Advertisement
০১ মে ২০২৪
Governor CV Ananda Bose

বোসকে কালো পতাকা দেখাল তৃণমূল, রাজ্যপাল ‘গো ব্যাক’ ধ্বনি শুনলেন শিলিগুড়ি ছাড়ার সময়

বৃহস্পতিবার সকালে দিল্লি থেকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিমান নামে বাগডোগরা বিমানবন্দরে। সেখান থেকে রাজ্যপাল দার্জিলিং, কালিম্পং এবং জলপাইগুড়ির বন্যা কবলিত এলাকা ঘুরে দেখেন।

Image of Governor CV Ananda Bose

রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (বাঁ দিকে), রাজ্যপালকে কালো পতাকা দেখাচ্ছেন তৃণমূল কর্মীরা (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:১৫
Share: Save:

শিলিগুড়ির স্টেট গেস্ট হাউসের সামনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে কালো পতাকা দেখাল তৃণমুল। বৃহস্পতিবার দার্জিলিং, কালিম্পং এবং জলপাইগুড়ি জেলার বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন শেষে গেস্ট হাউসে পৌঁছতেই কালো পতাকা দেখিয়ে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান তোলেন সেখানে উপস্থিত তৃণমূল কর্মীরা। তৃণমূলের অভিযোগ, রাজনীতি করতেই শিলিগুড়িতে এসেছেন রাজ্যপাল।

বৃহস্পতিবার সকালে দিল্লি থেকে সোজা বাগডোগরা বিমানবন্দরে নামেন রাজ্যপাল। সেখান থেকে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পাহাড়ের উদ্দেশে রওনা দেন। তবে মাঝপথেই থামতে হয় তাঁকে। কালিঝোরা পর্যন্ত গিয়ে শিলিগুড়ি ফিরে আসতে হয়। জাতীয় সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে রাজ্যপালের পাহাড়যাত্রা আটকে যাওয়ার পর সেখান থেকেই সোজা জলপাইগুড়ির উদ্দেশে রওনা দেন বোস। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের পাতকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের রংধামালি এলাকায় পৌঁছে তিস্তার জলে প্লাবিত এলাকায় মানুষ কেমন আছেন তার খোঁজখবর নেন তিনি। ছাতা মাথায় দিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলতেও দেখা যায় বোসকে। তার পর শিলিগুড়ি ফেরেন। সেখানেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে কালো পতাকা দেখানো হয় রাজ্যপালকে। রাজ্যপালকে দেখে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান তুলে রাস্তায় শুয়ে বিক্ষোভ দেখান শাসকদলের কর্মীরা।

তৃণমূল নেতা তথা শিলিগুড়ি পুরনিগমের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রামভাজন মাহাতো ছিলেন বিক্ষোভ কর্মসূচির নেতৃত্বে। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যপাল এখানে শুধুমাত্র রাজনীতি করতে এসেছেন। সে জন্যই কালো পতাকা দেখিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছি। কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের বকেয়া টাকা আটকে রেখেছে। রাজ্যপালের হৃদয়ে গরিব মানুষের জন্য দয়ামায়া থাকলে তিনি সেই টাকা আনাবার ব্যবস্থা করতেন। অথচ আমরা অবাক হয়ে দেখলাম, সে দিকে মাননীয় রাজ্যপালের কোনও নজর নেই! রাজনীতি করতে এ দিকে-সে দিকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। আমাদের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দিল্লিতে প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলেন। রাজ্যপাল যে কেন্দ্রের প্রতিনিধি সেই মোদী সরকারের পুলিশ তাঁদের উপর লাঠিচার্জ করেছে। সেই কারণেই আমরা ধিক্কার, প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’ অন্য দিকে রাজ্যপাল এ বিষয়ে বলেন, ‘‘আমি বিক্ষোভকারীদের স্বাগত জানাই। সত্যি তো, রাজ্যপালের স্টেট গেস্ট হাউসে স্থায়ী ভাবে থাকার কথা নয়। তাঁরা আমাকে ফিরে যেতে বলছেন, তাঁদের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমি ফিরে যাচ্ছি।’’

পাশাপাশি, পাহাড়-সমতল মিলিয়ে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে সকলে মিলিত ভাবে দাঁড়াতে হবে। আবহাওয়ার পরিবর্তনের পাশাপাশি পরিবেশ দূষণও একটা বড় বিষয়। আমাদের খুব ভাল ভাবে এই ঘটনার নেপথ্য কারণ পর্যালোচনা করতে হবে। প্রকৃতিকে যে ভাবে বাধা দেওয়া হয়েছে, তারই ফল আমাদের ভোগ করতে হচ্ছে। সিকিম-সহ বাংলার বন্যা পরিস্থিতি একটা কথাই বলছে, তা হল, পরিবেশের যত্ন নিতে হবে।’’

স্টেট গেস্ট হাউস থেকে দুপুরেই রাজ্যপালের কনভয় বেরিয়ে যায় বাগডোগরা বিমানবন্দরের উদ্দেশে। বিমানবন্দরে ঢোকার আগেও এক বার তাঁর কনভয় আটকে পড়ে। সেখানেও তাঁকে কালো পতাকা দেখান তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। দেওয়া হয় ‘গো ব্যাক’ স্লোগান। রাজ্যপালের নিরাপত্তারক্ষীরা ভিড় সরিয়ে আবার কনভয় রওনা করান বিমানবন্দরের দিকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Black Flag Sikkim Flood Teesta River Siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE