প্রতিবছর শীত পড়তেই জল শুকিয়ে যেত পুনর্ভবা নদীর। আর এর জেরে অকেজো হয়ে যেত নদীতে থাকা সরকারি জল উত্তোলন যন্ত্র (আরএলআই)। ফলে বোরো ধান চাষাবাদে বিপাকে পড়তেন মালদহের হবিবপুর ব্লকের বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা কলাইবাড়ির বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষকেরা। কিন্তু এ বার সেই পুনর্ভবা নদীতে যেন উলটপুরান। এই শুখা মরসুমেও নদীতে রয়েছে ভাল পরিমাণ জল। আরএলআই যন্ত্রে সেই জল তুলে বোরো ধান চাষে সেচ দিতে পারছেন কৃষকেরা। কিন্তু কীভাবে এবার এখনও নদীতে ভাল পরিমাণ জল রয়েছে? সীমান্ত সূত্রে খবর, বাংলাদেশের দিকে ওই নদীতে ‘রবার বাঁধ’ দেওয়ায় তার সুফল পাচ্ছেন এ পারের কৃষকেরা। যদিও কৃষি দফতর সূত্রে খবর, এলাকার সেচ সমস্যা মেটাতে সেখানে গুচ্ছ সেচ প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ বাপ্যারে যৌথ ভাবে সমীক্ষাও করা কৃষি, কৃষি-সেচ উপভুক্তি, কৃষি-যান্ত্রিক উপভুক্তি দফতরের তরফে।
পুনর্ভবা নদী দক্ষিণ দিনাজপুরের দিক থেকে এসে বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা মালদহের বামনগোলা ব্লক হয়ে হবিবপুরের টিলাসন এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে এবং ফের ব্লকের কলাইবাড়ি এলাকা দিয়ে ঢুকে আবার বাংলাদেশে ঢুকে গিয়েছে সেই নদী। বাংলাদেশের নানা এলাকা পরিক্রমা করে রোহনপুর হয়ে নদীটি মোকরমপুর এলাকায় মহানন্দা নদীতে মিশেছে। কলাইবাড়ি এলাকার বাসিন্দারা বলেন, প্রতিবছরই শীত পড়তেই পুনর্ভবা নদীতে জল থাকে না, শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়। ফলে কলাইবাড়িতে পুনর্ভবা নদীতে সরকারি আরএলআই যন্ত্র থাকলেও চাষিরা বোরো ধান চাষে জল সেচ দিতে পারেন না। এ জন্য বোরো চাষ মার খায় বা বেশি অর্থ খরচ করে সাব মার্সিবল পাম্প ভাড়া করে সেচের ব্যবস্থা করতে হয়। কিন্তু এবারে সেই পুনর্ভবা নদীতে এই শুখা মরসুমেও প্রচুর জল রয়েছে। ওই সীমান্ত পারের বাসিন্দারা বলেন, শুনেছি ও পারের কৃষকদের সুবিধায় বাংলাদেশের দিকে পুনর্ভবা নদীতে একটি রবার বাঁধ দেওয়া হয়েছে। আর তার সুফল মিলছে এ পারেও। কলাইবাড়ি সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার কৃষক সনাতন সরকার, পরিমল সরকার, সুশান্ত সরকার বলেন, “গত কয়েক বছর ধরে শুখা মরসুমে পুনর্ভবা নদী শুকিয়ে যাওয়ায় আমরা আমাদের জমির বোরো ধান চাষে জল সেচ দিতে পারি না। আরএলএই যন্ত্র জলের অভাবে বিকল হয়ে পড়ে। এ বার নদীতে প্রচুর জল রয়েছে। সেচের সমস্যা নেই।”
এদিকে ফি বছর কলাইবাড়ি এলাকার কৃষকরা সেচের সমস্যা নিয়ে দরবার করে প্রশাশন থেকে শুরু করে কৃষি দফতরে। আর তাই ওই এলাকার সেচের সমস্যা মেটাতে গুচ্ছ সেচ প্রকল্পের পরিকল্পনা করেছে কৃষি দফতর। জেলা কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা দিবানাথ মজুমদার বলেন, “কলাইবাড়ি এলাকায় সেচের সমস্যা মেটাতে সাব মার্সিবল পাম্প বসিয়ে গুচ্ছ সেচ প্রকল্পের পরিকল্পনা নিয়েছি, সমীক্ষাও হয়ে গিয়েছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)