Advertisement
০২ মে ২০২৪

পরিযায়ী পাখি চুরি করে বিক্রির অভিযোগ কুলিকে

রাতের অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে কখনও গাছে উঠে পরিযায়ী পাখির ছানাদের চুরি করে নামিয়ে আনা হচ্ছে। আবার কখনও গুলতি দিয়ে পাথরের টুকরো ছুঁড়ে গাছে বাসা বাঁধা পরিযায়ীদের জখম করা হচ্ছে।

উদ্ধার হওয়া পাখির ছানা। — নিজস্ব চিত্র

উদ্ধার হওয়া পাখির ছানা। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৬ ০৭:৫৮
Share: Save:

রাতের অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে কখনও গাছে উঠে পরিযায়ী পাখির ছানাদের চুরি করে নামিয়ে আনা হচ্ছে। আবার কখনও গুলতি দিয়ে পাথরের টুকরো ছুঁড়ে গাছে বাসা বাঁধা পরিযায়ীদের জখম করা হচ্ছে। বিভিন্ন হাটে পরিযায়ী পাখি বিক্রি করার জন্য গত দু’সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রায়গঞ্জ কুলিক পক্ষিনিবাসের সংরক্ষিত ও অসংরক্ষিত বিভিন্ন এলাকায় চোরাশিকারীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে বলে অভিযোগ। পরিযায়ী পাখি ও সেগুলির ছানাদের ধরে রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, ইটাহার ও হেমতাবাদের বিভিন্ন হাটে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

গত সপ্তাহে রায়গঞ্জের দেবীনগর এলাকা থেকে পাচার হওয়ার সময় ১১টি পরিযায়ী পাখির ছানা উদ্ধার করেন একটি পশুপ্রেমী সংগঠনের রায়গঞ্জ শাখার সদস্যরা। ওইদিন এক মহিলা-সহ কয়েকজন যুবক বাঁশের তৈরি খাঁচায় ভরে পরিযায়ীর ছানাগুলিকে নিয়ে ইটাহারের দুর্গাপুর হাটে বিক্রি করার জন্য নিয়ে যাচ্ছিল বলে অভিযোগ। সেইসময় গোপনসূত্রে খবর পেয়ে ওই সংগঠনের সদস্যরা ওই এলাকায় পৌঁছতেই চোরাশিকারিরা খাঁচাসমেত ছানাগুলিকে ফেলে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। পরে সংগঠনের তরফে পরিযায়ীর ছানাগুলিকে প্রাথমিক চিকিত্সা করানোর পর বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

রায়গঞ্জের বিভাগীয় বনাধিকারিক দীপর্ণ দত্তের দাবি, পরিযায়ী ও তাদের ছানাদের চুরি করে পাচারের অভিযোগ তাঁরাও শুনেছেন। ওই ঘটনায় বন দফতর উদ্বিগ্ন বলে জানান তিনি। তবে পক্ষিনিবাস চত্বরে এখনও পর্যন্ত চোরাশিকারিদের দৌরাত্ম্য বনকর্মীদের নজরে পড়েনি বলে দাবি তাঁর। তিনি বলেন, ‘‘পরিযায়ী পাখি ও তাদের ছানাদের চুরি করে পাচার রুখতে বনকর্মীদের নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

রায়গঞ্জের কুলিক নদী সংলগ্ন সংরক্ষিত ও অসংরক্ষিত এলাকা মিলিয়ে প্রায় ২০০ একর এলাকা জুড়ে পক্ষিনিবাস বিস্তৃত রয়েছে। গত প্রায় চার দশক ধরে প্রতিবছর পক্ষিনিবাসে গড়ে ৪০ থেকে ৬০ হাজার বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী আসে। প্রতিবছর মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে জুন মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান-সহ দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে পরিযায়ী পাখিগুলি কুলিক পক্ষিনিবাসে আসে। পক্ষিনিবাসের কয়েক হাজার গাছে প্রজননের পরে ছানারা ওড়া শিখলে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ নাগাদ তারা ফিরে যায়। প্রতিবছর উত্তরবঙ্গ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে পরিযায়ীদের দেখতে পক্ষিনিবাসে কয়েক হাজার পর্যটক ভিড় জমান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Migratory bird accusation police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE