E-Paper

নিসার: অভিযানের নেপথ্যে বঙ্গের কৌশিক, বিমল

ইসরো এবং নাসার প্রথম যৌথ উদ্যোগে তৈরি কৃত্রিম উপগ্রহ ‘নিসার’-এর উৎক্ষেপণে জড়িয়ে রয়েছেন এ রাজ্যের দুই বাঙালি বিজ্ঞানী কৌশিক মণ্ডল ও বিমল ভট্টাচার্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২৫ ০৮:১৮
‘নিসার’ উৎক্ষেপণ।

‘নিসার’ উৎক্ষেপণ। —ফাইল চিত্র।

কৃত্রিম উপগ্রহকে কক্ষপথে পাঠানোর জন্য তথ্য বিশ্লেষণের দলে ছিলেন এক জন। ওই উপগ্রহ মহাকাশ থেকে যে সব তথ্য পাঠাবে, তা বিশ্লেষণ করে সরকারকে পাঠাবে যে দল, তাতে রয়েছেন অন্য জন। ইসরো এবং নাসার প্রথম যৌথ উদ্যোগে তৈরি কৃত্রিম উপগ্রহ ‘নিসার’-এর উৎক্ষেপণে এ ভাবেই জড়িয়ে রয়েছেন এ রাজ্যের দুই বাঙালি বিজ্ঞানী কৌশিক মণ্ডল ও বিমল ভট্টাচার্য।

পূর্ব বর্ধমানের মেমারির মেলনা গ্রামের কৌশিক ২০১৬ সাল থেকে কেরলের তিরুঅনন্তপুরমে ইসরোর কেন্দ্রে কর্মরত। সৌরযান ‘আদিত্য এল ১’, চন্দ্রযান-৩ অভিযানেও শামিল ছিলেন তিনি। গত দশ দিন ধরে আছেন অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশকেন্দ্রে। তার আগে তিরুঅনন্তপুরমে দীর্ঘদিন ‘নিসার’ উৎক্ষেপণের তথ্য বিশ্লেষক দলে ছিলেন। কৃত্রিম উপগ্রহটিকে কক্ষপথে পাঠাতে শ্রীহরিকোটায় যে দল গঠিত হয়, তার সদস্য তিনি।

কৌশিক মণ্ডল।

কৌশিক মণ্ডল।

মেমারির বনগ্রাম পরমানন্দ মিশনে স্কুলের পড়াশোনা, বর্ধমানের ইউআইটি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং এবং হাওড়ার শিবপুরে এমটেক করেন কৌশিক। এমটেক করার সময়েই ইসরোয় চাকরি পান। তাঁর বাবা সাধনচন্দ্র মণ্ডলের ছোট মুদির দোকান ছিল। তিনি বলেন, ‘‘খুব কষ্ট করে দুই ছেলেকে বড় করেছি।’’ পড়শি ও আত্মীয়েরা জানান, গ্রন্থাগার ও বন্ধুদের থেকে বই নিয়ে পড়াশোনা করতেন কৌশিক ও তাঁর ভাই শৌভিক। তিনি আরামবাগের একটি কলেজের শিক্ষক। কৌশিক জানান, ‘নিসার’ ভূপৃষ্ঠের নীচে থাকা বিভিন্ন ‘প্লেট’-এর উচ্চ মানের ছবি তুলে ইসরোয় পাঠাবে। সে ছবি বিশ্লেষণ করে হিমবাহ, ভূমিকম্প-সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশ্লেষণ করা যাবে। জলবায়ু পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ, কৃষি ব্যবস্থাপনায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে ‘নিসার’। তিনি বলেন, ‘‘দেশ ইতিহাস তৈরি করছে। খুব গর্ব বোধ করছি।’’

বিমল ভট্টাচার্য।

বিমল ভট্টাচার্য।

ইসরোর কৃষি, অরণ্য ও বাস্তুতন্ত্র বিষয়ক গ্রুপের ডিরেক্টর বিমলের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে। পড়াশোনা করেছেন অশোকনগর বয়েজ সেকেন্ডারি স্কুলে। তার পরে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও দিল্লির ‘পুসা’য় ইন্ডিয়ান এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটে। বছর ২৫ আগে যোগ দেন ইসরোয়।

বিমল জানান, ফসলের উৎপাদনের পূর্বাভাস এবং ফসল নষ্টের বিষয়ে তথ্য বিশ্লেষণে ভূমিকা রয়েছে তাঁদের। সে জন্য ফসলের ‘ম্যাপিং’, ‘অ্যালগরিদম মডেল’ ঠিক করছেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘‘নিসারের থেকে আসা তথ্য, পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে আরও কয়েক মাস সময় লাগবে। এই বিশ্লেষণের ফলে ফসলের পূর্বানুমান, ফসল কতটা নষ্ট হয়েছে— জানা সহজ হবে। সে ক্ষেত্রে কৃষকের ফসল বিমা পাওয়ার মতো বিষয়গুলি আরও স্বচ্ছ ভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

ISRO NASA

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy