Advertisement
E-Paper

বাপের বাড়ি নীরবই, প্রশ্ন

বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলছেন, দশ মিনিট দূরত্বে হাসপাতাল হলেও ঘটনার দিন বাড়ি থেকে সেখানে পৌঁছতে শিবুর আধ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগল কেন, অত ক্ষণ তিনি বাড়িতেই বা কী করছিলেন। তা ছাড়া স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজের বাড়ি ছাড়া গত কয়েক দিন ধরে প্রতিমার দাদা তাপস চক্রবর্তীর বাড়িতেই ঘনঘন যাতায়াত করতে দেখা যাচ্ছে শিবুকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:১০
বিস্ফোরণে ঘটনার পরে শিবু। 
নিজস্ব চিত্র

বিস্ফোরণে ঘটনার পরে শিবু। নিজস্ব চিত্র

বিশ্বাসপাড়ায় বিস্ফোরণের প্রায় তিন বছর আগে একমাত্র ছেলে প্রসেনজিৎকে (২৫) চোখের সামনে আত্মঘাতী হতে দেখে প্রতিমা সেন মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। আত্মীয়রা জানান, এর পরেই তিনি তিনতলা বাড়িটি অনাথ আশ্রমকে দান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। সে ইচ্ছা পূরণের আগেই ৩১ জানুয়ারি প্রতিমা নিজের বাড়ির মধ্যেই আগুনে পুড়ে মারা গেলেন। ঘটনার পরে ৯ দিন কেটে গেলেও তাঁর মৃত্যু রহস্যের কিনারা হয়নি। এই অবস্থায় প্রতিমার বাপের বাড়ির লোকের নীরবতা আশ্চর্য করছে পড়শিদেরও।

আত্মীয়দের সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করার পরে ধনী ব্যবসায়ী শিবু সেনের একমাত্র ছেলে প্রসেনজিৎ তৃণমূল ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় ভাবে যুক্ত ছিলেন। প্রসেনজিতের উদ্যোগে বালুরঘাট আইন কলেজে টিএমসিপির সংগঠন গতি পায়। ধনী বাবার একমাত্র ছেলের হাত খরচের বহরও দিন দিন বাড়ছিল বলে জানা যায়। টাকা না দিলে আত্মহত্যা করবে বলে প্রায়ই তিনি বাবা ও মায়ের সামনে ভয় দেখাতেন বলে অভিযোগ। ২০১৭ সালে এ রকমই একটি ঘটনায় বাবা ও মায়ের সামনে গলায় দড়ি লাগিয়ে টুলের উপরে চড়েন প্রসেনজিৎ। টাকা না পেলে আত্মহত্যা করবেন বলে ভয় দেখান। সে সময় ছেলেকে বোঝানোর চেষ্টা করতে কাছে যেতেই প্রসেনজিৎ পা দিয়ে প্রতিমাকে ধাক্কা দেন। আর পা হড়কে টুল সরে যেতেই তিনি ঝুলে পড়েন বলেন বলে জানা গিয়েছে। চেহারা ভারী হওয়ায় মুহূর্তের মধ্যে গলায় ফাঁস আটকে মারা যান প্রসেনজিৎ।

এই ঘটনার পর থেকেই মনমরা হয়ে থাকতেন প্রতিমা। নীচের তলায় তিনি ও উপরের তলায় ঘুমোতেন শিবু। তৃণমূলের এক ছাত্র নেতার কথায়, ‘‘সেই থেকে ছেলের বন্ধুবান্ধবকে দেখলেই কাঁদতেন কাকিমা। ছেলের মৃত্যুর পরে মানসিক ভাবে তাঁর মৃত্যুই হয়েছিল বলা যায়। বিস্ফোরণে ঝলসে শারীরিক মৃত্যু ঘটল।’’

বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলছেন, দশ মিনিট দূরত্বে হাসপাতাল হলেও ঘটনার দিন বাড়ি থেকে সেখানে পৌঁছতে শিবুর আধ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগল কেন, অত ক্ষণ তিনি বাড়িতেই বা কী করছিলেন। তা ছাড়া স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজের বাড়ি ছাড়া গত কয়েক দিন ধরে প্রতিমার দাদা তাপস চক্রবর্তীর বাড়িতেই ঘনঘন যাতায়াত করতে দেখা যাচ্ছে শিবুকে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন বালুরঘাট হাসপাতালে পুলিশ প্রতিমার মৃত্যুকালীন জবানবন্দি নেয়। পুলিশ কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রতিমা জানান, তিনি গ্যাসে জল গরম করতে যান। কিছু একটা ফাটার শব্দ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর গায়ে আগুন ধরে যায়। বিজেপি অবশ্য পুলিশের বিরুদ্ধে পুরো ঘটনা চেপে যাওয়ার অভিযোগ তুলে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে।

শনিবার বিজেপির জেলা সভাপতি বিনয় বর্মণ বলেন, ‘‘আগামী সোমবার বালুরঘাটে পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও করে বিস্ফোরণের প্রকৃত তদন্তের দাবিতে বিক্ষোভ দেখানো হবে। আজ, রবিবার বিজেপির যুবমোর্চা শহরে ওই ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাবে।’’

Blust. Death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy