বৃহস্পতিবার সকাল ন’টাতেই ৭০০ আবেদনপত্র। আর দিনের শেষে সেই সংখ্যা দাঁড়াল প্রায় ১৫ হাজারে। সরকারি অনুদান ও দু’শো দিনের কাজ চেয়ে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার হিড়িক অব্যাহত মালদহে।
জেলা প্রশাসন কোনও কাজের জন্য আবেদনপত্র চাননি। তবে জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কিন্তু কেউ আবেদন করলে জেলা প্রশাসন প্রত্যাখ্যান করতে পারে না। তাই আমরা সব আবেদনই নিচ্ছি।’’ সেই সব আবেদন এম.জি.এন.আর.জি.এস প্রকল্পের দফতরে পাঠানো হবে। জেলাশাসক জানান, ‘‘তারপরেই আবেদনপত্র খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
আবেদন করা হচ্ছে সরাসরি জেলাশাসককে সম্বোধন করেই। বিষয়ে লেখা হচ্ছে, ভিন্ রাজ্যে শ্রমিকদের কাজ করেছেন তাঁরা। এখন তাঁরা নিজেদের জেলাতে কাজ পেতে চান। সেই সঙ্গে নিজের নাম পরিচয় দিয়ে আবেদন করা হচ্ছে। প্রশাসনিক ভবনের অনুসন্ধান কেন্দ্রে তা জমা পড়ছে। গত, সাত দিনে প্রায় ৪৫ হাজার আবেদনপত্র জমা পড়েছে বলে দাবি জেলা প্রশাসনের কর্তাদের। তাঁদের দাবি, সপ্তাহ খানেক বাদে সেই সংখ্যা আরও বাড়বে।
শুধুমাত্র মালদহেই কেন আবেদন পত্র জমা দেওয়ার হিড়িক পড়েছে? তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে জেলা প্রশাসনের অন্দরে। প্রশাসনেরই একাংশ কর্তাদের দাবি, মালদহ থেকে বছরে প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক ভিন্ রাজ্যে কাজ যান। তাই জেলায় শ্রমিকদের আবেদন পত্র জমা দেওয়ার হিড়িক পড়েছে। এ দিন সকাল ছ’টা নাগাদ প্রশাসনিক ভবনের সামনে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন হবিবপুর, গাজল, বামনগোলা, কালিয়াচক সহ একাধিক ব্লকের শতাধিক মহিলা-পুরুষ। ঘণ্টা দু’য়েক কাটতেই লাইনে ভিড় দ্বিগুণ হয়ে যায়। শুধু এ দিনই নয়, গত সাত দিন ধরে এমনই ভিড় হচ্ছে প্রশাসনিক ভবনে। জেলার মধ্যে সব থেকে বেশি আবেদনপত্র জমা পড়েছে এই এলাকাগুলো থেকেই। কালিয়াচকেরই আফরাজুল ভিন্ রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে নিহত হন। তারপর থেকেই ভিন্ রাজ্য থেকে অনেকে ফিরে আসছেন। তাঁরাই জেলায় কাজ চেয়ে আবেদন করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই রাজ্যের শ্রমিকদের ঘরে ফেরার ডাক দিয়েছিলেন। এমনকী, এককালীন ৫০ হাজার টাকা দেওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি। তারপর থেকেই মালদহ জেলা প্রশাসনিক ভবনে কাজ ও সরকারি অনুদানের আবেদন করে শ্রমিকদের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, হাজার হাজার শ্রমিকের মধ্যে ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরে আসা শ্রমিক বাছাই করা কি সম্ভব? প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, সময় সাপেক্ষ বিষয় হলেও ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে জবকার্ডধারীদের সঙ্গে জমা পড়া আবেদনকারিদের নাম, ঠিকানা খতিয়ে দেখা হবে। তারপরেই বেছে নেওয়া হবে কারা ভিন্ রাজ্য থেকে এসেছেন। এ দিকে, শুধু কাজ নয়, সরকারি অনুদান ৫০ হাজার টাকার দাবিও জানিয়েছেন শ্রমিকেরা।
কালিয়াচকের বাসিন্দা মনসুর শেখ, দিলবার শেখেরা বলেন, ‘‘জবকর্ড থাকলেও ঠিক মতো কাজ মেলে না। তাই কাজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা অনুদান পেলে নিজেরা স্বনির্ভর হতে পারব।’’ জেলায় সমর্থন প্রকল্প চালুর বিষয়েও রাজ্যের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy