Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পাশের জেলা থেকেই কি আসছে দুষ্কৃতীরা

লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই আলিপুরদুয়ারের সাহেবপোতায় রাজনৈতিক অশান্তি ছড়াতে শুরু করে। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর তা আরও বেড়ে যায়।

 আক্রান্ত: সাহেবপোতায় ভাঙচুর পুলিশের গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

আক্রান্ত: সাহেবপোতায় ভাঙচুর পুলিশের গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৯ ০১:৫৮
Share: Save:

রাজনৈতিক সন্ত্রাস চালাতে এ বার কি পাশের জেলা কোচবিহার থেকে দুষ্কৃতীরা আসছে আলিপুরদুয়ারে? দু’দিন ধরে সাহেবপোতায় পর পর রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনার পর এখন এমন প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে জেলার পুলিশ কর্তাদের মধ্যে। পুলিশ সূত্রের খবর, এ জন্য সাহেবপোতা ও আশপাশের এলাকার পাশ দিয়ে যাওয়া কোচবিহার সীমানায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই আলিপুরদুয়ারের সাহেবপোতায় রাজনৈতিক অশান্তি ছড়াতে শুরু করে। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর তা আরও বেড়ে যায়। বৃহস্পতিবার রাতে ওই এলাকায় প্রথমে তৃণমূলের এক নেতার বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। যার পাল্টা হিসেবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে এলাকায় বিজেপি কর্মীদের ছ’টি বাড়ি পরপর ভাঙচুর করার অভিযোগ ওঠে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়।

ওই ঘটনাকে ঘিরে শুক্রবার রাতে ফের একবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সাহেবপোতা। এলাকার শুনশুনি বাজার এলাকায় ফের একবার তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে দু’জন বিজেপি কর্মী জখম হন বলে অভিযোগ। সংঘর্ষের সময় দু’টি মোটরবাইক পুড়িয়ে দেওয়া হয বলে অভিযোগ উঠেছে়। পরিস্থিতি সামলাতে সাহেবপোতা ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আক্রমণের মুখে পড়তে হয় পুলিশকে। পুলিশের একটি গাড়িতে ভাঙচুরের পাশাপাশি ছ’জন পুলিশ কর্মী জখম হন। পুলিশের দাবি, তাদের গাড়ি লক্ষ করে কেউ বা কারা পাথর ছুড়ে ছিল। তাতে গাড়ির কাঁচ ভাঙে। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মনোরঞ্জন দে-র অভিযোগ, বিজেপির বাইক বাহিনী শুক্রবার রাতে এলাকায় অশান্তি পাকিয়েছে। জনতা তাদের দু’টি বাইক পাকড়াও করে আগুন ধরিয়ে দেয়। বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার পাল্টা অভিযোগ, মনোরঞ্জন দের নেতৃত্বে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা এলাকায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে।

শুক্রবার রাতের ঘটনার পর সাহেবপোতায় অতিরিক্ত পুলিশ কর্মী মোতায়েনের পাশাপাশি শনিবার সেখানের র‍্যাফ নামানো হয়। শুক্রবারের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যদিও বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল নেতাদের কথাতে পুলিশ বেছে বেছে তাদের কর্মী সমর্থকদের গ্রেফতার করছে। পুলিশ সূত্রে অবশ্য খবর, অন্য কারণে চিন্তা বেড়েছে। পরপর দুদিন সাহেবপোতায় গোলমালের পর পুলিশের ধারণা, পাশের জেলা কোচবিহার থেকে দুষ্কৃতীরা আলাদা আলাদা করে একটি-দুটি মোটরবাইকে চেপে সেখানে আসছে এবং গোলমাল পাকাচ্ছে। তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, কাছেই অবস্থিত কোচবিহারের পুন্ডিবাড়ি বিজেপির শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত। সেখান থেকেই দুষ্কৃতীরা এলাকায় আসছে। যদিও বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের আশ্রয়ে থাকা দুষ্কৃতীদের আড়াল করতেই এই মিথ্যা প্রচার চালানো হচ্ছে।

আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘সাহেবপোতার পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বাইরে থেকে আসা দুষ্কৃতীরা যাতে এলাকায় গোলমাল করতে না পারে সেজন্য কোচবিহার সীমানায় নজরদারি রাখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE