নৌকা বাইচ মিলিয়ে দিল দুই বাংলাকে। বাইচ দেখতে দেখতে এপার থেকে কেউ চিৎকার করছেন। আবার ওপার থেকে হাত নাড়ছেন কেউ কেউ। রবিবার কোচবিহারের বলরামপুরের দাস পাড়ায় নৌকা বাইচের মেলা ঘিরে এরকম উৎসাহই দেখা গেল দুই বাংলার মানুষের।
মেলা উদ্যোক্তারা জানান, পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে ওই মেলা। দাস পাড়া এলাকার একটি পুজো কমিটি বিসর্জন উপলক্ষে ওই মেলার আয়োজন করে। এ দিনই দুর্গা প্রতিমারও বিসর্জন দেওয়া হয়। দীর্ঘ দিনের ওই মেলার মূল বিষয়ই হল নৌকা বাইচ। কালজানি নদীতে হয় ওই মেলা। নদীর একদিকে ভারত। অন্যদিকে বাংলাদেশের ভুরুঙ্গামারির কাইজারের চর। সেখানে রয়েছে বসতিও। সেই বাসিন্দারা প্রতি বছর এই মেলায় দর্শক হিসেবে যোগ দেন। সেই পাড়ে কিছুটা জমি ভারতেরও রয়েছে, সেখানে রয়েছে বিএসএফের ক্যাম্প। এবারে অবশ্য অন্যবারের তুলনায় কড়াকড়ি বেশি ছিল বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান। মেলা কমিটির পক্ষে পরেশ দাস বলেন, “এই মেলা আমাদের সবাইকে মিলিয়ে দেয়। কিন্তু সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় আমরা রাত ১০ টার মধ্যে খেলা শেষ করে দিই।” ওই এলাকার বাসিন্দা সমিউল আলম জানান এই মেলা এই এলাকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বড় উদাহারণ।
এবারের মেলায় নৌকা বাইচে যোগ দিয়েছিল ১৩টি দল। বলরামপুর, জিরানপুর, নাজিরহাট থেকে মাঝিরা নৌকা নিয়ে গিয়ে খেলায় যোগ দেয়। সন্ধ্যে পর্যন্ত চলে বাইচ। জারি গানের সুর তুলে নৌকা চালান প্রতিযোগীরা। নাজিরহাটের একটি দল প্রথম স্থান অধিকার করেছে।
মেলায় উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, “নদীর ওপারেই বাংলাদেশ। দুই বাংলার মানুষ নৌকা বাইচ দেখে আনন্দ পায়।’’ এটা একপ্রকার মিলন মেলা বলেই জানান তিনি। ওই এলাকারই বাসিন্দা পার্থপ্রতিম রায়ও বলেন, “এই মেলায় কোনওরকম ভেদাভেদ নেই।’’ সবাই একসঙ্গে মেলায় আনন্দ উপভোগ করেন বলে জানান তিনি। এ দিন খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানও ছিল অন্যতম আকর্ষণ।