মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণের নামে মেডিক্যাল কলেজের কাজের সূচনার পাশাপাশি কোচবিহারের জন্য একগুচ্ছ প্রকল্প ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার কোচবিহারের চকচকায় সরকারি প্রকল্পের বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ‘কল্পতরু’ হয়ে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। কোচবিহারের উন্নয়নে একগুচ্ছ উপহার ঘোষণা করেন। সব মিলিয়ে এক দিনে ১১০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কথাও জানিয়ে দেন তিনি। এ দিন কোচবিহার শহর এলাকাকে হেরিটেজ ঘোষণা নিয়েও জোরালো সওয়াল করেন। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, সামনের বছর রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার পরের বছর লোকসভা নির্বাচন। তা মাথায় রেখেই বাসিন্দাদের মন জিততে চান তিনি।
এ দিন কোচবিহারের চকচকার অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “১১০০ কোটির নতুন প্রকল্প দিয়ে গেলাম। আবার মেডিক্যাল কলেজ দিয়ে গেলাম।” মুখ্যমন্ত্রী সভায় জানিয়েছেন, এ দিন বিভিন্ন প্রকল্পে ৭৬ হাজার লোক পরিষেবা পেলেন। দুই বছরের মধ্যে ওই মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হবে। এ জন্য খরচ হবে ১৯০ কোটি টাকা। কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের উদ্বাস্তু কলোনির ৪০০ পরিবারকে জমির দলিল দেওয়া হবে। পাশাপাশি চকচকার অনুষ্ঠান স্থলের মাঠে শিল্প কারখানা তৈরির কথাও ঘোষণা করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এটা সরকারি জায়গা। অনেক শিল্প হবে। কর্মসংস্থানের অনেক সুযোগ তৈরি হবে।” জেলায় রাইস মিল, হিমঘর তৈরির ব্যাপারেও উদ্যোগের কথা জানিয়ে দেন তিনি। কোচবিহার শহরকে হেরিটেজ স্বীকৃতির ব্যাপারেও জোর সওয়াল করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কোচবিহারের জেনকিন্স স্কুল দেখলাম। সার্কিট হাউস, ডিএম বাড়ি থেকে রাস্তার উপর যতগুলি জায়গা দেখেছি টোটাল হেরিটেজ। আমি মনে করি কোচবিহার শহরটা হেরিটেজ ঘোষণা করা উচিত। এটা কোচবিহারের প্রাপ্য।” ওই ব্যাপারে মুখ্যসচিবকে সব কিছু খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে পুলিশের উদ্যোগে আয়োজিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কারও তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করেন। খেলাধুলোর ডাটা ব্যাঙ্ক থেকে জঙ্গল মহলে ৩৫ হাজার চাকরি হয়েছে বলেও সভায় দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলাদেশ, ভুটান, নেপালের সঙ্গে যোগাযোগে রাস্তা যুক্ত করার উদ্যোগের কথাও জানান। ছিটমহল বিনিময়ের কৃতিত্ব দাবির পাশাপাশি সিপিএম, বিজেপিরও কড়া সমালোচনা করেন। মুখ্যমন্ত্রীর আর্জি, “মা-মাটি-মানুষের সরকারের পাশে থাকুন।” বিরোধীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েতের কথা মাথায় রেখেই সরকারি মঞ্চে ভোট জয়ের জন্য ওই বার্তা দিয়েছেন তিনি। যদিও তৃণমূল নেতারা ওই অভিযোগ উড়িয়ে দেন।