Advertisement
E-Paper

সালিশি সভা থেকে ‘অপহরণ’ করে ‘মুক্তিপণ’ দাবি! মালদহের সিভিকের কীর্তিতে শোরগোল, অস্বস্তিতে মন্ত্রী

পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার তথা মন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতার ‘কীর্তি’তে শোরগোল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে। অপহরণ, হুমকি, অগ্নিকাণ্ডের অভিযোগ। ঘটনার তদন্তে পুলিশ।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:২৩
Malda Civic Volunteer Case

রাজ্যের মন্ত্রী তাজমুল হোসেনের (ডান দিকে) সঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়ার তথা তৃণমূল নেতা তারিক আনোয়ার (বাঁ দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

স্বামী-স্ত্রীর বিবাদ মেটাতে তৃণমূল নেতা তথা সিভিক ভলান্টিয়ার হাজির হয়েছিলেন সালিশি সভায়। কিন্তু সালিশিতে মধ্যস্থতা হয়নি। সে জন্য দম্পতির কাছেই দু’লক্ষ টাকা চান সেই সিভিক ভলান্টিয়ার। দাবি করে টাকা পাননি। তাই স্বামীকেই ‘অপহরণ’ করেন তিনি। শেষমেশ পুলিশ ‘অপহৃত’কে উদ্ধার করেছে। কিন্তু থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগপত্র থেকে তাঁর নাম প্রত্যাহারের জন্য ক্রমাগত হুমকি দিতে থাকেন অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার। তা না-হওয়ায় রাতের অন্ধকারে যুবকের দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক শোরগোল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকায়। অভিযুক্ত তারিক আনোয়ার নামে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার রাজ্যের মন্ত্রী তাজমুল হোসেনের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করেছে বিজেপি। মন্ত্রী ঘনিষ্ঠতার কথা অস্বীকার করেননি। তবে এমনটা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন না। অভিযোগ অস্বীকার করেছে ওই তৃণমূল নেতা এবং সিভিকের পরিবারও। তদন্তে মালদহ পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে খবর, হরিশ্চন্দ্রপুরের নারায়ণপুরের বাসিন্দা গোলাম রসুলের সঙ্গে বিহারের পূর্ণিয়ার রিজওয়ানা পরভিনের বিয়ে হয়েছে মাস কয়েক আগে। কিন্তু দাম্পত্যের শুরুতেই অশান্তি। সদ্যবিবাহিত মেয়ের জীবনে অশান্তির কথা কানে যেতেই রিজওয়ানার বাপের বাড়ির লোকজন সালিশি সভা ডাকেন। গত ২৩ অগস্ট বিহারে সেই সালিশি সভা বসে। সেখানে হাজির হন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সিভিক ভলান্টিয়ার তথা তৃণমূল নেতা তারিক।

অভিযোগ, সালিশিতে মধ্যস্থতা না-হওয়ায় থানায় নিয়ে যাওয়ার নাম করে গোলামকে অপহরণ করেন সিভিক। চাওয়া হয় মোটা অঙ্কের টাকা। পরিস্থিতি দেখে আনোয়ারের পরিবার এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন অপহরণের অভিযোগ করেন থানায়। শেষমেশ বিহার থেকেই গোলামকে উদ্ধার করে পুলিশ।

কিন্তু ওই সিভিক তাঁর নামে থানায় অভিযোগ হয়েছে জানতে পেরে গোলামকে ক্রমাগত হুমকি দিতে থাকেন বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার রাতে ওই যুবক এবং তাঁর দাদার দোকানে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। পরিবারের দাবি, দোকানে পেট্রল ছড়িয়ে আগুন ধরিয়েছেন সিভিক তারিকই। কারণ, অগ্নিকাণ্ডের পরেও আনোয়ারের মোবাইলে একটি ফোন আসে। তাতে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার হুমকি দিয়ে বলেন, অভিযোগপত্র থেকে তাঁর নাম তোলা না-হলে আরও বড় ক্ষতি হবে।

গোলামের পরিবারের দাবি, এলাকায় সিভিক ভলান্টিয়ার তারিকের ‘বিশাল প্রভাব।’ হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী তাজমুল হোসেনের নাম ভাঙিয়ে তিনি তোলাবাজি করেন। একে-ওকে হুমকি দেন। এমনকি, মন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণেই তাঁকে এখনও পুলিশ ছুঁতে পারেনি। এরই মধ্যে তাজমুলের সঙ্গে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের ছবিও সামনে এসেছে। যদিও পুরো ঘটনা অস্বীকার করে সিভিকের পরিবার দাবি করেছে, কেউ বা কারা তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু কেন? জবাব নেই।

সিভিক ভলান্টিয়ার তারিকের সঙ্গে তাঁর নাম জড়ানো নিয়ে মন্ত্রী তাজমুল বলেন, ‘‘অভিযোগ থাকতেই পারে। তার প্রমাণ থাকতে হবে তো। বাকিটা পুলিশ দেখবে।’’ পাল্টা এই ঘটনা নিয়ে শাসকদল এবং পুলিশকে এক পঙ্‌ক্তিতে ফেলে আক্রমণ শুরু করেছে বিজেপি। তাদের কটাক্ষ, ‘‘রাজ্যে আইনের শাসন নেই। তৃণমূলের কর্মীরাও তালিবানরাজের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না।’’ মালদহ জেলা পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ‘‘পুলিশ অভিযোগ পেয়েছে। তদন্ত চলছে।’’

Civic volunteer Malda Crime West Bengal Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy