Advertisement
০৪ মে ২০২৪

উত্তম খুনে ধৃত ডাক্তার

উত্তম মোহন্ত খুনের অভিযোগের তদন্ত যত এগোচ্ছে ততই পুলিশের কাছে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে৷ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা-১টা নাগাদ মৃত্যু হয় উত্তমবাবুর৷ স্ত্রী লিপিকা ও তার প্রেমিক অনির্বাণ উত্তমবাবুর মৃত্যুর প্রায় দেড়-দুই ঘণ্টা পর রূপেশ নামের এক অ্যাম্বুলেন্স চালককে ডেকে নেন৷

ধনঞ্জয় চতুর্বেদী। নিজস্ব চিত্র

ধনঞ্জয় চতুর্বেদী। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৭ ০৩:৩৪
Share: Save:

জীবনবিমার ডেভেলপমেন্ট অফিসার উত্তম মোহান্তকে খুন করা হয়েছিল তাঁর চাকরি আর টাকার লোভেই। তদন্তে পুলিশ এ কথাই বুঝতে পেরেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, উত্তমবাবুকে খুনের পরে তা স্বাভাবিক মৃত্যু বলে প্রমাণ করার জন্য তাই জালও বিছানো হয়েছিল। যে কারণে, ধনঞ্জয় চতুর্বেদী নামে এক আয়ুর্বেদ চিকিৎসককে বাড়িতে নিয়ে এসে তাঁকে দিয়ে উত্তমবাবুর ডেথ সার্টিফিকেট লেখানো হয়েছিল। ধনঞ্জয়বাবুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধনঞ্জয়বাবুর অবশ্য দাবি, তিনি উত্তমবাবুর পুরনো প্রেসক্রিপশন দেখেই ডেথ সার্টিফিকেট দিয়েছেন। তবে তদন্তে জানা গিয়েছে, সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে ওই সার্টিফিকেট দিয়েছেন ধনঞ্জয়বাবু। এই জালে রয়েছে এক অ্যাম্বুল্যান্স চালক। সে-ই ধনঞ্জয়বাবুর খোঁজ উত্তমবাবুর স্ত্রী লিপিকাকে দিয়েছিল। লিপিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল অনির্বাণ রায়ের। লিপিকা ও অনির্বাণ মিলেই খুনটি করেছে বলে পুলিশের সন্দেহ। লিপিকাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অনির্বাণ এখনও নিখোঁজ।

পুলিশের বক্তব্য, উত্তমবাবুর স্ত্রী ভেবেছিলেন, স্বামীর মৃত্যু হলে তাঁর চাকরিটি তিনিই পাবেন। তা ছাড়া, ভেটাগুড়ির সাত কাঠা জমি হাতানোর পরিকল্পনা করেন লিপিকা ও অনির্বাণ। ওই জমির বাজার দর ৫০ লক্ষ টাকা বলে দাবি করা হয়েছে।

উত্তম মোহন্ত খুনের অভিযোগের তদন্ত যত এগোচ্ছে ততই পুলিশের কাছে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে৷ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা-১টা নাগাদ মৃত্যু হয় উত্তমবাবুর৷ স্ত্রী লিপিকা ও তার প্রেমিক অনির্বাণ উত্তমবাবুর মৃত্যুর প্রায় দেড়-দুই ঘণ্টা পর রূপেশ নামের এক অ্যাম্বুলেন্স চালককে ডেকে নেন৷ রূপেশ জলপাইগুড়ি শহরের একটি নার্সিংহোমে অ্যাম্বুল্যান্স চালায়৷ উত্তমবাবুর দেহটি তার অ্যাম্বুল্যান্সে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তারা জানতে পারে ময়নাতদন্ত ছাড়া সেখানে ডেথ সার্টিফিকেট মিলবে না৷ সে জন্যই দেহটি বাড়িতে নিয়ে যান৷

পুলিশ জানিয়েছে, এর পর অনির্বাণের কথায় রূপেশই ধনঞ্জয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁকে কদমতলা বাস স্ট্যান্ডের ভাড়া বাড়িতে নিয়ে যায়৷ এ দিন সকালে ওই চিকিৎসককে পান্ডাপাড়া থেকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷ পুলিশ জানিয়েছে, ওই চিকিৎসক এ দিন শহর ছেড়ে পালানোর ছক কষেছিলেন৷ ওই চিকিৎসক নিজেও এদিন বলেন, ‘‘আমি কাউকে চিনতাম না৷ রূপেশই ওই বাড়িতে নিয়ে যায়৷’’ তাঁর দাবি, আগের প্রেসক্রিপশন ঘেঁটে তিনি ডেথ সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন৷ তাঁর আরও দাবি, আয়ুর্বেদিক ডিগ্রি থাকলেও তিনি ডেথ সার্টিফিকেট দিতে পারেন৷ যদিও পুলিশের সন্দেহ হয়েছে৷ ডিগ্রি ভুয়ো হতে পারে বলেও সন্দেহ৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE