা বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্র করেছিলেন আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে পূর্ব মেদিনীপুরের নারুয়াবিলার গ্রামে রাজকুমার মান্নার বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিনিও তৃণমূল নেতা ছিলেন। রাজকুমার নিজে গুরুতর জখন হন। জখম হন বিশ্বজিৎ গায়েন এবং বুদ্ধদেব মান্না। তিন জনেরই মৃত্যু হয়। ২০২২ সালের ৩ ডিসেম্বর রাজ্য পুলিশ তিন জনের মৃত্যুতে এফআইআর দায়ের করে। যদিও বিস্ফোরক পদার্থ আইন প্রয়োগ করা হয়নি। উপযুক্ত ধারা প্রয়োগ এবং এনআইএ-র হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে হলফনামা দায়ের করা হয়। ২০২৩ সালের ২১ মার্চ নতুন ধারা প্রয়োগের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট।

২০২৩ সালের ৪ জুন তদন্তভার হাতে নেয় এনআইএ। তাদের দাবি, তদন্তে বলাইচরণ এবং মনোব্রতের ভূমিকা প্রকাশ্যে এসেছে। দেখা গিয়েছে, বিস্ফোরণে তাঁরা জড়িত। দু’জনে বোমা তৈরির ষড়যন্ত্র করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bhupatinagar Blast Case NIA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE