Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পণের দাবিতে বিয়ের ১২ দিনে ২০ বছরের বধূকে পুড়িয়ে খুন রায়গঞ্জে

গীতার বাপের বাড়ি রায়গঞ্জ থানার বরুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বামনগ্রাম এলাকায়। তিনি রায়গঞ্জের বিন্দোল এলাকায় মামাবাড়িতে থেকে পড়াশোনা করতেন।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৯ ০১:২০
Share: Save:

বিয়ের ১২ দিনের মাথায় এক গৃহবধূকে পুড়িয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। মোটরবাইক ও পণের পুরো টাকা না পেয়ে অভিযুক্তেরা এই খুন করেছেন বলে মৃতার বাপের বাড়ির দাবি। মৃতার নাম গীতা বর্মণ (২০)।

সোমবার দুপুরে করণদিঘি থানার রসাখোয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের খন্তা এলাকার ঘটনা। গীতাকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান শ্বশুরবাড়ির লোকজন। রাত ৮টা নাগাদ সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার হাসপাতাল মর্গে ওই গৃহবধূর মৃতদেহটি ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের ময়নাতদন্ত করিয়েছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ওই গৃহবধূর মৃত্যুর পর থেকেই তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা পলাতক। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমারের দাবি, মৃতার পরিবারের তরফে এখনও পর্যন্ত পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। পুলিশ মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। মৃতার পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ দায়ের হলে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে।

গীতার বাপের বাড়ি রায়গঞ্জ থানার বরুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বামনগ্রাম এলাকায়। তিনি রায়গঞ্জের বিন্দোল এলাকায় মামাবাড়িতে থেকে পড়াশোনা করতেন। তিনি বিন্দোল হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন তিনি। একমাস আগে করণদিঘির খন্তা এলাকার বাসিন্দা বাবুল সিংহ বিন্দোল এলাকায় এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিল। সেইসময় বাবুলের সঙ্গে গীতার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জানাজানি হওয়ার পর দুই পরিবার গত ১২ জুন বাবুল-গীতার বিয়ে দেন। গীতার বাবা পেশায় দিনমজুর মনাই বর্মণের দাবি, বিয়ের সময় পাত্রপক্ষ পণবাবদ তাঁদের কাছে একটি মোটরবাইক, ৫০ হাজার টাকা নগদ, সোনা-রুপোর অলঙ্কার ও আসবাবপত্র দাবি করে। মনাইয়ের দাবি, বিয়ের খরচের কারণে গীতার বিয়ের সময়ে তাঁরা পাত্রপক্ষকে বাইক দিতে পারেননি। পণবাবদ তাঁরা ৪৫ হাজার টাকার বেশি দিতে পারেননি। তাঁর অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকেরা বাপের বাড়ি থেকে বাইক ও পণের বকেয়া পাঁচ হাজার টাকা চেয়ে গীতার উপর চাপ দিতে শুরু করে। গীতা বাপের বাড়ি থেকে বাইক ও পাঁচ হাজার টাকা আনতে অস্বীকার করায় সোমবার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকে মারধর করে। তার পর তাঁর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে খুন করে বলে অভিযোগ। মনাইয়ের কথায়, ‘‘অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে মৌখিক অভিযোগ জানিয়েছি। মেয়ের মৃতদেহের অন্ত্যেষ্টির পর মেয়ের স্বামী বাবুল, শাশুড়ি বুধো, দুই ননদ বিজলি, প্রতিমা, মেসোশ্বশুর নিপেন বর্মণ, মামাশ্বশুর চরেন বর্মণ ছাড়াও তাঁদের দুই প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে খুনের অভিযোগ দায়ের করব।’’

যদিও নিপেন তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর পাল্টা দাবি, গীতা মানসিক কোনও কারণে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dowry Murder Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE