প্রতীকী ছবি।
ডুয়ার্সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাতি মৃত্যুর ঘটনায় অবশেষে নড়ে বসেছে রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর। বন দফতরের সচিব এবং অন্য শীর্ষকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করে অপমৃত্যু ঠেকানোর রূপরেখাও তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এমন রূপরেখা তো আগেও অনেক বার হয়েছে, তা হলে ফের জঙ্গল লাগোয়া এলাকা ও হাতি চলাচলের পথে বিদ্যুৎবাহী তারের অবস্থা আগের মতো হয়ে পড়ে কী করে?
সংশ্লিষ্ট সূত্রে বলা হচ্ছে, তবে এ বারের পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। কারণ, হাতি ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর অপমৃত্যু নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই মামলায় অক্টোবর মাসে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশেই এই তৎপরতা শুরু হয়েছে। বন্যপ্রাণীর মৃত্যু ঠেকাতে বিদ্যুৎ দফতরের সহযোগিতা ও সক্রিয়তা এ বার বাড়বে বলে মনে করছেন বনকর্তাদের একাংশ।
প্রশাসন সূত্রের খবর, সম্প্রতি বিদ্যুৎসচিব কে সুরেশকুমারের সঙ্গে বনসচিব হৃদেশ মোহন, প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) বিনোদকুমার যাদব-সহ দুই দফতরের পদস্থকর্তাদের যে বৈঠক হয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, ডুয়ার্সে বিভিন্ন এলাকায় গৃহস্থ বাড়ির অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগের তার এবং বিদ্যুতের তারের বেড়া থেকেই বেশির ভাগ মৃত্যু হয়েছে। ওই সূত্রের দাবি, ডুয়ার্সে বহু এলাকা এবং চা বাগানের বস্তিতে বেআইনি বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেও বিদ্যুৎ দফতর কোনও ব্যবস্থা নেয় না। তাতেই এই বিপত্তি। একই দৃশ্য তরাই অঞ্চলের বহু এলাকাতেও দেখা যায়। ডুয়ার্সের মতো সেখানেও নজরদারি কমের অভিযোগ রয়েছে। প্রশাসনিক সক্রিয়তার পাশাপাশি আবার এই প্রশ্নও উঠেছে যে, ভোটের আগে বেআইনি বিদ্যুৎ সংযোগের বিরুদ্ধে কি আদৌ ব্যবস্থা নেওয়া হবে?
সূত্রের খবর, বিভিন্ন এলাকায় হাই ভোল্টেজ ফিডার লাইন এবং বিদ্যুতের খুঁটিগুলির বেহাল দশার কথাও ওই বৈঠকে উঠেছে। বিদ্যুৎসচিব নির্দেশ দিয়েছেন, ফিডার লাইনের সার্কিট ব্রেকার ঠিক মতো কাজ করছে কি না, বা কোথাও তার নির্দিষ্ট উচ্চতার নীচে রয়েছে কি না, তা তাঁর দফতরের অধীনস্থ বণ্টন এবং সংবহন সংস্থা খতিয়ে দেখবে। প্রয়োজনে তারে উচ্চমানের ইনসুলেশন করা হবে।
বন দফতরের এক শীর্ষকর্তা জানান, তাঁরা হাতি চলাচলের পথ নির্দিষ্ট করে বিদ্যুৎ দফতরকে জানাবেন এবং হাতি যাতে ওই পথ ধরেই বিনা বাধায় চলাচল করতে পারে, তা নিশ্চিত করবেন। কোর্টের রায়ে বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের কথা বলা হয়েছিল। সেটাও বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে। সেই সমন্বয় সাধনে বিদ্যুৎ ও বন দফতর, স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে নিয়ে এলাকাভিত্তিক বিশেষ দল তৈরি করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy