বন্ধ: উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে রোগী সহায়তা কেন্দ্রের হাল। নিজস্ব চিত্র।
আউটডোরে ঢোকার রাস্তায় শুয়ে কুকুর। বসার ছাউনি দখল করে শুয়ে তিন ব্যক্তি, এক মহিলা। স্বাস্থ্যকর্মীদের কথায়, তাঁদের পরিচয় কেউ জানেন না। চিকিৎসা করাতে এসেছেন না ঘুমোতে? নেশা করতে না বিশ্রাম নিতে? কেউ জানেন না। রাত বিরেতে হাসপাতালে যাওয়া বাসিন্দাদের অভিযোগ আরও মারাত্মক। তাঁদের দাবি, দিনের বেলায় সহায়তা কেন্দ্রে লোক, নিরাপত্তা রক্ষী বা পুলিশের দেখা মিললেও বেশি রাতের ছবি পুরো অন্য। দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয় চত্বর। এ ভাবে চলছে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল।
সকাল ৯টায় আউটডোর খুলতেই শুরু হয়ে যায় হাসপাতাল চত্বরে ভিড়। কোথায় কে যাচ্ছেন, শুয়ে আছেন, কী করছেন তার নজরদারি নেই বলেই অভিযোগ। বিশেষ করে আউটডোরে আসা ৭০ শতাংশ রোগীই মেডিসিন বিভাগে গেলেও চিকিৎসকের সংখ্যা মাত্র ৪ জন। ভিড়ে ঠাসাঠাসি। রোগীর আত্মীয়েরা জানান, আউটডোরে দালালেরা ঘুরে বেড়ায়। বাইরে নার্সিংহোমের ঠিকানা, চিকিৎসকের চেম্বার বা অ্যাম্বুল্যান্সের হদিশ সুলভে দিয়ে দেন। ইমারজেন্সির সামনে এবং ফেয়ার প্রাইস শপের সামনে দুটি রোগী সহায়তা কেন্দ্র রয়েছে। যদিও দিক নির্দেশ করা ছাড়া তাঁরা খুব একটা সাহায্য করতে পারেন না।
শিলিগুড়ি ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের সভাপতি অভিজিৎ মজুমদারের কথায়, ‘‘প্রশাসনিক ব্যবস্থা শক্ত হাতে না ধরা হলে রোগী এবং পরিবারের লোকজন হেনস্থা হবেনই। আসলে ঝাঁ চকচকে সব হচ্ছে, অভাব নজরদারির।’’
শহরের কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা জানান, জলপাইগুড়ি হাসপাতালে এক রোগীর বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকার ঘটনার পরেও হাসপাতালগুলি নড়েচডে বসেনি। শিলিগুড়ি হাসপাতালে প্রায় ২৪ ঘন্টা বিশ্রামাগারে লোকজন শুয়ে থাকলেও কেউ খোঁজ নিতে যায় না। শহরের একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘রাতে আত্মীয়দের বসার শেডে চলে মদ, গাঁজা ঠেক চলে বলে শুনেছি। অনেক সময় যৌনকর্মীদেরও দেখা মেলে। ঢিল ছোড়া দূরত্বে পুলিশ ক্যাম্প থাকলেও নিরাপত্তার বালাই নেই।’’ কয়েকজন হাসপাতাল কর্মীই জানান, কয়েকদিন আগেই রাতে এক রোগীর আত্মীয়ের মানিব্যাগ জোর করে ছিনিয়ে অভিযোগও সামনে এসেছে।
নজদারি বাড়ানো হচ্ছে এবং হাসপাতালের নিরাপত্তার নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে হাসপাতাল সুপার অমিতাভ মণ্ডল জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy