প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনীত থাপা এবং হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড। ফাইল চিত্র।
নতুন করে সংঘাতে জড়ালেন অজয় এডওয়ার্ড ও অনীত থাপা। মঙ্গলবার দার্জিলিং জেলা আদালতে অনীতের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেছেন অজয়। ষাট লক্ষ টাকার এই মানহানির মামলায় অজয়ের অভিযোগ, দার্জিলিং পুরসভা ক্ষমতায় থাকার সময় নেওড়া জল প্রকল্পে তিনি ৩০ লক্ষ টাকা ‘কাটমানি’ বা ‘কমিশন’ নিয়েছেন বলে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছিলেন অনীত। গত ২৮ মার্চ অনীতের মন্তব্যের পরে, ৫ এপ্রিল ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ) প্রধানকে ১৫ দিনের মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার জন্য আইনি নোটিস পাঠান অজয়। তার কোনও উত্তর না পাওয়ায় তিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
হামরো পার্টির সভাপতি অজয়ের কথায়, ‘‘আমি এক জন ব্যবসায়ী, একটি রাজনৈতিক দলের সভাপতি এবং সমাজসেবক। ‘ঘুষখোর’ বলার পর থেকে আমার সম্পর্কে মানুষ নানা মতামত পোষণ করছেন। আমায় ‘দুর্নীতিবাজ’ বলা হচ্ছে। দলের একাংশ দল ছেড়েছেন। ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। তাই আইনি লড়়াই করছি।’’ অজয়ের মানহানির মামলা বা আইনি নোটিস নিয়ে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি তথা জিটিএ প্রধান অনীত বলেছেন, ‘‘এ নিয়ে এখন কিছুই বলছি না। যখন বলার, বলব।’’
পাহাড়ের নেতারা মনে করছেন, যত পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে আসবে, ততই যুযুধান দুই নেতার লড়াই বাড়বে। দার্জিলিং পুরসভা অজয়ের হাতছাড়া হওয়ার পর থেকেই দুই নেতার মধ্যে দূরত্ব বেড়েছে। নতুন করে মানহানির মামলা তা আরও বাড়িয়ে দিল।
২০২১ সালের শেষ হামরো পার্টি তৈরির চার মাসের মধ্যে দার্জিলিং পুরভোটে জেতেন অজয় এডওয়ার্ডেরা। ২০২২ সালের পুজোর পর থেকে তাঁর দলে ভাঙন শুরু হয়। জিটিএ সদস্য দিয়ে শুরু করে শেষে গোটা পুরসভার হাতবদল হয়। এর জেরে, দুই নেতার বাক-যুদ্ধ বাড়তে থাকে। জিটিএ-র বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হন অজয়েরা। টাকা, পদের লোভ দেখিয়ে দল ভাঙা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়। প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার নেতারা এবং দলত্যাগী হামরো পার্টির পুরপ্রতিনিধিরা রীতেশ পোর্টেলকে সামনে রেখে অজয়ই পুরসভা নিজের মতো চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ তোলেন।
এর মধ্যে ২৮ মার্চ দার্জিলিঙের একটি সভায় অনীত অভিযোগ করেন, পুরসভায় ক্ষমতায় থাকার সময় অজয় নেওড়া জল প্রকল্পে ৩০ লক্ষ টাকা ‘কাটমানি’ নিয়েছেন। প্রকল্পের কাজের থেকে টাকা ‘কমিশন’ হিসাবে আদায় করা হয়েছে বলেও অভিযোগ, যা নিয়ে দার্জিলিঙে শোরগোল পড়ে যায়। অজয় বলেন, ‘‘আমার পরিবার, আমায় যাঁরা চেনেন, তাঁরা জানেন যে, আমি কী কাজ করি। এত বড় বদনাম আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।’’
প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, অজয় আদালতে গিয়েছেন যখন, সেখানেই লড়াই হবে। তাঁদের বক্তব্য, কেউ যদি ভাবেন যে, ‘কাটমানি’ নেওয়ার প্রমাণ নেই, তা হলে পাহাড়বাসীও সত্যজানতে পারবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy