Advertisement
E-Paper

বিমান ধরতে যুদ্ধ!

ঢোকার মুখে লাইনের বহরটা বড় দুগ্গা পুজো না হোক, মাঝারি মাপের পুজো-প্যান্ডেলকে টেক্কা দেয়। তার মধ্যেই তেতে পুড়ে গলদঘর্ম কাচ্চা-বাচ্চা-বুড়ো-বুড়ির আধা ধাক্কাধাক্কি চলছে। খান তিনেক লাইন।

দেবশঙ্কর মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৭ ১০:১০
ঠাসাঠাসি: বাগডোগরা বিমানবন্দরে তিল ধারণের জায়গা নেই। নিজস্ব চিত্র

ঠাসাঠাসি: বাগডোগরা বিমানবন্দরে তিল ধারণের জায়গা নেই। নিজস্ব চিত্র

ঢোকার মুখে লাইনের বহরটা বড় দুগ্গা পুজো না হোক, মাঝারি মাপের পুজো-প্যান্ডেলকে টেক্কা দেয়। তার মধ্যেই তেতে পুড়ে গলদঘর্ম কাচ্চা-বাচ্চা-বুড়ো-বুড়ির আধা ধাক্কাধাক্কি চলছে। খান তিনেক লাইন। এলোমেলো, এর ওর পেটে ঢুকে। তাতেই প্রায় মিনিট কুড়ি ঠেলাঠেলির সামলে তবে ভিতরে ঢোকা। সামাল দেওয়ার রক্ষী নস্যি বিশেষ!

ঢুকে কী করবেন ওঁরা? না, উড়ান ধরবেন বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে। কেউ কলকাতা, কেউ মুম্বই তো কেউ অসমের। সময়টা দুপুর বারোটা পার।

তবে, বারবেলা বলে নয়, রোজের যাত্রীরা বলেন, ওই দুর্ভোগের শিকার তাঁরা হপ্তার সব ক’টা দিনই।

ঢোকার আগের গল্পটাও কম রোমহর্ষক নয়। গাড়ি থেকে নামলাম। হাতে দু’টো লাগেজ মিলে একান্ন কেজি! ট্রলি চাই। কোথায়? সামনে দাঁড়ানো উর্দিধারী বললেন, ‘‘নেই।’’ মানে! প্রায় ঘণ্টা তিনেকের পাহাড়ি রাস্তায় জার্নি করে পঞ্চাশ পেরনো স্বামী-স্ত্রীর অবস্থা এমনিতেই তেমন সুবিধের নয়। তবু ট্রলি তো পেতে হবে। ফলে খোঁজ, খোঁজ।

ঠা-ঠা রোদ্দুর। এন্ট্রি গেট থেকে আতিপাতি করে খুঁজে প্রায় একশো মিটার পেরিয়ে যাও বা ট্রলি মিলল, তা নিতে তখন মাছির মতো ভিড় মানুষের। কেউ কাউকে রেওয়াত করছে না। ও পোষালো না। ফলে বিমানবন্দর থেকে ট্রলি ঠেলে বেরিয়ে ট্যাক্সি ধরতে যাওয়া লোকজনই তখন একমাত্র ভরসা।

তাঁদেরই পিছু পিছু হেঁটে একজনের থেকে কোনওক্রমে একটা ট্রলি উদ্ধার করে প্রবেশদ্বারের যুদ্ধ সামলে যাও বা ঢোকা গেল, একটু বাদেই ত্রাহি-ত্রাহি দশা। ঠান্ডা মেশিন ‘গয়া গঙ্গা’ প্রায়! তার মধ্যে যাত্রী? শিয়ালদহ-হাওড়ার অফিস টাইমকে মনে করাবে। ফলে ধুঁকতে ধুঁকতে এগোনো।

লাগেজ স্ক্যান, চেক-ইন? ময়াল সাপের মতো প্যাঁচানো লাইন সেখানেও। হল তা।

এ বার দোতলায় উঠব। এসক্যালেটর? জিজ্ঞেস করলেও উত্তর মেলে না। অগত্যা সিঁড়ি। উঠেই এক কোণায় একটা মাত্র স্ট্যান্ডিং কুলার চলছে। জনা দশেক প্রাণ জুড়োতে সেখানে। সেখানেও পাত্তা পাওয়া দায়। দম যেন আরও বন্ধ হয়ে এল।

সব বসার জায়গা ‘ফুল’। ফলে বোকার মতো দাঁড়িয়ে থাকো। নইলে চালাকের মতো এর ওর পায়ের বেড়া টপকে এগিয়ে একটু ফাঁকা জায়গা খোঁজো। ‘চালাক’ই হতে চাইলাম। লাভ? সিকিও নয়!

কাচে ঘেরা উপর থেকে নীচে চোখ পড়লেই দেখলাম, তখনও দঙ্গল চলছে। চলবে। যুদ্ধবিদ্ধস্ত নগরী থেকে উদ্বাস্তুরা যেমন করে ঘরে ফিরতে চায়, অনেকটা যেন তেমনই!

Bagdogra Airport experience
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy