Advertisement
E-Paper

রেশনে বরাদ্দ কমায় সমস্যায় বালুরঘাটের তিনটি পঞ্চায়েত

খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে আচমকা কমেছে চাল ও আটার বরাদ্দ। আর তারই জেরে ডিলাররা বেশ কিছু রেশন দোকান বন্ধ করে দেওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন বালুরঘাটের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার গরিব উপভোক্তারা। একেই নোট বাতিলের জেরে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন বা রোজগার কমেছে বহু মানুষের। সমস্যা আরও বেড়েছে রেশন থেকে সস্তায় চাল আটার সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায়।

অনুপরতন মোহান্ত

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:৩২
রেশন না পেয়ে বিক্ষোভ।—নিজস্ব চিত্র

রেশন না পেয়ে বিক্ষোভ।—নিজস্ব চিত্র

খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে আচমকা কমেছে চাল ও আটার বরাদ্দ। আর তারই জেরে ডিলাররা বেশ কিছু রেশন দোকান বন্ধ করে দেওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন বালুরঘাটের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার গরিব উপভোক্তারা। একেই নোট বাতিলের জেরে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন বা রোজগার কমেছে বহু মানুষের। সমস্যা আরও বেড়েছে রেশন থেকে সস্তায় চাল আটার সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায়।

রেশন ডিলার সমিতির সম্পাদক ভূপেশ ঘোষ অভিযোগ করেন, এলাকার একেকজন রেশন ডিলারের অধীনে খাদ্য সুরক্ষায় গড়ে তিন থেকে চার হাজার গ্রাহক রয়েছেন। কিন্তু চলতি মাসে ওই এলাকার ১২টি রেশন দোকানের গ্রাহক সংখ্যা কমিয়ে এক একজনের ক্ষেত্রে ৯৫০ থেকে ১২০০ জন করে দেখানো হয়েছে। ফলে, যে রেশন দোকান সপ্তাহে ২০ কুইন্ট্যাল চাল এবং ৩০ কুইন্ট্যাল আটা বরাদ্দ পেত, ডিসেম্বরে তাদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে মাত্র দু’কুইন্ট্যাল চাল ও আড়াই কুইন্ট্যাল আটা। তিনি বলেন, ‘‘ওই সামান্য বরাদ্দের চাল আটা কাকে ছেড়ে কার হাতে তুলে দেবেন? তাই রেশন দোকান বন্ধ করে দিয়েছেন ডিলাররা।’’

দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক সঞ্জয় বসু বলেন, ‘‘সমস্যার বিষয়টি শুনেছি। দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’’ জেলা খাদ্য নিয়ামক অমরেন্দ্র রায় অবশ্য বলেন, ‘‘ডাটা এন্ট্রির সময় উপভোক্তার তালিকায় ভুল থাকলে এমন ঘটে থাকতে পারে। এখন যারা কম পেয়েছেন, পরে সেই রেশন দোকানগুলির বরাদ্দ বাড়িয়ে ঘাটতি পুষিয়ে দেওয়া হবে।’’ কিন্তু কবে? তার সঠিক দিনক্ষণ তিনি বলতে পারেননি।

বালুরঘাট ব্লকের বোয়ালদার, বোল্লা এবং চকভৃগু—এই তিনটি অঞ্চলে খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত প্রায়োরিটি এবং স্পেশাল প্রায়োরিটি হাউসহোল্ড অন্তত ৪০ হাজার মানুষ প্রতি সপ্তাহে ২ টাকা কেজি দরে মাথাপিছু ৫০০ গ্রাম চাল ও ৩ টাকা কেজি দরে ৭৫০ গ্রাম আটা পান। তা ছাড়া চিনি পান মাথাপিছু ১২৫ গ্রাম। চকভৃগু অঞ্চলের আখিরাপাড়ার স্পেশাল প্রায়োরিটি হাউসহোল্ড ডিজিটাল কার্ডধারী বৃদ্ধা কাননবালা সরকার বলেন, ‘‘৬ জনের সংসার। ছেলের রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করে সামান্য রোজগার করতো। টাকার সমস্যায় ছেলের কাজ বন্ধ। প্রতি সপ্তাহে রেশন থেকে পাওয়া প্রায় ৯ কেজি চাল, আটা ও চিনি অনেকটা ভরসা জোগায়।’’

১৫ দিন ধরে রোজ ফাঁকা ব্যাগ হাতে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন চকভৃগুর গ্রন্থাগার পাড়ার বাসিন্দা বুলবুলি সাহা। লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে দু মেয়ে নিয়ে বুলবুলিদেবীর কষ্টের সংসার। তিনি বলেন, ‘‘সাপ্তাহিক রেশনের উপর নির্ভর করে আমাদের দিন চলে। কোনও মতে অর্ধাহারে দিন কাটছে।’’

ডিলারদের অভিযোগ, জেলা খাদ্য দফতরের কর্মীদের একাংশের কারসাজিতে গত মাসে উপভোক্তার সংখ্যা কম করে রাজ্যে রিপোর্ট পাঠানোতেই বরাদ্দ কমেছে। খাদ্য দফতরের কর্মীদের একাংশের অবৈধ লেনদেনে সাড়া না দেওয়ায় বেছে বেছে ওই তিনটি অঞ্চলের ১২ জন ডিলারকে বেকায়দায় ফেলা হয়েছে। খাদ্য নিয়ামক অমরেন্দ্রবাবু অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।

Ration Village
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy