পঞ্চায়েত ভোটের আগে, জেলা নেতাদের বিধানসভা ভোটের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ ‘অতীতের মতো’ ঢালাও দলে যোগদান করানো যাবে না। বিশেষ করে, পঞ্চায়েত ভোটে শাসক দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ টিকিট না পেয়ে ‘বিক্ষুব্ধ’ হয়ে পড়লে, তাঁদের বিজেপিতে এনে টিকিট দেওয়া যাবে না, জানিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব।
গত বিধানসভা ভোটের প্রসঙ্গ টেনে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে ‘অতীতের মতো সকলকে দলে যোগদান করানো যাবে না’। বিজেপি জেলা নেতাদের একাংশের দাবি, গত বিধানসভা ভোটের আগে, জেলায় জেলায় তৃণমূল নেতাদের দলে টেনে, টিকিট বা পদ দেওয়া যে ‘ভুল’ হয়েছিল সে কথা দলীয় নির্দেশিকায় বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগামী ৬ নভেম্বর বিজেপির চার জেলার সাংগঠনিক বৈঠক হবে। তার আগে, এই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। বলা হয়েছে, সিবিআই বা ইডি নিয়ে জেলা স্তরের কোনও নেতা যেন মুখ না খোলেন। সিবিআই বা ইডি নিয়ে যা বলার, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই বলবেন।
বিধানসভা ভোটের আসন খসড়া প্রকাশিত হয়েছে। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় বিজেপি শিবির উচ্ছ্বসিত হলেও, সংগঠন নিয়ে দলের নেতাদের দুশ্চিন্তা যায়নি। বুথে-বুথে বিজেপির কমিটি থাকলেও, সে কমিটি কতটা সক্রিয় তা নিয়ে দলের অন্দরেই প্রশ্ন রয়েছে। থানা ঘেরাও বা স্মারকলিপি দেওয়ার মতো রাজ্যের নির্ধারিত কর্মসূচি ছাড়া, স্থানীয় স্তরে আন্দোলন নেই। সূত্রের দাবি, আগামী বছর পঞ্চায়েত ভোট হলে, তার পরের বছরই লোকসভা ভোট। তার আগে, বুথে নিজেদের সক্রিয়তা দেখতেই তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের ‘ইচ্ছেমতো’ দলে নেওয়ায় বাঁধ দিতে চাইছে বিজেপি।
বিধানসভা ভোটের আগে, ‘বিক্ষুব্ধ’ তৃণমূল নেতাদের একাংশ বিজেপিতে চলে আসায়, সাধারণ ভোটদাতাদের অনেকেই দলের উপরে বিরক্ত হয়েছিলেন বলে বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ মনে করেন। তাই ‘বিক্ষুব্ধ’ তৃণমূল নেতাদের জন্য দলের দরজা বন্ধ করতে চাইছে বিজেপি। সম্প্রতি ইডি এবং সিবিআই বিজেপিরই ‘বি-টিম’ বলে তৃণমূল নেতারা অভিযোগ তুলছেন। জেলায়-জেলায় দলের নেতাদের একাংশ আগ বাড়িয়ে সিবিআই-ইডির অভিযান নিয়ে মন্তব্য তৃণমূলের অভিযোগকেই মান্যতা দিচ্ছে বলে মনে করছে বিজেপি। সে কারণে ইডি-সিবিআই নিয়ে মুখ খুলতে বারণ করা হয়েছে জেলা নেতাদের। বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “দলের সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে সংবাদমাধ্যমে আমি মন্তব্য করি না।” জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপের প্রতিক্রিয়া, ‘‘তৃণমূল থেকে কেউ বিজেপিতে যাবে না। বরং, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসতে লোকে লাইন দিয়ে রয়েছে।’’