Advertisement
E-Paper

জোটেই এসেছে সাফল্য 

শুরু সেই ষাটের দশকে। কলকাতায় বসেছিল পশ্চিমবঙ্গ আইনজীবী সংগঠনের সম্মেলন। সেখানেই প্রথম জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা তাঁদের শহরে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের প্রস্তাব দেন।

কমলকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়  

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৯ ০৬:১৭

শুরু সেই ষাটের দশকে। কলকাতায় বসেছিল পশ্চিমবঙ্গ আইনজীবী সংগঠনের সম্মেলন। সেখানেই প্রথম জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা তাঁদের শহরে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের প্রস্তাব দেন। প্রথমে সেটা প্রস্তাব গ্রহণ এবং হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে স্মারকলিপি দেওয়ায় সীমাবদ্ধ ছিল।

ধীরে ধীরে এই দাবি আন্দোলনের চেহারা নিতে শুরু করল। তখন জায়গা দেওয়াও শুরু হল। দাবি উঠল, নবাববাড়িতে সার্কিট বেঞ্চ চালু করা হোক। কিন্তু এই দাবিরও উল্টো মত ছিল। বস্তুত, এই বিষয়ে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের তীব্র মতভেদ হয়। কিন্তু যার যা-ই মত হোক না কেন, জলপাইগুড়িতে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের দাবি এই সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

১৯৭৩ সালে আইনজীবী হিসেবে জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনে যোগ দেওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত হাইকোর্টের বেঞ্চ চালু করার আন্দোলনের প্রতিটি পর্যায়ে সক্রিয় ভাবে যুক্ত থাকার সুযোগ হয়েছে আমার। এই আন্দোলনের সব চাইতে ইতিবাচক দিক হল, দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ ভাবে সর্বস্তরের মানুষের অংশ গ্রহণ। ষাটের দশকে প্রথম বার দাবি ওঠার পর থেকে যা নিয়ে যা-ই মতভেদ হোক না কেন, শহরে সার্কিট বেঞ্চ স্থাপন নিয়ে একজোট হওয়া থেকে কখনও বিচ্যুত হয়নি জলপাইগুড়ি।

চল্লিশ বছরের এই আন্দোলনে অনেক ঘাতপ্রতিঘাত এলেও এই আন্দোলন শেষ করা যায়নি। ঠান্ডা মাথায়, ধৈর্যের সঙ্গে যুক্তির উপর নির্ভর করে আন্দোলনকে সঠিক দিশায় নিয়ে যাওয়ার ফলই ফলতে চলেছে শনিবার। এ দিনও বারবার মনে হয়েছে, শনিবার যা ঘটতে চলেছে, তা কি সত্যি, না স্বপ্ন? কিন্তু আমাদের সামনে স্পষ্ট জবাব রয়েছে, সার্কিট বেঞ্চ আর কল্পনা নয়। স্টেশন রোডের দৃষ্টিনন্দন বাড়িটি বিচার প্রার্থী, বিচারপতি, আইনজীবী-সহ নানা ধরনের মানুষের আনাগোনায় মুখর হয়ে উঠবে খুব শিগগির।

আমার মনে হয়েছে, দাবি পূরণের লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে সমস্ত মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারলে দাবি আদায়ে বিলম্ব হলেও সাফল্য আসবেই। আর ঠিক হাইকোর্ট বেঞ্চের আন্দোলনে এটাই ঘটেছে।

কে ছিলেন না এই লড়াইয়ে? আইনজীবী, ল ক্লার্ক, সমস্ত রাজনৈতিক দল, গণ সংগঠন, কর্মচারী সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, পথের ধারে বসা ব্যবসায়ীরা...। এঁদের সঙ্গে যোগ করুন ব্যবসায়ীদের সংগঠন, ক্রীড়া সংস্থা, ক্লাব, পাঠাগার সাংবাদিকদের সংস্থাকেও। আর সকলের উপরে আছে আমজনতা, জলপাইগুড়ির মানুষ। তাঁদের সকলের একজোট হয়ে আন্দোলনই এই সাফল্য এনে দিয়েছে।

প্রথম পর্যায়ের এই সাফল্য এলেও আমাদের আরও কিছু পথ পাড়ি দিতে হবে। পাহাড়পুরে অধিগৃহীত জমিতে স্থায়ী পরিকাঠামোর নির্মাণ কাজ এখনও শুরু হয়নি। অবিলম্বে যাতে ওই কাজ শুরু হয় তার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

Protest Movement Jalpaiguri Circuit Bench
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy