তৃণমূলের পার্টি অফিসে ডেকে এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ে। অভিযুক্ত তৃণমূলের এক অঞ্চল সভাপতি। রবিবার সেই অভিযোগকে কেন্দ্র করে শোরগোলের আবহে সোমবার জেলা পুলিশের এক সূত্রের দাবি, ওই মহিলার যে মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়েছে, তার রিপোর্টে শারীরিক নির্যাতন, ধর্ষণ বা কোনও রকম যৌন নির্যাতনের উল্লেখ নেই।
জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘‘দু’পক্ষের অভিযোগ জমা পড়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ মহিলার মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ওই হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই মহিলা এখন স্থিতিশীল আছেন। মেডিক্যাল রিপোর্টের বিষয়ে আমি কিছু বলব না। কারণ ওটা তদন্তাধীন বিষয়।’’
রবিবারই ওই মহিলার স্বামী নারায়ণগড় থানা এবং জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। দাবি করেছিলেন, তাঁর স্ত্রী এক সময় বিজেপি করতেন। পরে তৃণমূলের ‘চাপে’ তিনি বিজেপি ছেড়ে দেন। যদিও সে কথা বিশ্বাস করেননি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই ‘বিজেপি করি না’ এই মর্মে একটি মুচলেকা দেওয়ার জন্য তাঁর স্ত্রীকে দলীয় কার্যালয়ে ডেকে পাঠিয়েছিলেন তৃণমূলের ওই অঞ্চল সভাপতি। স্বামীর অভিযোগ, এর পর সেখানেই তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। চলে পাশবিক অত্যাচারও। পরে পার্টি অফিস থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় মহিলাকে। প্রথমে তাঁকে মকরামপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। পরে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তির সময়ে অঞ্চল তৃণমূল সভাপতির লোকজন এসে বাধা দেয় বলেও অভিযোগ।
এই অভিযোগ নিয়ে শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিজেপি। অভিযুক্ত অঞ্চল সভাপতিকে গ্রেফতারের দাবিতে রবিবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুর শহরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের বাইরে বিক্ষোভ-অবস্থানে বসেছিলেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। যদিও পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করেনি। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, ‘‘এফআইআর হলেও অভিযুক্ত কেন এখনও গ্রেফতার হননি? আমরা হাই কোর্টে যাব।’’
জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুজয় হাজরা পাল্টা বলেন, ‘‘যে অভিযোগ করা হয়েছিল, তা যে অসত্য, মেডিক্যাল রিপোর্টে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। যদি মহিলার সঙ্গে কোনও ভাবে অভদ্র আচরণ হয়ে থাকে, তা হলে দলীয় স্তরে তদন্ত করে দেখা হবে। তাতে কোনও ত্রুটি পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নেতৃত্বকে বলা হবে।’’