অজয় এডওয়ার্ড। — ফাইল চিত্র।
দার্জিলিং পাহাড়ের ১১টি বিদ্যালয়ের ‘ম্যানেজিং কমিটি’ গঠন নিয়ে ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার কথা জানালেন হামরো পার্টির সভাপতি তথা জিটিএ সদস্য অজয় এডওয়ার্ড। স্কুলগুলির মধ্যে ন’টি দার্জিলিং জেলার, দু’টি কালিম্পং জেলার। অজয়ের অভিযোগ, স্কুলগুলির পরিচালন সমিতিতে দলের সঙ্গে ‘জড়িত’দের সভাপতি এবং সদস্য হিসাবে মনোনীত করা হয়েছে, নিয়ম মেনে কমিটি গঠন হয়নি, কমিটি গঠনে ভোট হয়নি এবং বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই কাজ হয়েছে। জিটিএ প্রধান অনীত থাপার অবশ্য পাল্টা দাবি, পুরোটাই আইনি প্রক্রিয়া মেনে করা হয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত ২৬ মে জিটিএ-র প্রধান সচিবের দফতর এবং শিক্ষা দফতরের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়। সে নির্দেশিকা দার্জিলিং এবং লাগোয়া এলাকার ১১টি সরকারি অনুদানপ্রান্ত স্কুলের ‘ম্যানেজিং কমিটি’ গঠন সংক্রান্ত। প্রতিটি স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি এক জনকে করা হয়েছে। প্রত্যেকের শিক্ষাগত যোগ্যতা নামের পাশে উল্লেখ করা হয়েছে। তেমনই শিক্ষা বিষয়ে ‘উৎসাহী’ হিসাবে আরও দু’জন করে সদস্য পরিচালন সমিতিতে রাখা হয়েছে। এঁদেরও শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্দেশিকায় উল্লিখিত। স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং ‘ব্যাচেলর অব এডুকেশন’ (বিএড) উত্তীর্ণদের দায়িত্বে বসানোর কথা বলা হয়েছে। এই ১১টি স্কুলের মধ্যে দার্জিলিং শহর, পোখরিবং, গোখ, ঘুম, সুখিয়াপোখরি, পাঙ্খাবাড়ি, লামাহাটা, ব্লুমফিল্ড এলাকার স্কুল রয়েছে।
হামরো পার্টির দাবি, প্রতিটি স্কুলে পরিচালন সমিতির ভোট করা উচিত এবং কমিটিতে স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী প্রতিনিধিদের রাখা উচিত। অভিভাবকদের ভোটে প্রতিনিধিদের নিবার্চিত হয়ে আসার দাবি করে দলের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, রাজ্য সরকার বা জিটিএ নিজেরাই পরিচালন সমিতির সভাপতি মনোনীত করে বসিয়ে দিচ্ছে। অজয় বলেন, ‘‘বিরোধীরা থাকলেই শাসকের কাজের ঠিক মূল্যায়ন হতে পারে। তাতে বিভিন্ন দিকে নজর থাকে। তা যাতে না হয়, তার জন্যই জিটিএ এই কাজ করছে। পুরোটাই একনায়কতন্ত্র।’’ তাঁর দাবি, ‘‘পাহাড়ে গণতন্ত্র বলে আর কিছু নেই। জিটিএ প্রধানকে গণতন্ত্রের পাঠ পড়াতে হবে। মর্জিমাফিক স্কুলের পরিচালন কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। আমরা আদালতে যাচ্ছি। অনীতের সঙ্গে আদালতে দেখা হবে।’’
অজয়ের অভিযোগ নিয়ে জিটিএ প্রধান অনীত থাপা বলেছেন, ‘‘পুরোটা আইনি প্রক্রিয়ায় মধ্যেই করা হয়েছে।’’ জিটিএ-র এক সচিব পর্যায়ের অফিসারের দাবি, আইনে মনোনয়নের ব্যবস্থা রয়েছে এবং স্কুলের উন্নয়নের কথা ভেবে শিক্ষিত লোকজনকেই এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
দার্জিলিং পুরসভার হাতবদলের পর থেকেই অজয়-অনীত লড়াই চলছে পাহাড়ে। কয়েক দিন আগেই অনীতের বিরুদ্ধে ৬০ লক্ষ টাকার মানহানির মামলা করেন অজয়। এ বার সেই দ্বৈরথে যুক্ত হল স্কুল পরিচালন সমিতির মতো বিষয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy