Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বড়দিনের হাট জমছে না শামুকতলায়

প্রতি বছর ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই জমে ওঠে বড়দিনের বাজার। পুরোদমে চলে বেচাকেনা। কিন্তু এ বছর নোটের গেরোয় ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহেও জমেনি বাজার।

পসরা সাজিয়ে ফাঁকা বাজারে ব্যবসায়ীরা। — নিজস্ব চিত্র

পসরা সাজিয়ে ফাঁকা বাজারে ব্যবসায়ীরা। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শামুকতলা শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:৩৩
Share: Save:

প্রতি বছর ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই জমে ওঠে বড়দিনের বাজার। পুরোদমে চলে বেচাকেনা। কিন্তু এ বছর নোটের গেরোয় ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহেও জমেনি বাজার।

সামনের সপ্তাহেই বড়দিন। ভাল বেচাকেনা না হলে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। আলিপুরদুয়ার জেলার কাপড় ও জুতো ব্যবসায়ীদের মাথায় এখন এটাই বড় চিন্তা।

শুক্রবার ছিল শামুকতলার সাপ্তাহিক হাট। আলিপুরদুয়ার জেলার সব থেকে বড় হাট। এই হাটে বেচাকেনা করে ১১টি চা বাগান ও আটটি পঞ্চায়েতের অন্তত দু’লক্ষ মানুষ। এই হাটেই সাপ্তাহিক বাজার সারেন তাঁরা। আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন প্রান্তের কয়েক হাজার ব্যবসায়ী বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে এই হাটে আসেন। অন্তত একশো কাপড় ও জুতোর দোকান বসে এই হাটে। ব্যবসায়ীরা জানালেন, পুজোর পরেই বড়দিনের জন্য মালপত্র কিনতে শুরু করেন তাঁরা। প্রতি বছরের মতো এ বছরও তেমনই প্রস্তুতি নিয়েছেন সবাই। কিন্তু গত দুই শুক্রবার একদমই বেচাকেনা হয়নি। এই সপ্তাহেও ক্রেতা খুবই কম। কাপড় ব্যবসায়ী সুজিত সাহা বললেন, ‘‘অন্যবার সকাল ৯টা থেকেই বড়দিনের বাজার জমে যায়। আজ দুপুর সাড়ে বারোটা পর্যন্ত কিছুই বিক্রি হয়নি। ধারে কাপড় আনিয়েছি। মহাজনের দেনার টাকা মেটাব কী ভাবে?’’

সিটুর আলিপুরদুয়ার জেলা সম্পাদক বিদ্যুৎ গুণ বলেন, ‘‘কোন চা বাগানে দু’টি, কোনও চা বাগানে তিনটি পেমেন্ট পিছিয়ে পড়েছে। এর ফলে শ্রমিকরা পেট চালাবে না বড়দিনের নতুন জামা কাপড় কিনবেন?’’ রহিমাবাদ চা বাগানের এক চা শ্রমিক বিরসা ওঁরাও জানালেন, টাকার সমস্যায় মজুরি মিলছে না ঠিকমত। চাল ডাল কিনতেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাই বড়দিনের বাজার বন্ধ। এক কৃষক সাইমন বসুমাতা কথায়,‘‘ ধানের দাম ঠিকমত পাচ্ছি না। তাই ধান বিক্রি করিনি। হাতে টাকা নেই তাই বড়দিনের জামা জুতো কেনা হচ্ছে না। এর মধ্যেও যাঁরা জামা কাপড় কিনতে এসেছেন তারাও বাজেট কমিয়ে দিচ্ছেন।’’ এমনই একজন ক্রেতা ভেলেনটাইনা কিস্কু বললেন,‘‘ব্যাঙ্ক থেকে দু’হাজারের বেশী টাকা মিলছে না। আজ ব্যাঙ্কে গিয়ে টাকা না পেয়ে ফিরে এসেছি। তাই বাজেট কমিয়ে বাজার সারতে হচ্ছে।’’

শামুকতলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কমল পাল বলেন, ‘‘শামুকতলার এক মাত্র ব্যাঙ্কের শাখায় গিয়ে দু’হাজারের বেশি মিলছে না। ফসলের দাম না পেয়ে চাষিরা ফসল বাড়িতে ফিরিয়ে নিচ্ছেন। মানুষের হাতে টাকা নেই তাই বড়দিনের বাজার জমেনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Christmas Markets Demonetisation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE