Advertisement
E-Paper

হিমঘরের বন্ড বিলি নিয়ে দুর্নীতির নালিশ

জেলা পরিষদের সভাধিপতির কোটায় হিমঘরে আলু রাখার বন্ড বিলি নিয়ে স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠল মালদহে। জেলা পরিষদের বিরোধী কংগ্রেস ও সিপিএমের সদস্যদের অভিযোগ, তাঁদের পুরোপুরি অন্ধকারে রেখে সভাধিপতি একতরফাভাবে ৫০ কেজি করে ১৬ হাজার আলুর বস্তার বন্ড তৃণমূলের লোকজনকে পাইয়ে দিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:০৩

জেলা পরিষদের সভাধিপতির কোটায় হিমঘরে আলু রাখার বন্ড বিলি নিয়ে স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠল মালদহে। জেলা পরিষদের বিরোধী কংগ্রেস ও সিপিএমের সদস্যদের অভিযোগ, তাঁদের পুরোপুরি অন্ধকারে রেখে সভাধিপতি একতরফাভাবে ৫০ কেজি করে ১৬ হাজার আলুর বস্তার বন্ড তৃণমূলের লোকজনকে পাইয়ে দিয়েছেন। বিরোধীদের এলাকাতেও সেই বন্ড শাসকদলের লোকজনের কাছেই বিলি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন জেলা পরিষদের উপাধ্যক্ষ কংগ্রেসের রেহেনা পারভিন। সভাধিপতি অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ জেলায় মোট ৮টি হিমঘর রয়েছে। তারমধ্যে সামসি ও আদিনার দু’টি হিমঘর সমবায় পরিচালিত। এই দু’টি হিমঘরেই আলু রাখার জন্য সভাধিপতির নামে ১৬ হাজার বস্তা বন্ডের কোটা রয়েছে। প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি করে আলু থাকবে। আর এই কোটার বন্ড বিলি নিয়েই স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে। জেলা পরিষদের কংগ্রেসি উপাধ্যক্ষ রেহেনা পারভিনের বক্তব্য, আগে সভাধিপতির কোটার বন্ড জেলা পরিষদের সমস্ত সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে বিলি করা হত এবং সদস্যরা সংশ্লিষ্ট এলাকার আলু চাষিদের মধ্যে তা বিলি করতেন। এমনকী সমস্ত বিরোধীরাও সেই কোটার ভাগ পেতেন। তাঁর কথায়, ‘‘এই সভাধিপতিই যখন কংগ্রেসে ছিলেন তখন কী ভাবে বন্ড বিলি হত তা তিনি জানতেন। এখন তৃণমূলে নাম লিখিয়ে সে সব ভুলে বিরোধীদের পুরোপুরি অন্ধকারে রেখে একতরফাভাবে শাসকদলের সদস্য ও লোকজনের মধ্যে ১৬ হাজার বস্তার বন্ড বিলি করলেন। জেলাশাসকের কাছে অনৈতিক ওই বন্ড বিলি নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছি।’’

জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা সিপিএমের শেখ খলিলও বলেন,‘‘বন্ড বিলি নিয়ে আমরাও কিছু জানিনা। পুরো বিষয়টি একতরফাভাবে করা হয়েছে। শাসকদলই সব পেয়েছে।’’ এদিকে, জেলা পরিষদের তৃণমূলেরই সদস্য উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, ‘‘বিরোধীরা জানবে কী ভাবে, আমি দলের সদস্য হয়েই বন্ড বিলি নিয়ে কিছু জানতে পারিনি।’’ সভাধিপতি সরলা মুর্মু অবশ্য বলেন, ‘‘স্বজনপোষণের অভিযোগ ঠিক নয়। কোনও সদস্যকে বন্ড দেওয়া হয়নি। যে সমস্ত চাষিরা আমার কাছে বন্ড চেয়ে আবেদন করেছিল তাঁদের মধ্যে কোটার বন্ড বিলি হয়েছে। আবেদনকারীর সংখ্যা অনেক বেশি ছিল, তাই চাষি প্রতি মাত্র ২০ বস্তা করে দেওয়া গিয়েছে।’’

এদিকে, গোটা জেলাতেই আলুর বন্ড না মেলায় সাধারণ চাষিদের মধ্যেও ক্ষোভ ছড়িয়েছে। বিশেষ করে, জেলার পুরাতন মালদহ ব্লকে সেই ক্ষোভ বেশি। এই ব্লকের মঙ্গলবাড়ির কুতুবপুরের আলুচাষি হৃদয় মণ্ডল বলেন, ‘‘১৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। কিন্তু এখনও জেলার কোনও হিমঘরে আলু রাখার বন্ড পাইনি। পাইকারি বাজারে আলুর দাম মাত্র তিন টাকা কেজি। এতে দামই উঠবে না। ফলে জমিতেই আলু পড়ে রয়েছে।’’

কামঞ্চ এলাকার চাষি মতি রাজবংশীরা বলেন, ‘‘সমবায় বা বেসরকারি যে কোনও হিমঘরেই আলু রাখার জন্য কিছু বন্ড দরকার। কিন্তু মিলছে না। আলু জমিতে রয়ে গিয়েছে।’’ মালদহ মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা বলেন, ‘‘আলু ও আলুর বীজ রাখার জন্য বন্ড পাচ্ছেন না বলে বেশ কিছু চাষি আমাদের কাছেও অভিযোগ করেছেন। আমরা প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’

Allegation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy