Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
অশান্তি বিরোধী শিবিরে

বিজেপি নেতার ইস্তফা

শাসক দলের পাশাপাশি প্রার্থী তালিকা নিয়ে শিলিগুড়িতে ক্ষোভ বাড়ছে বিজেপি শিবিরেও। শনিবার প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর ৫, ৬, ২২, ৪৩, ৪৫ নম্বরের মতো ওয়ার্ড থেকে বিজেপির বিক্ষুব্ধরা অসন্তোষ প্রকাশ করে। রবিবার প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিজেপির ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি নৃপেন্দ্রনাথ ঘোষ, সহ সভাপতি পিন্টু বনশাল-সহ অন্য সদস্যরা দল ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৫ ০২:৩৯
Share: Save:

শাসক দলের পাশাপাশি প্রার্থী তালিকা নিয়ে শিলিগুড়িতে ক্ষোভ বাড়ছে বিজেপি শিবিরেও। শনিবার প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর ৫, ৬, ২২, ৪৩, ৪৫ নম্বরের মতো ওয়ার্ড থেকে বিজেপির বিক্ষুব্ধরা অসন্তোষ প্রকাশ করে। রবিবার প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিজেপির ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি নৃপেন্দ্রনাথ ঘোষ, সহ সভাপতি পিন্টু বনশাল-সহ অন্য সদস্যরা দল ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানান। সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া জনা বাগচীকে ওই ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী করা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেই ওয়ার্ড কমিটির লোকজনরা দল ছেড়েছেন বলে জানান।

বেলা ১২টা নাগাদ তিলকরোডে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে গিয়ে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন অর্পিতা দাস এবং তাঁদের অনুগামীরা। তাঁদের অভিযোগ, অরুণিমা বর্মন বলে যাকে প্রার্থী করা হয়েছে তাঁর সঙ্গে দুই তিন জন ছাড়া দলের কোনও লোক নেই। যারা ওয়ার্ডে বিজেপির সংগঠন তৈরি করেছেন তাঁদের উপেক্ষা করে প্রার্থী ঠিক করা হয়েছে। তা নিয়ে দলের জেলা সভাপতি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানানোয় আরও বেশি ক্ষুব্ধ ওই কর্মী-সমর্থকেরা। কিছুক্ষণ পরে ২২ নম্বর ওয়ার্ডের মনোজ বাছার এবং তাঁর অনুগামীরাও দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তবে এ দিন ওই সময় দলীয় কার্যালয়ে নেতৃত্ব স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন না। প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে ৩, ৬ এবং ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি’র কর্মী সমর্থকদের মধ্যেও।

বিজেপির জেলা সভাপতি রথীন্দ্র বসু বলেন, “দুই মাস আগে ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছিল। অনেকেই মধ্যেই প্রার্থী হওয়ার প্রত্যাশা ছিল। আজ তারা জেলা কার্যালয়ে গিয়ে ইস্তফা পত্র দিয়েছেন বলে জেনেছি। আমরা তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বোঝানোর চেষ্টা করব।” ৩৫ নম্বরের মতো অন্যান্য ওয়ার্ডে বিক্ষুব্ধদের নিয়ে রথীন্দ্রবাবু বলেন, “দলে কিছু বিরোধী শিবিরের লোক ঢুকে পড়েছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে তারা গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করছে। আমরা তাদের চিহ্নিত করছি। দল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।” প্রার্থী ঠিক করা নিয়ে দলের নিয়ম মেনেই কাজ করা হয়েছে বলে দাবি করেন জেলা নেতৃত্ব। রথীন্দ্রবাবুর কথায়, এলাকা থেকে প্রার্থীদের নাম মণ্ডল কমিটির কাছে গিয়েছে। নিয়ম মেনে এলাকার দলীয় কর্মীদের মতামত নিয়েই প্রার্থী ঠিক হয়েছে।”

নৃপেন্দ্রনাথবাবুর অভিযোগ, দুই দিন আগে তৃণমূল ছেড়ে যিনি এসেছেন তাঁকে কী করে প্রার্থী করা হল তারা বুঝতে পারছেন না। ওই ওয়ার্ড থেকে তারা মাম্পি দাস সেনকে প্রার্থী করার পক্ষে ছিলেন। নৃপেন্দ্রনাথবাবু বলেন, “জেলা নেতৃত্ব আমাদের মতকে গুরুত্ব না দেওয়ায় আমাদের অন্ধকারে রেখে প্রার্থী ঠিক করায় ওয়ার্ড কমিটির সকলেই দল ছেড়েছেন।” সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি’তে আসা হরিসাধন ঘোষকে ১২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী করা নিয়েও ওই এলাকায় দলের একাংশের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে।

বিজেপি’র ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি অতুল মণ্ডল, কার্তিক দাস, গোপাল সরকারদের অভিযোগ, অর্থের বিনিময়ে বিরোধী তৃণমূল শিবিরের কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছেন জেলা সভাপতি। কার্তিকবাবু বলেন, “আমরাই দল ছেড়ে দেব।” একই ভাবে প্রার্থী ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অজন্তা দাস এবং তাঁর অনুগামীরা। অর্থের বিনিময়ে প্রার্থী ঠিক করার মতো অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন রথীন্দ্রবাবু।

এ দিন অবশ্য ২৪ ও ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী বদল করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। এই প্রার্থী বদল নিয়েও বিরুদ্ধ গোষ্ঠী শিবিরে ক্ষোভ রয়েছে।

৩ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি গিরিজা গুপ্ত দাবি করেন, তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে আঁতাত করে ওই ওয়ার্ডে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। বিজেপি-র ২২ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি সন্দীপ পালও ওই ওয়ার্ডের প্রার্থী নিয়ে ক্ষুব্ধ। তাঁদের অভিযোগ, “নন্দনবাবুর ভাবমূর্তি নিয়ে দলের মধ্যেই প্রশ্ন রয়েছে। ওয়ার্ড কমিটিকে অন্ধকারে রেখে তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে। নন্দনবাবুর বিরুদ্ধে চাকরির দেওয়ার টোপ দিয়ে টাকা নিয়ে প্রতারণা করার মতো অভিযোগ রয়েছে। আমরা মনোজবাবুকে প্রার্থী করার পক্ষে।”

নন্দনবাবু জানান, গোড়া থেকে ওয়ার্ডে তিনিই বিজেপি করে আসছেন। তাঁর কথায়, “কিছু লোক মিথ্যে প্রচার করতে চাইছে। দল তাতে কান দিতে রাজি নয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE