দেওয়ালির আনন্দ যেন মাটি হয়ে গেল গোটা গ্রামে। সেই সঙ্গে ভাইফোঁটার আনন্দও নষ্ট হল গ্রামের দুই পরিবারে। অন্য বারের মতো রবিবার সন্ধ্যাতে প্রদীপ জ্বালানোর কথা ভেবেছিলেন অনেকেই। কিন্তু গ্রামের এক কিশোরীর আত্মহত্যা ও তারই আত্মীয়া অন্য কিশোরী ধর্ষণের চেষ্টার জেরে বিষ খেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার ঘটনা যেন সব কিছু বদলে দিয়েছে। তার ওপর ঘটনায় এলাকারই দুই যুবক অভিযুক্ত হওয়ায় তাঁদের মন আরও ভেঙে গিয়েছে। মৃত কিশোরীর দুই দাদাও কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। বোনের কাছ থেকে আর ভাইফোঁটা নেওয়া হবে না ভাবতে পারছেন না তাঁরা। চিকিৎসাধীন কিশোরীর একমাত্র ভাইও শোকবিহ্বল হয়ে পড়েছে।
গ্রামবাসীদের কয়েকজন জানান, এমন ঘটনায় মাথাভাঙার শান্তপ্রিয় এলাকা বলে পরিচিত বেলেরডাঙা গ্রামের ছেলেরা অভিযুক্ত হবে সে কথা অনেকেই ভাবতে পারছেন না। তাই এবারে আলোর উৎসব দেওয়ালিতে তারা বিষণ্ণ। এমনকি শুধু ওই দুই কিশোরীর পরিবার নয়, তাদের পরিচিত আত্মীয় স্বজনরাও অনেকে বাড়িতে সে ভাবে আলো জ্বালেননি। ফলে গ্রাম ছিল কিছুটা অন্ধকারাছন্ন। মৃতার মা শেফালি সরকার ঘনঘন মুর্ছা যাচ্ছেন। তিনি প্রলাপের সুরে বলছেন, “মেয়েটা এভাবে চলে যাবে ভাবিনি। ওর দাদারা এবার ভাইফোঁটায় কত আনন্দ করবে ভেবে রেখেছিল। সব কিছু চিরদিনের মত শেষ হল।”
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের এ কজন ট্রাক্টর চালক। অন্য জনও কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। গ্রামে সে ভাবে আগে কোন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে তাদের জড়িত থাকার ঘটনা প্রকাশ্যে আসেনি। ফলে পুরো বিষয়টি নিয়ে সেই দু’জনের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় সকলেই হতবাক হয়ে গিয়েছেন। চিকিৎসাধীন কিশোরীর বাবা স্বদেশ সরকার বলেন, “দেওয়ালির দিন অনেক আনন্দ করব ভেবেছিলাম। আলোর উৎসবের সেই দিনটাই জীবনের অন্ধকার নিয়ে আসবে ভাবিনী।” মৃত কিশোরীর এক আত্মীয়ের বক্তব্য, “এখনও মন থেকে মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না। আলোর উৎসবের রোশনাইয়ের রাত এ ভাবে অন্ধকার ডেকে আনবে বুঝিনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy