Advertisement
E-Paper

পুলিশের উপরে ‘তৃণমূলনেতার সালিশি সভা’! হস্তক্ষেপে রাগ, মার পুলিশকে

মারধরে জখম দুই পুলিশ আধিকারিক এবং তিন পুলিশকর্মী। তাঁদের হরিশচন্দ্রপুর গ্ৰামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে পাঁচ জনকে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২৫ ১৯:১৭
Cops Injured in Malda

পুলিশকে হেনস্থা করে উত্তেজিত জনতা। —নিজস্ব চিত্র।

পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। কিন্তু অভিযুক্তকে পুলিশ ধরার আগেই তাঁকে নিয়ে বসে গিয়েছে সালিশি সভা। সেখানে অভিযুক্তকে মারধরের নিদান দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গেলে ‘পরিত্রাণ’ মেলেনি তাদের! ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি। মার খান পুলিশ আধিকারিক থেকে পুলিশকর্মী। দৃশ্যত রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের একটি গ্রাম। পুরো গন্ডগোলের নেপথ্যে নাম জড়ায় রাজ্যের মন্ত্রী তথা হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তাজমুল হোসেনের ঘনিষ্ঠ এক নেতার। যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ঘটনাস্থল হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সুলতান নগর পঞ্চায়েতের ডাটিওন গ্রাম।

একটি ইভটিজিং-এর অভিযোগকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। স্থানীয় সূত্রে খবর, এক তরুণীকে কটূক্তি করা নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। কিন্তু স্থানীয় তৃণমূল নেতা জিয়াউল হকের চাপে বিষয়টি নিয়ে গ্রামে সালিশি সভা বসে। মঙ্গলবার সেখানে অভিযুক্তকে পেটানোর নিদান দেওয়া হয়। শুরু হয় মারধর।

ওই খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু আক্রান্তকে উদ্ধার করতে গিয়ে আক্রান্ত হয় তারা। অভিযোগ, ওই তৃণমূল নেতার ‘নিদানেই’ এলাকাবাসীর হাতে আক্রান্ত হন পুলিশকর্মীরা। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি।

পুলিশ সূত্রে খবর, ডাটিওন গ্রামের এক তরুণী মাঠে গরু বাঁধতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় স্থানীয় এক যুবক কাগজে নিজের ফোন নম্বর লিখে তাঁকে দিতে যান। তরুণী কাগজের টুকরো নিতে অস্বীকার করলে তাঁর সঙ্গে ‘অশ্লীল ব্যবহার’ করেন যুবক। এ নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। কিন্তু পুলিশ অভিযুক্তকে ধরতে যাওয়ার আগেই গ্রামে সালিশি সভা বসানো হয়। পুলিশ খবর পায়, সালিশি সভায় ব্যাপক মারধর করা হচ্ছে অভিযুক্তকে। দেরি না করে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন কয়েক জন পুলিশকর্মী।

কিন্তু পুলিশি হস্তক্ষেপ পছন্দ হয়নি সালিশি সভার ‘বিচারকদের’। ফলে পুলিশ অভিযুক্তকে উদ্ধার করতে গেলে আক্রমণের মুখে পড়ে তারা। বাঁশ-লাঠি-ইট-পাথর দিয়ে পুলিশের উপর প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়েন সালিশি সভার ‘মাতব্বর’ এবং সদস্যেরা। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি। খবর পেয়ে আরও বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান হরিশচন্দ্রপুর থানার আইসি মনোজিৎ সরকার। তখন রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে ওই এলাকা। দুই পুলিশ আধিকারিক এবং তিন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন। তাঁদের হরিশচন্দ্রপুর গ্ৰামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আইসি মনোজিৎকেও যথেষ্ট হেনস্থা হতে হয় বলে খবর। শেষমেশ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, তৃণমূলনেতা জিয়াউলের অঙ্গুলিহেলনেই পুলিশের উপর আক্রমণ হয়েছে। যদিও জিয়াউলের বক্তব্য, ‘‘মিথ্যা বলছে। আমি এ রকম কিছু করিনি।’’ এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী জিয়াউলের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য, ‘‘পুলিশের উপর ভরসা আছে। তারা উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে।’’

Crime Malda West Bengal Police TMC Tmc Leader
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy