Advertisement
E-Paper

ভাঙাচোরা বাস নিয়ে নালিশ যাত্রীর, আশ্বাস চেয়ারম্যানের

কোনও গাড়িতে বসার ‘সিট’ ভাঙা। কোনওটার জানালর কাঁচ নেই। সামান্য বৃষ্টিতেই জল ঢুকে ভিজিয়ে দেয় যাত্রীদের। আসন ছেড়ে গুটিসুটি হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে যাত্রীদের। কোনও বাস দিয়ে অনবরত বেরোতে থাকে কালো ধোঁয়া। ইঞ্জিনের বিকট শব্দে ভয় পেয়ে যান পথচলতি লোকজন। এক দিকে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ি চালাতে শুরু করেছে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগম। আরেক দিকে, নিগমেরই ভাঙা গাড়ি ঘুরে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন রুটে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৫ ০২:৩২

কোনও গাড়িতে বসার ‘সিট’ ভাঙা। কোনওটার জানালর কাঁচ নেই। সামান্য বৃষ্টিতেই জল ঢুকে ভিজিয়ে দেয় যাত্রীদের। আসন ছেড়ে গুটিসুটি হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে যাত্রীদের। কোনও বাস দিয়ে অনবরত বেরোতে থাকে কালো ধোঁয়া। ইঞ্জিনের বিকট শব্দে ভয় পেয়ে যান পথচলতি লোকজন। এক দিকে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ি চালাতে শুরু করেছে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগম। আরেক দিকে, নিগমেরই ভাঙা গাড়ি ঘুরে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন রুটে। এমনই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন যাত্রীরা। সেই অভিযোগ পৌঁছে গিয়েছে নিগমের সদ্য দায়িত্ব নেওয়া চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীর কাছেও। তিনি ওই বাস পাল্টে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

নতুন চেয়ারম্যান বলেন, “এমন বাস চলার অভিযোগ আমার কাছেও এসেছে। শুধু ভাঙা নয়, গাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার ব্যাপারেও অনেক অভিযোগ রয়েছে। এটা চলতে দেওয়া হবে না। আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ করব। খুব অল্প সময়ের মধ্যে অবস্থার পরিবর্তন করতে পারব বলে আশা রাখছি।” নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুবলচন্দ্র রায়ও দাবি করেন, পরিষেবা আগের থেকে এখন অনেক ভাল। তাঁরা যতটা সম্ভব ভাল পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

নিগম সূত্রের খবর, ৬০০টির বেশি বাস এখন নিগমের হাতে রয়েছে। এর মধ্যে ৫৫০টি বাস ৪৪০ রুটে চলাচল করছে। রায়গঞ্জ থেকে সম্প্রতি একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস চালাতে শুরু করেছে নিগম। আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার থেকেও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে নিগমের। এ ছাড়াও বিভিন্ন রুটে আধুনিক মানের বেশ কয়েকটি গাড়িও নামিয়েছে সংস্থা। যাত্রীদের অভিযোগ, বিভিন্ন পকেট রুটের বাসিন্দারা পুরোপুরি ভাবে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বাসের উপর নির্ভরশীল। চিলকিরহাট, চান্দামারি, শীতলখুচি, সিতাই, বক্সিরহাট, নাটাবাড়ি, মেখলিগঞ্জ, গোসানিমারি, চৌধুরিহাট, গীতালদহ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পকেট রুটে বাস চালায় নিগম। সকাল ও সন্ধের পরে ওই এলাকার বাসগুলিতে ভিড় উপচে পড়ে।

ওই এলাকার যাত্রীদের অভিযোগ, মাঝে মধ্যেই আধ ভাঙা গাড়ি রুটে চালানো হয়। চিলকির হাটের বাসিন্দা নিত্যযাত্রী আকবর মিঞা বলেন, “কাজের জন্য প্রতিদিন আমাদের শহরে যেতে হয়। আমরা উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণের বাসের উপরেই ভরসা করি। কোনও কোনও সময় এমন গাড়ি রুটে চলে তা দেখলে অস্বস্তি হয়। সিট আছে। ভাঙা থাকার জন্য বসতে পারি না।” চান্দামারির এক বাসিন্দা ললিত বর্মন বলেন, “দিন কয়েক আগে কাজের জন্যে কোচবিহার শহরে যাওয়ার জন্য স্টেট বাসে উঠি। ভাঙা সিটেই বসে পড়ি। একটু পড়েই বৃষ্টি শুরু হয়। জানলা নামাতে গিয়ে দেখি তা ভাঙা। জল ঢুকে সব ভিজিয়ে দেয়। ওই অবস্থাতেই যেতে হয়।”

শুধু যাত্রীদের নয়, কিছু গাড়ির হাল নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে কর্মীদের মধ্যেও। অনেক সময় শিলিগুড়িগামী গাড়ির হাল খারাপ দেখে আধ রাস্তায় ট্রিপ বন্ধ করে দেন কর্মীরা। দিন কয়েক আগে ফালাকাটা গিয়ে একটি শিলিগুড়িগামী গাড়ি ট্রিপ বাতিল করে। গাড়ির এক কর্মী বলেন, “ইঞ্জিন বিকট শব্দ করছে। গাড়ির গতিও কমে যাচ্ছে। এই অবস্থায় ট্রিপ বাতিল করা ছাড়া কোনও ঊপায় নেই।” এনবিএসটিসির আইএনটিইউসির কোচবিহার জেলা কার্যকরী সভাপতি সুজিত সরকার বলেন, “নতুন বাস দেওয়ার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ। পাশাপাশি পকেট রুটের বাসগুলি নিয়েও ভাবা উচিত। বহু বছরের পুরনো গাড়ি চালানো হচ্ছে। সেগুলি নিয়ে যাত্রীদের হয়রানির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এগুলির বদল প্রয়োজন।”

Cooch Behar Bus service AC Alipurduar Sourav Chakraborty North Bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy