নোটিসটা ঈদের ছুটির। ছুটি ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত। তার পর দিন হাজির না হলে ৫০ টাকা জরিমানা। তার পরেও গরহাজির থাকলে প্রতিদিন জরিমানা ১০ টাকা করে। কিন্তু মুর্শিদাবাদের লালগোলার মকিমনগরের এক অননুমোদিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই নোটিস যিনি দিয়েছেন, সেই মোফাজ্জুল শেখ কবে আবার সেখানে হাজির হবেন বা আদৌ হাজির হবেন কি না তা নিয়েই ধন্দ দেখা দিয়েছে। কারণ, খাগড়াগড় বিস্ফোরণ-কাণ্ডে অভিযুক্ত আব্দুল হাকিম, রাজিয়াবিবি, আলিমাবিবির সূত্রে মঙ্গলকোটের শিমুলিয়া মাদ্রাসা ছাড়াও জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) রেডারে রয়েছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিস্ফোরণ-কাণ্ডের পরে সপরিবার এলাকাছাড়া ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা মোফাজ্জুল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০০৮ সালে মকিমনগরে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন স্থানীয় বাসিন্দা পাট-আলু-ডিমের ব্যবসায়ী তথা রাজমিস্ত্রির ঠিকাদার মোফাজ্জুল। খাগড়াগড় বিস্ফোরণ হয় ২ অক্টোবর। ৭ অক্টোবর থেকে তিনি সপরিবার নিখোঁজ। তবে বিস্ফোরণ-কাণ্ডে ধৃত রাজিয়া, আলিমা ও হাকিমের ছবি সংবাদমাধ্যমে দেখে চমকে উঠেছিলেন এলাকাবাসী। সাত-আট মাস আগেও হাকিমকে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রান্না করতে দেখেছেন তাঁরা। সেই সুবাদেই সেখানে যাতায়াত ছিল রাজিয়া-আলিমার।
মঙ্গলবার ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা গেল, ভবনটির দু’টি অংশ। একটিতে ঢালাই ছাদ রয়েছে। আর একটি ইটের গাঁথনি দেওয়া, ছাদ টিনের। অফিসঘর তালাবন্ধ। বাইরের দিকে শুধু একটি জানলা খোলা। দু’টি স্নানাগার ও সাতটি শৌচাগার রয়েছে। শৌচাগারের একটিতে পড়ে রয়েছে কিছু পোড়া কাগজ। এতটাই পুড়েছে যে, তা থেকে কিছু উদ্ধার করা কার্যত অসম্ভব। ১৪টি ঘরের একটিতে পড়ে আছে বেশ কয়েকটি ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ। আর একটিতে দেখা গিয়েছে একটি সিম-কার্ড। ভাঙা। রান্নাঘরের পাশের ঘরে একটি সাইকেল ও দু’টি মোটরবাইক, একটি মোটরবাইকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর অন্য জেলার। প্রতিটি ঘরেই রাখা রয়েছে ট্রাঙ্ক। এবং সেগুলোর বেশিরভাগই তালাবন্ধ। কিছু খোলা ট্রাঙ্কে রয়েছে বই ও জামাকাপড়। রান্নাঘরে দু’টি বড় কাঠের উনুন, একটি গ্যাস সিলিন্ডার। আর আছে চাল, নুন ও লঙ্কাগুঁড়ো।