শাসক দলের ঘনিষ্ঠদের ‘সুযোগ’ দিতেই চা বাগানের ৩০ শতাংশ জমি চা পর্যটনে ব্যবহারের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে অভিযোগ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার উত্তরবঙ্গের চা বলয়ে এক জনসভার মঞ্চে দাঁড়িয়ে চা বাগানের জমির ব্যবহার নিয়ে রাজ্য সরকারের গেজ়েট বিজ্ঞপ্তির প্রতিলিপি ছিঁড়ে দেন শুভেন্দু। এ দিন আলিপুরদুয়ারের কালচিনির সুভাষিণী চা বাগানের মাঠে বিজেপির সভায় যোগ দিয়েছিলেন তিনি। কিছুদিন আগে এই মাঠেই সরকারি সভায় যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সভায় পৌঁছনোর আগে চা শ্রমিকদের একাধিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা বিরোধী দলনেতার সঙ্গে দেখা করে রাজ্যের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। সেই দলে ছিলেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের প্রাক্তন জেলা সভাপতি রাজেশ লাকড়া ওরফে ‘টাইগার’, কার্শিয়াঙের বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। শুভেন্দু দাবি করেন, কয়েক দিন পরে শিলিগুড়িতে এক লক্ষ শ্রমিকের জমায়েত এবং উচ্চ মাধ্যমিকের পরে এ নিয়ে চা বলয়ে পদযাত্রা শুরু করা হবে।
সম্প্রতি বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী চা বাগানের অব্যবহৃত ১৫ শতাংশের বদলে ৩০ শতাংশ জমি ‘টি টুরিজ়মে’ ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। শুভেন্দু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গের উপরে এত রাগ যে তিনি চা বাগানের ৩০ শতাংশ জমি বিক্রি করে দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। ২০২৬ সালে এলে পুরো চা বাগানই বেঁচে দেবেন।’’
শুভেন্দু বলেন, “অনেকে আছেন যাঁরা শাসক দলের নেতাদের বিদেশে ঘোরান, টাকা দেন। তাঁদের সুবিধা পাইয়ে দিতেই চা বাগান নিয়ে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য সরকার।’’ তিনি জানান, চা পর্যটনের নামে রিসর্ট, রেস্তোরাঁ তৈরি করা হবে। সেখানে থাকবে পানশালা। তাতে মদ বিক্রি হবে। শুভেন্দুর কথায়, ‘‘নয়াদিল্লিতে আবগারি দুর্নীতি মামলায় সে রাজ্য হাতছাড়া হয়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের। তেমনই এই রাজ্যের শাসক দলেরও একই অবস্থা হবে।’’ চা শ্রমিকদের শুভেন্দু বলেন, “ঝুঁকবেন না, ভয় পাবেন না, বিক্রি হবেন না।“
যদিও তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা দলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি প্রকাশ চিক বরাইক বলেন, “২৩ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর সভার ভিড় দেখে ভয় পেয়েছে বিজেপি। একাধিক বিষয়ে চা শ্রমিকদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে।’’এ দিনই অখিল ভারতীয় আদিবাসী বিকাশ পরিষদের প্রভাবিত ‘প্রোগ্রেসিভ টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের’ (পিটিডব্লিউইউ) ডুয়ার্স তরাইয়ের নেতারা মালবাজারে বৈঠক করে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। সংগঠনের জেলা সম্পাদক বাবলু মাঝি জানান, ১১ মার্চ জলপাইগুড়ি জেলাশাসককে স্মারকলিপি দেবেন।
তথ্য সহায়তা: বিদেশ বসু
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)