আতঙ্কের রেশ আহত পড়ুয়াদের চোখেমুখে। — নিজস্ব চিত্র
স্কুল বাসের সঙ্গে রাস্তার ধারে দাঁড়ানো সিমেন্ট বোঝাই একটি ট্রাকের ধাক্কা লাগায় তিন শিক্ষিকা-সহ ২০ জন ছাত্রছাত্রী জখম হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে প্রধাননগর থানার দেবীডাঙা এলাকার ঘটনা। আরেকটি স্কুল বাসে জখমদের শিলিগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ৬ জন ছাত্রছাত্রীকে ভর্তি করানো হয়েছে। বেপরোয়া বাস চালানোর অভিযোগে চালককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
চালকের নাম গোবিন্দ বিষ্ণু। বাড়ি ভক্তিনগর এলাকায়। ৮ বছর ধরে তিনি বাসটি চালাচ্ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশই বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানো এবং তার জেরে জখম-প্রাণহানির আশঙ্কার ধারায় মামলা রুজু করেছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে চালকের গাফিলতি পাওয়ায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।’’ চালকের ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়। তাতে কিছু আপত্তিকর মেলেনি বলে পুলিশের দাবি। তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, নথিপত্রও ঠিকই রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বাসটি চম্পাসারির দিক থেকে দেবীডাঙার স্কুলটির দিকে যাচ্ছিল। একটি পেট্রোল পাম্পের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে। বাসটি জোরে যাচ্ছিল। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকটিকে পাশ কাটাতে গিয়ে সামনে একটি অটো চলে আসে। তখনই নিয়ন্ত্রণ হারান চালক।
সুজাতা সুব্বা, সুনয়না গুরুং, দীপ্তি উপাধ্যায়দের মতো ছাত্রছাত্রীরা জানায়, বিরাট জোরে আওয়াজ হয়। বাসের বাঁ দিকের সামনের কাচ ভেঙে গিয়েছে। সামনের আসনের অনেকের চোট লেগেছে। ঘটনার পর স্কুল বাস চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর প্রবণতা নিয়ে সরব হন অভিভাবকদের একাংশ। তীর্থরাজ থাপা হাসপাতাল চত্বরে চালকের বেপরোয়া গাড়ি চালানো নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গীতাদেবী ঠাকুর, সন্তোষী রায়রা জানান, শিলিগুড়িতে একাধিক স্কুল বাস দুর্ঘটনা হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফেও বিষয়টি দেখা দরকার।
পুলিশ সূত্রের খবর, বাসটি একটি বেসরকারি পরিবহণ সংস্থার। সংস্থার মালিক বাবু ঘোষের মোট পাঁচটি বাসই ওই স্কুলেই ভাড়া দেওয়া আছে। স্কুল অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও অভিযোগই দায়ের করেনি। বাবু ঘোষের দাবি, ‘‘বাসটি পুরোনা হলেও ঠিক আছে। তবে এদিন যা হয়েছে, তা কাম্য নয়।’’ আহত ছাত্রছাত্রীদের হাসপাতালে দেখতে গিয়ে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘সবার সরকারি ভাবে চিকিৎসা হচ্ছে। পরিবহণ দফতর, পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’’
স্কুলের তরফেই জানা গিয়েছে, বাসে শিক্ষিকা-ছাত্রছাত্রী মিলিয়ে ৪২ জন ছিলেন। স্কুলের অধ্যক্ষা শম্পা দত্ত রায় বলেন, ‘‘দুজন ছাত্রের চোট একটু বেশি। তবে চালক বয়স্ক, অভিজ্ঞ। এমনটা তো হওয়ার নয়।’’ অভিভাবকদের দাবি, স্কুল বাস নিয়ে কড়া হোক প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy