Advertisement
০২ মে ২০২৪
Quarantine Center

ফিরলে সরকারি কোয়রান্টিনেই

স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একটি অংশ জানাচ্ছেন, বাড়িতে কোয়রান্টিনে থাকতে বললে অনেকে তা মানছেন না।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২০ ০৮:৩০
Share: Save:

ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়িতে কোয়রান্টিনে রাখা কতটা নিরাপদ তা নিয়ে ভাবছেন উত্তরবঙ্গের স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। ওই শ্রমিকদের সরকারি ব্যবস্থায় কোয়রান্টিনে রাখার পক্ষে তাঁরা। সেই ব্যবস্থা কার্যকর করতে নির্দেশ দিয়েছেন করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গের বিশেষ দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য আধিকারিক। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলাগুলোর জেলাশাসক, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, পুলিশ সুপারদের সঙ্গে কথা বলে সেই মতো ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গের বিশেষ দায়িত্বে থাকা আধিকারিক সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘হোম কোয়রান্টিনে রাখার ক্ষেত্রে কিছু ঝুঁকি রয়েছে। তাই ভিন্ রাজ্য ফেরত শ্রমিকদের সরকারি কোয়রান্টিন ব্যবস্থায় রাখতে জেলাগুলোকে বলা হয়েছে। সেই মতো জেলাপ্রশাসন, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, পুলিশ সুপাররা সমন্বয় রেখে ব্যবস্থা করছেন।’’

কেন এমন সিদ্ধান্ত? স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একটি অংশ জানাচ্ছেন, বাড়িতে কোয়রান্টিনে থাকতে বললে অনেকে তা মানছেন না। তাছাড়া শ্রমিক পরিবারগুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একটি ঘরে চার-পাঁচজন বা তারও বেশি সদস্য মিলে থাকেন। সেক্ষেত্রে কোয়রান্টিনে থাকার শর্ত মানা সম্ভব নয়। যার ফলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। তাই গোড়া থেকেই সরকারি কোয়রান্টিনে পাঠানোর কথা ভাবা হয়েছে। লালারস পরীক্ষা না হওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকা বাধ্যতামূলক হবে।

সোমবার জলপাইগুড়ির জেলাশাসকের দফতরে বৈঠক করেন সুশান্ত রায়। মালদহ, দার্জিলিংয়ের মতো জেলাগুলোর ক্ষেত্রে সেখানকার জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের সঙ্গে ফোনে বা ভিডিয়ো কনফারেন্সে কথা বলা হচ্ছে বলে জানান তিনি। প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের আট জেলা মিলিয়ে লক্ষাধিক শ্রমিক কয়েক ধাপে ফিরবেন বলে মনে করা হচ্ছে। সেই মতো জেলাগুলোতে সরকারি কোয়রান্টিন ব্যবস্থা তৈরি রাখতে বলা হয়েছে।

মালদহ, কোচবিহারের মতো জেলাগুলোতে প্রচুর শ্রমিক ফিরছেন। শুধু মালদহেই কয়েক ধাপে ৪০ হাজারের বেশি শ্রমিক ফিরতে পারেন। তাঁদের মধ্যে ট্রেনে ফিরছেন একটা বড় অংশ। বাকিরা বাসে, হেঁটে বা নানা ভাবে ফিরছেন। ওই শ্রমিকদের সব ক্ষেত্রেই ‘ইন্সস্টিটিউশনাল কোয়রান্টিন’ বা সরকারি কোয়রান্টিনে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

ইতিমধ্যেই রবিবার আজমেঢ় থেকে ট্রেনে মালদহে ২৭৩ জন ফিরেছেন। পায়ে হেঁটে ফেরার সময় জলপাইগুড়িতে ১৭৩ জন, শিলিগুড়ি মহকুমায় ৩৫৫ জনকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে।

১৩মে থেকে ট্রেনে বিপুল সংখ্যায় শ্রমিকেরা ফিরবেন। তাঁদের কতদিন সরকারি কোয়রান্টিনে রাখা হবে? স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, স্টেশনে বা বাস স্ট্যান্ডে প্রাথমিক স্ক্রিনিং করে কাদের উপসর্গ রয়েছে আর কাদের নেই বেছে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোতে বাসে করে পাঠানো হবে। উপসর্গ থাকলে আলাদা ব্যবস্থায় রাখা হবে এবং তাঁদের আগে লালারস পরীক্ষা হবে। বাকিদের পাঁচ-ছয় দিনের মাথায় লালারস পরীক্ষা হবে। রিপোর্ট নেগেটিভ এলে তখন বাড়িতে কোয়রান্টিনে পাঠানো হতে পারে। তার আগে সংক্রমণ রয়েছে কি না তা জানা পর্যন্ত সরকারি কোয়রান্টিনে থাকবেন ভিন্ রাজ্য ফেরত শ্রমিকরা। তবে একাংশের মত টানা ১৪ দিন সরকারি কোয়রান্টিনে রাখা গেলেই নিশ্চিত হতে পারত স্বাস্থ্য দফতর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE