—প্রতীকী চিত্র।
ছোট থেকে অভাবের মধ্যে বড় হয়েছি। কলেজের গণ্ডি পার হওয়ার পরে, সংসারের হাল ধরতে একের পরে এক চাকরির পরীক্ষা দিতে থাকি। ২০১৬ সালে এসএসসি-র পাশাপাশি, রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরির অন্য পরীক্ষাও দিয়েছিলাম। ২০১৮ সালে রেলের গ্রুপ সি-র ‘গুডস গার্ড’ পদে নিয়োগপত্র পাই। সে চাকরিতেও যোগ দিই। তার ঠিক এক বছর পরে, ২০১৯ সালে আলিপুরদুয়ার জেলার একটি হাইস্কুলে আমার চাকরি হয়। পরিবারের সবার কথা ভেবে এবং বাড়িতে থেকে চাকরি করার সুযোগ পেয়ে রেলের চাকরি ছেড়ে দিয়ে হাই স্কুলে শিক্ষকতায় যোগ দিই।
ছোট থেকেও ইচ্ছা ছিল শিক্ষক হওয়ার। চাকরি পাওয়ার পরে, ধীরে ধীরে পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরেছিল। এই পরিস্থিতিতে আজ হাইকোর্টের নির্দেশে আমার চাকরি বাতিল হওয়ার খবরে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। টেলিভিশন, মোবাইলে ওই খবর দেখে বিশ্বাসই হচ্ছিল না। তার পরে বুঝতে পারি, হাইকোর্ট সত্যিই ওই রায় দিয়েছে। আমার পাঁচ বছর ধরে করা শিক্ষকতার চাকরি বাতিল হয়েছে। মোটা টাকার মাইনের রেলের চাকরি ছেড়ে দিয়ে শিক্ষকতার পেশায় যোগ দিয়েছিলাম। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আমার চাকরি চলে যাওয়ার কথা মানতেই পারছি না।
রায় শুনে আমার পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি বন্ধু-বান্ধব এবং পরিজনেরাও হতবাক হয়ে পড়েছেন। ছোট থেকেই পড়াশোনায় ভাল ছিলাম। শিক্ষকতার পেশায় যোগ দিয়েছিলাম বলে সবাই খুশিও হয়েছিলেন।
আজ হাইকোর্টের রায়ের জেরে ভবিষ্যতের কথা ভেবে ভয় করছে। গোটা পরিবার আমার উপরেই নির্ভরশীল। আমার মতো অনেকেই স্বচ্ছ ভাবে চাকরি পেয়েছেন। মেধার ভিত্তিতে চাকরি পাওয়ার পরেও এ ধরনের রায় শোনার পরে এক জন মানুষ মানসিক ভাবে কতটা ভেঙে পড়তে পারে, সেটা আমি ভাল করেই বুঝছি। এই মুহূর্তে স্কুলে গরমের ছুটি চলছে। আশা করছি, স্কুল খোলার আগেই আমার মতো অন্য যোগ্য ব্যক্তিরা নিজেদের স্কুলের চাকরিতেই ফের বহাল হবেন। কারণ, আমরা সৎ ভাবে পরীক্ষা দিয়ে মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছি।
অনুলিখন: হিতৈষী দেবনাথ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy