Advertisement
E-Paper

হস্তচালিত তাঁত বাঁচাতে উদ্যোগী নোবেলজয়ী অভিজিৎ

দুই গ্রামে তাঁতশিল্পীদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কাটান অভিজিৎ। কাজের ব্যাপারে খোঁজখবর করেন, ছবি তোলেন। দুপুরে এক তাঁতশিল্পীর বাড়িতে বাঙালি নানা পদের ব্যঞ্জন দিয়ে খাওয়াও সারেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:০৮
বেণীনগর গ্রামে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।  নিজস্ব চিত্র

বেণীনগর গ্রামে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

পাওয়ারলুমের দাপটে এক দশকের বেশি সময় ধরে ধুঁকছে হস্তচালিত তাঁত। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে কাটোয়া-সহ রাজ্যের নানা প্রান্তে বাপ-ঠাকুরদার পেশা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন তাঁতশিল্পীরা। ঐতিহ্যের তাঁত বাঁচানো এবং সারা পৃথিবীর কাছে তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টায় এ বার ব্রতী হয়েছেন নোবেল-জয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের বেণীনগর ও কাটোয়ার আমডাঙা গ্রামে তাঁত শিল্পীদের বাড়িতে ঘুরে গেলেন তিনি।

দুই গ্রামে তাঁতশিল্পীদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কাটান অভিজিৎ। কাজের ব্যাপারে খোঁজখবর করেন, ছবি তোলেন। দুপুরে এক তাঁতশিল্পীর বাড়িতে বাঙালি নানা পদের ব্যঞ্জন দিয়ে খাওয়াও সারেন। অভিজিৎ বলেন, ‘‘আমাদের বাংলার একটি ঐতিহ্য আছে। বাংলার তাঁতশিল্পকে কী করে সারা পৃথিবীর কাছে নিয়ে যাওয়া যায়, পৃথিবীর সমস্ত মানুষ যাতে জানতে পারেন, আমাদের কাছে কী ঐতিহ্য ছিল, কী ঐতিহ্য আছে, কী ধরনের কারুকাজ এখানে হয়, তার একটা প্রচেষ্টা করছি। সে জন্যই এখানে এসেছি।’’ তাঁর সঙ্গে চিত্র পরিচালক রাণু ঘোষ ছাড়াও ছিলেন এক ডিজ়াইনার ও ফ্রান্সের এক ইলাস্ট্রেটর।

এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ পুলিশের নিরাপত্তায় কেতুগ্রাম ১ ব্লকের বেণীনগর গ্রামের তাঁতশিল্পী বাসুদেব সিংহের বাড়িতে পৌঁছন অভিজিৎ। তাঁর তাঁতের কারখানায় শ্রমিকদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন। সুতো কেনা থেকে শুরু করে নলিতে সুতো জড়ানো, ড্রামে সুতো পরানো কী ভাবে হয়, জানতে চান। কী ভাবে থান তৈরি হয়, তা দেখেন। সহকারীদের ছবি তোলার নির্দেশ দেন। পরে দুপুর ১টা নাগাদ গ্রামের রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে কথা বলেন অনেক তাঁতশিল্পীর সঙ্গে। এই পেশায় থেকে কী কী অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে, তা জানতে চান। পরে দুপুর পৌনে ২টো নাগাদ বাসুদেব সিংহের বাড়িতেই নটে শাক, বেগুন, পটল ভাজা, পোস্ত, ফুলকপির তরকারি, রুই মাছের ঝোল ও নলেন গুড়ের পায়েস দিয়ে মধ্যাহ্নভোজন সারেন। বিকেলে যান জগদানন্দপুর পঞ্চায়েতের আমডাঙা গ্রামে গৌতম দাস নামে এক তাঁতশিল্পীর বাড়িতে। সেখানে প্রায় আধ ঘণ্টা কাটানোর পরে কলকাতা রওনা দেন তিনি।

চিত্র পরিচালক রাণু ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা অভিজিতের সঙ্গে এসেছি। উনি তাঁতশিল্পীদের নিয়ে গবেষণা করছেন। তাঁর নির্দেশ মতো কাজ করছি। বাংলার হারিয়ে যাওয়া তাঁতশিল্পকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।’’

তাঁতশিল্পী বাসুদেব সিংহ জানান, বছর দুয়েক আগে প্যারিসের কোনও এক অনুষ্ঠানে তাঁদের হাতে তৈরি একটি কোট অভিজিৎকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। সেটি বাংলা থেকে গিয়েছে জানতে পেরেই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। ওই শিল্পী বলেন, ‘‘গত বছর ৫ নভেম্বর উনি আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন। দ্বিতীয় বার আসায় আমরা খুবই খুশি।’’ কেতুগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত ও পরিবহণ কর্মাধ্যক্ষ সুকান্ত রায়চৌধুরী জানান, বেণীনগর-সহ আশপাশের গ্রামগুলিতে প্রচুর তাঁতশিল্পী রয়েছেন। তাঁদের উন্নতির চেষ্টা করছেন নোবেল-জয়ী অর্থনীতিবিদ, এটা ভাবতেইভাল লাগছে।

Tant Sarees Abhijit Vinayak Banerjee Noble Laureate ketugram
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy