Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

আইন মানুন গুরুং, কড়া হাইকোর্ট

পাল্টা সরকারপক্ষের তরফে নথি দিয়ে দেখানো হয়, রোশন গিরি নানা সময়ে আগাম জামিনের আবেদন করলেও গুরুং হয়ে সরাসরি কোনও আবেদন জমা পড়েনি। এ ছাড়াও, গুরুং যে দেশে নেই, সে কথা নানা গোয়েন্দা এজেন্সি রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছে বলে অ্যাডভোকেট জেনারেল এ দিন আদালতে দাবি করেছেন। কিছু গোপন নথিও ডিভিশন বেঞ্চকে দেখিয়েছে সরকারপক্ষ।

দস্তাবেজ: সার্কিট বেঞ্চে গুরুং মামলার ফাইলপত্র হাতে দার্জিলিং পুলিশের এক কর্মী। নিজস্ব চিত্র

দস্তাবেজ: সার্কিট বেঞ্চে গুরুং মামলার ফাইলপত্র হাতে দার্জিলিং পুলিশের এক কর্মী। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৯ ০৫:২৯
Share: Save:

বিমল গুরুং কোথায় আছেন, জানতে চায় হাইকোর্ট। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিটের ডিভিশন বেঞ্চে বিমল গুরুংয়ের আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল। শুরুতেই রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতে জানান, বিমল গুরুং বিদেশে পালিয়ে গিয়েছেন। যিনি দেশেই নেই, তাঁর আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি হতে পারে না বলে সরকারি তরফে দাবি করা হয়। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি মনোজিৎ মণ্ডলের ডিভিশন বেঞ্চ অ্যাডভোকেট জেনারেলের কথা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেন। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী অ্যাডভোকেট জেনারেলকে বলেন, “আপনি যে কথা বলছেন তা আগে কোনও তদন্তকারী অফিসার বা অন্য কেউ জানায়নি।” গুরুংয়ের নামে রেড কর্নার নোটিস রয়েছে বলে দাবি করে সরকারপক্ষ। অর্থাৎ যে কোনও বিমানবন্দরে গেলেই গুরুং গ্রেফতার হবেন। যা শুনে ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, তার পরেও যদি গুরুং দেশ ছেড়ে চলে যায় তা হলে সেটি দুঃসাহসিক এবং বিপজ্জনকও।

ডিভিশন বেঞ্চ এই বিষয়ে রাজ্যকে দু’সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে। সেই হলফনামা জমা পড়ার দু’সপ্তাহের মধ্যে গুরুংয়ের আইনজীবীরা তাঁদের উত্তর হলফনামা জমা দিয়ে জানাবেন, নির্দেশ হাইকোর্টের। পাঁচ সপ্তাহ পরে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ফের মামলার শুনানি হবে।

এ দিন সরকারপক্ষের সওয়ালে আদালতে অস্বস্তিতে পড়েন গুরুংয়ের আইনজীবীরা। গুরুংয়ের আইনজীবী ওয়াই জে দস্তুর ডিভিশন বেঞ্চকে জানায়, তাঁর মক্কেল গুরুং দিল্লিতেই রয়েছেন। পাল্টা সরকারপক্ষের তরফে নথি দিয়ে দেখানো হয়, রোশন গিরি নানা সময়ে আগাম জামিনের আবেদন করলেও গুরুং হয়ে সরাসরি কোনও আবেদন জমা পড়েনি। এ ছাড়াও, গুরুং যে দেশে নেই, সে কথা নানা গোয়েন্দা এজেন্সি রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছে বলে অ্যাডভোকেট জেনারেল এ দিন আদালতে দাবি করেছেন। কিছু গোপন নথিও ডিভিশন বেঞ্চকে দেখিয়েছে সরকারপক্ষ।

রাজ্যের সওয়াল শুনে ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, কেউ বিদেশে থাকলেও দেশে তাঁর আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি হতে পারে। কিন্তু গুরুংয়ের ক্ষেত্রে বিষয়টি অন্য। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর মন্তব্য, “গুরুংয়ের নামে রেড কর্নার নোটিস রয়েছে। অর্থাৎ তিনি দেশ ছাড়লে তা অবৈধ ভাবে হয়েছে।” অবৈধ ভাবে যিনি দেশ ছেড়েছেন, তাঁর আগাম জামিনের আবেদন কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি বাগচী এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন, যে কেউই আগাম জামিনের আবেদন নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন। কিন্তু প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ ভাবে হতে হবে। একটি ইংরেজি বাগধারা ব্যবহার করে বলেন, “আদালতের কাছে যিনি আগাম জামিনের আবেদন করবেন, তিনি যেন আইন মান্য করেন।” এ দিন গুরুংয়ের আগাম জামিনের আবেদন শুনতে আদালতে এসেছিলেন দার্জিলিঙের আইজি অজয় নন্দও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bimal Gurung Calcutta High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE