কোচবিহার লাগোয়া বাংলাদেশের ছিটমহলে বেআইনি কাজকর্মের প্রবণতা কী ভাবে বাড়ছে তা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে নালিশ জানাতে চায় ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি। সেই কারণে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আগামী ৩১ মার্চ ছিটমহল পরিদর্শনে গেলে তাঁর সঙ্গে দেখা করার সময় চেয়ে আর্জি জানাবে কমিটি। আজ, রবিবার জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আর্জি জানাবে কমিটি। কমিটি জানিয়েছে, ছিটমহলের নানা অনৈতিক কাজের ‘ভিডিও ফুটেজ’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা হবে।
সম্প্রতি অষ্টমীর স্নানমেলা উপলক্ষে শুক্রবার রাতভর জুয়ার আসর বসে শিবপ্রসাদ মুস্তাফি ছিটমহল এলাকায়। মধ্য মশালডাঙায় সম্প্রতি আফিম চাষের রমরমা শুরু হয়েছে। মেখলিগঞ্জের বালাপুখুরি থেকে দিনহাটার দিঘলটারি লাগোয়া ছিটমহলের কিছু এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় চোরাচালান বাড়ছে। সব মিলিয়ে ছিটমহল এলাকায় চোরাচালান থেকে জুয়ার আসর, আফিম থেকে গাঁজা চাষের প্রবণতা বাড়ছে বলে উদ্বিগ্ন বাসিন্দারা।
এই পরিস্থিতির মধ্যে সংসদে ছিটমহল বিনিময় সংক্রান্ত স্থল সীমান্ত চুক্তি বিল পেশের আগে মঙ্গলবার ৩১ মার্চ কোচবিহারের তিন বিঘা ও লাগোয়া ছিটমহল সংলগ্ন এলাকায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সফরের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ওই দিনই কয়েক ঘণ্টার সফর সেরে ফিরে যাবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পুলিশ ও বিএসএফ সূত্রের খবর, ওই দিন বাগডোগরা বিমান বন্দর থেকে সরাসরি দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ তিনবিঘা পৌঁছবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনবিঘা করিডর ঘুরে দেখার পর সেখান থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে বালাপুখুরি ছিটমহলের সন্ন্যাসীরহাট সংলগ্ন এলাকায় যাওয়ার কথা তাঁর। ইতিমধ্যে এ জন্য সন্ন্যাসীরহাট লাগোয়া মাঠ সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর সূচির জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”
ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির কর্তারা জানান, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ছিটমহল এলাকায় চোরাচালান সংক্রান্ত ভিডিও ফুটেজ ছাড়াও নানা অনৈতিক কাজের ছবি তুলে দিতে চান তাঁরা। সাক্ষাতের অনুমতি মিললে সে সব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হবে। কমিটির এক সদস্যের অভিযোগ, “শিবপ্রসাদ মুস্তাফি ছিটমহলে শুক্রবার স্নানমেলা উপলক্ষে এসে বহিরাগতরা রাতভর জুয়ার কারবার চালায়। মিষ্টি, ডিম, মদের বোতল থেকে নগদ টাকা পুরস্কারের মোড়কে ওই কারবার চলে। মধ্য মশালডাঙার কিছু এলাকায় আফিম চাষের মরসুম পেরোলে গাঁজা চাষও হচ্ছে।”
ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সহকারি সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “ছিটমহলের বাসিন্দাদের স্বার্থ শুধু নয়, রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার জন্যও দ্রুত স্থল সীমান্ত চুক্তি বিল পাশ হওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেলে আমরা ওই ব্যাপারে আবেদন জানাব। ছিটমহলকে ব্যবহার করে কী ভাবে চোরাচালান হচ্ছে তার ভিডিও ফুটেজ দিতে চাইছি।”
ওই কমিটির সদস্য অরুণ রায় জানান, বালাপুখুরি ছিটমহলের সন্ন্যাসীরহাট লাগোয়া এলাকায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের জন্য সাফাই কাজ হচ্ছে। ফলে, তাঁর কাছে সমস্যার তুলে ধরার সুযোগ মিলবে বলে কমিটি আশায় রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy