প্রতীকী ছবি।
দু’দিন আগেই বৃদ্ধা দিদিমার (৭২) মৃত্যু হয়। তা বুঝে উঠতে পারেনি বিশেষ ভাবে সক্ষম নাবালিকা নাতনি। তিন কূলে কেবল ওই দিদিমা ছাড়া তার কেউ নেই। মেয়েটি ভেবেছিল, এই বুঝি দিদা ঘুম থেকে উঠবে, খেতে দেবে। এ সব ভেবেই অবুঝ ওই কিশোরী দিদিমার দেহ আগলে অভুক্ত অবস্থায় বাড়িতে পড়েছিল তিন দিন।
দক্ষিণ দিনাজপুরের একটি ব্লকে ওই মর্মান্তিক ঘটনার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে দুর্গন্ধ ছড়াতে প্রতিবেশীরা গিয়ে দেখেন, মৃত বৃদ্ধার দেহের পাশে বসে রয়েছে অসহায় ওই নাতনি। ঠিক মতো হাঁটাচলা, কথাও বলতে পারে না ওই কিশোরী। ফলে প্রতিবেশীদের কাছেও ঘটনার কথা বলার অবস্থা ছিল না তার।
প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ বৃদ্ধার দেহ উদ্ধার করে। পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার ওই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর কারণ জানতে পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। ওই কিশোরীর খাবারের ব্যবস্থা করে তাকে হোমে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধার স্বামীর মৃত্যুর পর ছোট্ট নাতনিকে রেখে বৃদ্ধার এক মেয়ে ও জামাই অনেক দিন আগেই মারা যান। ছোট থেকেই অসুস্থ একমাত্র নাতনিকে নিয়ে বৃদ্ধার চরম কষ্টের মধ্যে দিন কাটে। পাড়া-পড়শিদের সাহায্য নিয়ে দিন চলত। অভাব অনটনে নাতনির চিকিৎসাও করাতে পারেননি তিনি।
সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই বৃদ্ধা। মাঝে মধ্যে প্রতিবেশীর দেওয়া খাবারে অর্ধাহার, অনাহারে অসহায় নাতনিকে নিয়ে ধুঁকছিলেন তিনি। এক বাসিন্দার অভিযোগ, স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে বৃদ্ধা ও প্রতিবন্ধী কিশোরীটির দুরবস্থার বিষয়টি জানিয়েও সুরাহা হয়নি। যদিও ওই সদস্য এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাননি। তবে জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে বলেন, ‘‘সিভিক ভলেন্টিয়ারের নজরদারিতে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে কিশোরীকে আপাতত রাখা হয়েছে। শীঘ্রই হোমে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy