প্রতীকী ছবি।
হাসপাতালের বদলে ওঝার কাছে নিয়ে গিয়ে চলল ঝাড়ফুঁক। সেই কুসংস্কারের বলি হল দশ মাসের এক শিশু। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের মোথাবাড়ি থানার পাগলাঘাট গ্রামে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মৃত শিশুটির নাম নেহা মণ্ডল। তার বাবা রাজকুমার লরিচালক। তাঁর দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে নেহা ছোট। এ দিন দুপুরে সে বাড়ির উঠোনে খেলা করছিল। সেই সময় তার পায়ে বিষাক্ত কিছু কামড় দেয়। অসুস্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মেয়েটি। পরিবারের লোকেরা হাসপাতালের বদলে নিয়ে যায় গ্রামেরই এক ওঝার কাছে। অভিযোগ, বিকেল পর্যন্ত ওঝার বাড়িতে শিশুটিকে ঝাড়ফুঁক করা হয়। তাতে তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। এর পরে ওঝারই কথায় শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। তবে ভর্তির কিছুক্ষণ পরেই মৃত্যু হয় শিশুটির।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার তথা সহ-অধ্যক্ষ অমিত কুমার দাঁ বলেন, “শিশুটিকে প্রচণ্ড আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল। গ্রামীণ হাসপাতালেও অ্যান্টি-ভেনাম মজুত রয়েছে। তার পরেও এখনও কিছু মানুষ কুসংস্কারে ডুবে রয়েছে। যার জন্য এ দিনের মতো ঘটনা ঘটছে।”
ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃত শিশুর পরিবারের লোকেরা। রাজকুমার বলেন, “আমাদের ভুলের জন্যই মেয়েকে হারালাম।” স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাগলাঘাট থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যেই রয়েছে গ্রামীণ হাসপাতাল। পাকা রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে গ্রামে। তার পরেও কুসংস্কারের ঘটনা অব্যহত রয়েছে। বছরখানেক আগে গাজলে অসুস্থ শিশুদের হাসপাতালের বদলে ওঝার কাছে নিয়ে গিয়ে ঝাড়ফুঁকের ঘটনা ঘটেছিল। সেই সময় দুই শিশুর মৃত্যুও হয়েছিল। মালদহের বিজ্ঞানমঞ্চের সহ-সভাপতি সুনীলকুমার সরকার বলেন, “মঞ্চের তরফে কুসংস্কার রুখতে লাগাতার প্রচার চালানো হচ্ছে। তার পরেও বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ঘটছে। গ্রামে গ্রামে গিয়ে প্রচারে আরও জোর দেওয়া হবে।” ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy