দার্জিলিং সদর থানার পুলিশ অফিসার অমিতাভ মালিকের খুনের ঘটনার আট বছর পরে পাহাড়ের নেতা প্রকাশ গুরুংকে গ্রেফতার করা হল। রবিবার ভোরে দার্জিলিঙের রিম্বিক লোধামা থেকে প্রকাশকে ধরা হয়। এ দিন তাঁকে দার্জিলিঙের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে পেশ করা হলে জামিনের আবেদন নাকচ করে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ বলেছেন, ‘‘গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা বাকিদের খোঁজ চলছে।’’
দার্জিলিং আদালতের সহকারি সরকারি আইনজীবী পঙ্কজ প্রসাদ বলেন, ‘‘২০১৭ সালের অক্টোবরে পুলিশ অফিসারের খুন, অস্ত্র-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে চার্জশিট হয়েছে। প্রকাশ পলাতক ছিলেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ছিল।’’
এই মামলায় মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুং-সহ ১০ জন কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে অন্তর্বর্তী জামিনে আছেন। মামলার আরও ১৫ জন অভিযুক্ত এখনও পলাতক। প্রত্যেকের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। প্রকাশ একসময় গুরুংয়ের ‘ডান হাত’ বলে পরিচিত ছিলেন। মোর্চার যুব সভাপতিও ছিলেন। কয়েক বছর আগে গুরুংয়ের সঙ্গে তিনিও পাহাড় ছাড়েন। পরে ফিরে আসলেও খুব একটা বেশি তাঁর দেখা মিলত না। গুরুংয়ের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তিনি পাহাড়ে কোনও দলে যোগ দেননি। সম্প্রতি অজয় এডওয়ার্ডের জনশক্তি মোর্চায় যোগ দেন।
এ দিন অজয় বলেন, ‘‘প্রকাশ দলের কেন্দ্রীয় ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য। আইনের লড়াইয়ে আমরা প্রকাশের পাশে রয়েছি।’’ আর পাহাড়ের শাসক দল, প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি তথা জিটিএ প্রধান অনীত থাপা এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১৭ সালের জুন মাসে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দার্জিলিঙে মন্ত্রিসভার বৈঠকের দিন ভাষার স্বীকৃতির দাবি নিয়ে বিমল গুরুংয়ের নেতৃত্বে আন্দোলন শুরু হয়। পরে তা রক্তক্ষয়ী হয়ে ওঠে। ১১ জন গুলিতে প্রাণ হারান। গুরুং পাহাড় ছাড়েন। তাঁর খোঁজে তল্লাশিতে ১৩ অক্টোবর, শিরুবাড়ির জঙ্গলে পুলিশ অভিযান চালায়। সেই সময় গুলিতে প্রাণ হারান পুলিশ অফিসার অমিতাভ মালিক। তা নিয়ে পুলিশ, সিআইডি-র তদন্ত চলে। অমিতাভের খুনের ঘটনায় গোটা রাজ্যে শোরগোল পড়ে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)