নারায়ণী ব্যাটালিয়ন তৈরির ঘোষণায় খুশির হাওয়া কোচবিহারের সাধারণ মানুষের মধ্যে। নিজস্ব চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নারায়ণী ব্যাটালিয়ন তৈরির ঘোষণায় খুশির হাওয়া কোচবিহারের সাধারণ মানুষের মধ্যে। তাঁদের দীর্ঘ দিনের দাবি পূরণ হতে চলেছে। এই ঘোষণার পর উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ কোচবিহারবাসীর তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তবে ভোটের মুখে মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় রাজনীতি দেখছেন বিরোধীরা।
বুধবার নবান্নে রাজ্যে ৩টি নতুন ব্যাটালিয়ন তৈরির কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। কোচবিহারে নারায়ণী ব্যাটালিয়ন, পাহাড়ে গোর্খা ব্যাটালিয়ন এবং জঙ্গলমহল এলাকার জন্য জঙ্গলমহল ব্যাটালিয়ন। ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে এই ব্যাটালিয়নগুলি গড়ে তোলা হবে এবং প্রতিটি ব্যাটালিয়নে ১ হাজার জন করে নিয়োগ করা হবে। ফলে এক দিকে দীর্ঘদিনের আবেগ সেই সঙ্গে অন্য দিকে কর্মসংস্থানের কথা ভেবে খুশি ৩ এলাকার মানুষ।
কোচবিহারের রাজ ইতিহাস ঘাঁটলে নারায়ণী সেনার উল্লেখ পাওয়া যায়। তাই কোচবিহারবাসীদের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল ভারতীয় সেনায় নারায়ণী রেজিমেন্ট বা রাজ্য পুলিশে নারায়ণী ব্যাটালিয়ন তৈরির। এবার সেই দাবি পূরণ হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে। সঙ্গে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হওয়ায় খুশি যুব সম্প্রদায়ও।
নারায়ণী ব্যাটালিয়ন তৈরি প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “উত্তরবঙ্গবাসীর পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। আজ কোচবিহার তথা উত্তরবঙ্গের মানুষ সম্মানিত বোধ করছেন। কর্মসংস্থানের কথা ভেবে উত্তরবঙ্গের যুবসমাজ আশার আলো দেখছেন মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায়। আর বিজেপি উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সমাজের সরলতার সুযোগ নিয়ে বার বার ধোঁকা দিয়ে এসেছে। নারায়ণী রেজিমেন্ট করবে বলে ভোট নিয়েছে। কিন্তু রাজবংশী সম্প্রদায়ের প্রতি বিজেপি কোনও দায়িত্ব পালন করেনি।”
আরও পড়ুন: কোচবিহারে পুলিশের নারায়ণী ব্যাটালিয়ন, পাহাড়-জঙ্গলমহলেও নয়া বাহিনীর ঘোষণা মমতার
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার প্রসঙ্গে কোচবিহার জেলার বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক সমালোচনার সুরে বলেন, “যে ভাবে সিভিক ভলেন্টিয়ার গঠন করে বেছে বেছে পার্টির ক্যাডারদের নিয়োগ করা হয়েছে, সেভাবেই নারায়ণী ব্যাটালিয়ন তৈরির নামেও একই কাজ করার চেষ্টা হবে।। আর নির্বাচনের কয়েক মাস আগেই এ ধরনের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগাগোড়াই দিয়ে এসেছেন। এবার রাজবংশী, গোর্খা, আদিবাসী এবং জঙ্গলমহলের ভোট টানার জন্যই এই ধরনের ঘোষণা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। যাঁদের জন্য এই নারায়ণী ব্যাটালিয়ন ঘোষণা করা হয়েছে তাঁরা কতটুকু এর সুবিধা পাবেন, সেটা নিয়ে ধোঁয়াশা আছে।”
আরও পড়ুন: আলাদা ব্যাটালিয়ন হবে, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় খুশি জঙ্গলমহল
কোচবিহার জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অনন্ত রায় বলেন, “সামনে নির্বাচন, তাই মুখ্যমন্ত্রী এখন কল্পতরু হয়ে এই সব প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ সব ব্যাটালিয়ন রাজ্য সরকারের পক্ষে তৈরি করা সম্ভব নয়। রাজবংশী সম্প্রদায়কে নিয়ে এ ধরনের নারায়ণী ব্যাটালিয়ন তৈরি করা এক প্রকারের সাম্প্রদায়িক উস্কানিকে জিইয়ে রাখার চেষ্টা। এটি একটি রাজনৈতিক চমক। কাজের কাজ কিছুই হবে না। সবই ভোট টানার চেষ্টা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy