Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

আমবাগানে যুবক খুনের ৬ বছরেও ধোঁয়াশা, ক্ষুব্ধ গ্রাম

আলেমের খুন নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে গ্রামেও। মোহর শেখ, মুন্না শেখের মতো গ্রামবাসীরা বলেন, ‘‘পুলিশের এই ভূমিকায় আমরা বিস্মিত। আলেমের খুনের কিনারা চাই।’’

সুবিচারের আশায়: আলেম শেখের পরিবার। নিজস্ব চিত্র

সুবিচারের আশায়: আলেম শেখের পরিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
টিপাজানি শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৫৬
Share: Save:

ধানতলার যে আমবাগানে অজ্ঞাতপরিচয় মহিলার দগ্ধ মৃতদেহ বৃহস্পতিবার উদ্ধার হয়েছে, তার খুব কাছেই ৬ বছর আগে খুন হয়েছিলেন লাগোয়া গ্রাম টিপাজানির এক যুবক। অভিযোগ, ২০১৩ সালের ১০ নভেম্বর বিকেলে আলেম শেখ (৩২) নামে ওই যুবককে হাত-পা ভেঙে, কুপিয়ে খুন করে ওই আমবাগানে ফেলে রাখা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে সে দিন রাতেই পরিবারের তরফে ইংরেজবাজার থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু অভিযোগ, এখনও ওই ঘটনার কিনারা করতে পারেনি পুলিশ।

এ নিয়ে পরিবারের পাশাপাশি টিপাজানি গ্রামের বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ। তাঁদের অভিযোগ, খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশের কাছে অনেক দরবার করলেও লাভ হয়নি। ওই ঘটনার মতোই ওই আমবাগানে মহিলার দেহ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উন্মোচন হবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান গ্রামবাসীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইংরেজবাজার ব্লকের কোতোয়ালি গ্রাম পঞ্চায়েতের টিপাজানির বাসিন্দা জলিল শেখ। তাঁরই চার ছেলের মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন আলেম। আলেমের স্ত্রী রেশমা বেওয়া ও তিন সন্তান আসমিন, নাসরিন ও আকাশ। আলেম হাতপাখা তৈরির পাশাপাশি আমের কলম চারা তৈরি করে বিক্রি করতেন। রেশমা রবিবার বলেন, ‘‘প্রতি দিন বিকেল তিনটে নাগাদ ধানতলায় আমের কলম বাগানে ও জল দিতে যেত। বিকেল সাড়ে পাঁচটার মধ্যে বাড়ি ফিরে আসত।’’ তিনি জানান, ২০১৩ সালের ১০ নভেম্বর একই সময়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন আলেম। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ এক কিশোর বাড়িতে এসে খবর দেয় যে তাঁকে কে বা কারা খুন করে আমবাগানের পাশে ফেলে রেখেছে। পরিবারের সকলে গিয়ে দেখেন আলেমের হাত-পা ভাঙা। মাথায় হাঁসুয়ার মতো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন।

রেশমার অভিযোগ, ‘‘সে দিনই ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কিনারা করতে পারল না পুলিশ।’’ তাঁর অভিযোগ, ঘটনার পরে থানার কোনও আধিকারিক বাড়িতে এসে জিজ্ঞাসাবাদ পর্যন্ত করেননি। ওই মহিলা বলেন, ‘‘আমি চাই ওই খুনের ঘটনায় জড়িতদের পুলিশ গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দিক। কিন্তু পুলিশ আদৌ তা করবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।’’

আলেমের দাদা সেলিম শেখ এ দিন বলেন, ‘‘ধানতলায় যে জায়গায় অজ্ঞাতপরিচয় মহিলার দগ্ধ দেহ উদ্ধার করা হয়েছে, ওই জায়গা থেকে ১০-১২ হাত দূরে আমার ভাইকে খুন করে ফেলে রাখা হয়েছিল। ৬ বছর পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। মহিলার দেহ উদ্ধারের ঘটনার কিনারাও পুলিশ করতে পারবে কিনা সন্দেহ রয়েছে।’’ আলেমের ভাই জিল্লু শেখ বলেন, ‘‘দাদার কোনও শত্রু ছিল বলে জানি না। পুলিশের কাছে অনেক দরবার করা হয়েছে। কাজ হয়নি।’’

আলেমের খুন নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে গ্রামেও। মোহর শেখ, মুন্না শেখের মতো গ্রামবাসীরা বলেন, ‘‘পুলিশের এই ভূমিকায় আমরা বিস্মিত। আলেমের খুনের কিনারা চাই।’’

এ নিয়ে পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ঘটনাটি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tipjani Murder Murder Mystery
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE