জটলা: মনোনয়নপত্র জমা হবে না, জানার পর নানা দলের কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র
সকাল দশটার অনেক আগেই খুলে গিয়েছিল ঘরগুলি৷ সাদা কাপড়ে ঢাকা টেবিলগুলির পেছনে থাকা কাপড় দিয়ে মোরানো চেয়ারে বসে পড়েছেন কর্মীরা৷ বেলা এগারোটা বাজতে যাবে৷ এমন সময় আচমকাই তাঁদেরই একজনের কাছে মোবাইলে এলো হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা৷ ও প্রান্ত থেকে যিনি এই বার্তাটি পাঠিয়েছেন তিনি একেবারে রাজ্যের নির্বাচন কমিশনারের চিঠিটিই পাঠিয়ে দিয়েছেন৷ যেখানে স্পষ্ট বলা রয়েছে, “এ দিন মনোনয়ন বাতিল৷”
একের থেকে দুই। দুইয়ের থেকে চার। এ ভাবেই সেই হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা ছড়িয়ে গেল অন্য কর্মীদের কাছেও৷ শুরু হল চরম বিভ্রান্তি৷ আদৌ এ দিন মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হবে কি না সেই প্রশ্নে শুরু হয়ে গেল নিজেদের মধ্যে জল্পনা৷ ঠিক সেই মুহূর্তে মহকুমাশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে এক সরকারী কর্মী মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সব ঘরে বলতে শুরু করলেন, সত্যিই এ দিন মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে৷
মঙ্গলবার যে একদিনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা বৃদ্ধি হয়েছে, সোমবার রাতেই অন্য জেলার মত সেই নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছিল আলিপুরদুয়ার জেলায়৷ কিন্তু ততক্ষণে এই দায়িত্বে থাকা কর্মীদের একটা বড় অংশই দফতর ছেড়ে বাড়ি পৌঁছে গিয়েছিলেন বা বাড়ির পথে রওনা হয়ে গিয়েছিলেন৷ মনোনয়নের দায়িত্বে থাকা কর্মীদের একাংশের কথায়, মঙ্গলবারও যে ফের মনোনয়ন জমা নেওয়া হবে তা দফতর থেকে সরকারিভাবে রাতে কেউ তাঁদের জানাননি৷ তবে টেলিভিশনের পর্দায় সবাই তা জেনে গিয়েছিলেন৷ সেই অনুযায়ী, এ দিনও সকাল সকালই দফতরে পৌঁছে গিয়েছিলেন তাঁরা৷ তখনই সরকারিভাবে তাঁদের জানানো হয়, এ দিন মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হবে৷
আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের বিডিও অফিসের এক কর্মী জানান, প্রথম দিকে বিডিও অফিসেই তিনি মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার কাজ করছিলেন৷ কিন্তু নতুন নির্দেশ আসার পর গত কয়েকদিন থেকে সেই কাজ তিনি মহকুমাশাসকের দফতরে করছিলেন৷ এ দিনও দফতরে পৌঁছনোর পরে দফতরের গাড়িতে চেপেই মহকুমাশাসকের দফতরের দিকে রওনা হয়েছিলেন৷ কিন্তু মহকুমাশাসকের দফতরে পৌঁছনোর আগের মুহূর্তে এক সহকর্মীর পাঠানো হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় নির্বাচন কমিশনারের চিঠিটি দেখতে পান তিনি৷ তাঁর কথায়, ‘‘বুঝতে পারছিলাম না কী হয়েছে৷ মহকুমা শাসকের দফতরে গিয়ে দেখলাম আমার মতো বাকি কর্মীরাও বিভ্রান্ত৷ তারপর এক আধিকারিকের ঘরে সবাই গেলাম৷ সেখানেই নিশ্চিত হলাম এ দিন আর মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হবে না৷’’
জেলার বিভিন্ন বিডিও অফিসে গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরের কর্মীদেরও মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ তাঁদেরও অবস্থা এ দিন একই ছিল৷ আলিপুরদুয়ার জেলাশাসকের দফতরে জেলা পরিষদের মনোনয়ন জমা দেওয়ার দায়িত্বে থাকা এক কর্মী জানালেন, এ দিন মনোনয়নপত্র বাতিলের খবর পাওয়ার পর আমরা স্ক্রুটিনির কাজের জন্য খানিকটা প্রস্তুতি নিয়ে রাখি৷
সোমবার রাতে একদিনের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়সীমা বাড়ানোর কথা ঘোষণা হলেও আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন বিডিও অফিসে অবশ্য এ দিন খুব বেশি ভিড় ছিল না৷ তবে মহকুমাশাসকের দফতরে বিভিন্ন বিরোধী দলের বেশ কিছু নেতা-নেত্রীকে মনোনয়ন জমা দিতে আসতে দেখা যায়৷ বিরোধী দলের নেতারা জানালেনা, সন্ত্রাসের জন্য এতদিন তাঁরা অনেক জায়গায় প্রার্থী দিতে পারেননি৷ তার মধ্য থেকে যে সব জায়গায় কাউকে প্রার্থী করতে রাজি করানো গিয়েছে তাঁরা এ দিন মহকুমাশাসকের দফতরে আসেন৷ শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাদের হতাশ হাতেই ফিরে যেতে হয়৷
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy