Advertisement
E-Paper

পুলিশের ওপর ছড়ি নয় কারও, কড়া মুখ্যমন্ত্রী

দু’দিন আগে গুন্ডা দমনে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার বোলপুরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের জানিয়ে দিলেন, ‘‘বদমায়েশি করে কেউ পার পাবে না। ক্রিমিনালদের শক্ত হাতে মোকাবিলা করা হবে।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৪০

দু’দিন আগে গুন্ডা দমনে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার বোলপুরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের জানিয়ে দিলেন, ‘‘বদমায়েশি করে কেউ পার পাবে না। ক্রিমিনালদের শক্ত হাতে মোকাবিলা করা হবে।’’ শুধু কথার কথা নয়! এ ব্যাপারে জেলা পুলিশের মনোবল বাড়াতে বীরভূমের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন এ-ও বললেন, ‘‘পুলিশ পুলিশের কাজ করবে। থানায় ঢুকে কেউ পুলিশকে চমকে চলে যাবে, এমনটা বরদাস্ত করব না।’’

বীরভূমের আগে বুধবার পুরুলিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেদিনও কম বেশি এমনই বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। পুরুলিয়ায় শিল্প তালুক গড়ে তোলার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। সে দিকে তাকিয়ে স্থানীয় জন প্রতিনিধি ও প্রশাসনের আধিকারিকদের মুখ্যমন্ত্রী দৃশ্যত চোয়াল শক্ত করে বলেছিলেন,‘‘শিল্পে কোনও জুলুমবাজি চলবে না। যে কোনও রকম শিল্পে সহযোগিতা করতে হবে।’’ বোলপুরে গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে বৈঠকে বসে কমবেশি সেই ধারাই বজায় রাখেন তিনি। সাম্প্রতিক কালে খুন, জখম, গোষ্ঠী সংঘর্ষের নানা ঘটনায় বার বার শিরোনামে উঠে এসেছে বীরভূমের নাম। নানুরের রাজনৈতিক দখল নিয়ে গোষ্ঠী সংঘর্ষে খোদ জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর ঘনিষ্ঠ গদাধর হাজরার নামে অভিযোগ উঠেছে। সেই প্রেক্ষিতেই মুখ্যমন্ত্রী এ দিন নানুর থানার ওসির কাছে জানতে চান, ‘‘এলাকার অবস্থা কেমন?’’ সেই সঙ্গে বলেন, ‘‘শুনুন যে ভাবেই হোক এলাকা ঠাণ্ডা রাখতে হবে। বাইরের কোনও লোক যেন আপনার এলাকায় ঢুকে গোলমাল পাকাতে না পারে। যারা বাইরে রয়েছে, বাইরেই থাকবে।’’ একই ভাবে দুবরাজপুর এবং ইলামবাজারের ওসিকেও সতর্ক করেন তিনি। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এ সব মন্তব্য নিয়ে বিরোধীরা এ দিনও কটাক্ষ করেছেন। সুজন চক্রবর্তী-আবদুল মান্নানদের বক্তব্য, লোক দেখানো প্রলাপ বকছেন মুখ্যমন্ত্রী। উনি ভালো করেই জানেন জেলায় জেলায় যাবতীয় গণ্ডগোল ও খুন খারাপির মূলে রয়েছেন তৃণমূলের নেতারাই। কোথাও তাঁরা বিরোধীদের মারধর করছেন। কোথাও আবার তোলা ও জুলুমের টাকা বখরা এবং এলাকার দখল নিয়ে নিজেদের মধ্যেই মারামারি করছেন! রাঘববোয়াল পরের কথা থানায় ঢুকে পুলিশকে চমকাচ্ছেন তৃণমূলের তস্য ছোট নেতারাও।

বিরোধীদের এই সব সমালোচনা শাসক দলের গায়ে বিঁধছে ঠিকই। কিন্তু তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, ভুলে গেলে চলবে না বাংলায় রাজনৈতিক সংস্কৃতি নষ্ট করার মূলে রয়েছে বামেরাই। এলাকা দখল, তোলাবাজি, জুলুমের সংস্কৃতি ওরাই শুরু করেছে। আর তা ক্রমশ মহামারির আকার নিয়েছে। শাসক দলের এক শীর্ষ সারির নেতার কথায়, বিরোধীরা নেতিবাচক রাজনীতি করলেও দিদি কিন্তু এ বার সিরিয়াস। কারণ তিনি বুঝতে পারছেন রাজ্যে আইনের শাসন কায়েম করতে না পারলে উন্নয়ন ও শিল্পায়ন সম্ভব নয়। তাই লক্ষ করলে দেখা যাবে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই কথা গুলো ধারাবাহিক ভাবে বলছেন তিনি। বীরভূম ও পুরুলিয়ার আগে গত এক মাসে উত্তরবঙ্গে, দুই মেদিনীপুরে এবং হাওড়া ও উত্তর ২৪ পরগণায় প্রশাসনিক বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেও পই পই করে এই কথাগুলিই বলেছেন তিনি। শুক্রবার বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠকেও কমবেশি এ ধরনের কথাই শোনা যাবে তাঁর মুখে।

প্রশ্ন হল, তার পরেও বিভিন্ন জেলা থেকে বিক্ষিপ্ত ভাবে তোলাবাজি ও জুলুমের অভিযোগ কেন আসছে? আর কেনই বা প্রতিটি ঘটনায় তৃণমূল জড়িত থাকার অভিযোগ উঠছে? জবাবে তৃণমূলের ওই রাজ্য নেতা বলেন, ডেঙ্গিও সারতে কমসে কম তিন দিন সময় লাগে। দীর্ঘদিনের রোগ হঠাৎই উধাও হয়ে যাবে তা নয়। সময় লাগবে। মুখ্যমন্ত্রীও জানেন, বহু ঘটনায় শাসক দলের নেতারা জড়িত রয়েছেন। আর সেই কারণেই তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের বরাভয় দিচ্ছেন তিনি। তার মোদ্দা বক্তব্য হল, জুলুম ও অন্যায় হলে ব্যবস্থা নিতে তাঁরা যেন রাজনৈতিক রঙ বিচার না করেন। অপরাধী অপরাধীই হয়। তার কোনও জাত পাত নেই।

Mamata Banerjee Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy