জলপাইগুড়ি আদালত চত্বরে লিপিকা। —ফাইল চিত্র।
প্রেমিক অনির্বাণই তার স্বামীকে বিষ খাইয়ে খুন করেছে বলে পুলিশি জেরায় দাবি করল লিপিকা৷
পুলিশ জানিয়েছে, তার দাবি, বেশ কিছুদিন ধরেই অনির্বাণ তার স্বামীকে মারতে চাইছিল৷ ঘটনার দিন সকাল থেকে তাঁর আচরণও ছিল অন্যরকম৷ অনির্বাণের কথাতেই সে দিন ময়নাতদন্ত না করেই উত্তমবাবুর দেহ নিয়ে তারা বাড়ি ফিরে গিয়েছিল, এমনটাও দাবি লিপিকার।
গত বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি কদমতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভাড়াবাড়িতে মৃত্যু হয় এলআইসি-র ডেভেলপমেন্ট অফিসার উত্তম মোহান্তর৷ তাকে খুনের অভিযোগে পরদিন গ্রেফতার করা হয় তাঁর স্ত্রী লিপিকাকে৷ লিপিকার প্রেমিক অনির্বাণ রায়ের খোঁজেও জোর তল্লাশি চলছে।
উত্তমবাবুর ভাইদের অভিযোগ, অনির্বাণের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল লিপিকার। দু’বার পালিয়েও গিয়েছিল তারা। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, উত্তমবাবুর চাকরি ও ভেটাগুড়িতে তাঁর নামে থাকা সাত কাঠা জমি হাতিয়ে নিয়ে বিয়ে করবে বলেই লিপিকা ও অনির্বাণ বিষ মেশানো খাবার খাইয়ে তাকে খুন করে৷
তবে পুলিশ সূত্রের খবর, জেরায় এ দিন লিপিকা দাবি করেন, তিনি কখনই স্বামীকে মারতে চাননি৷ বরং চেয়েছিলেন স্বামীর সঙ্গে থেকেই অনির্বাণের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে৷ কিন্তু অনির্বাণ চাইছিল তার স্বামীকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে৷ একই সঙ্গে পুলিশের কাছে লিপিকার দাবি, তার স্বামীকে যে বিষ খাওয়ানো হয়েছে তা প্রথমে তিনি বুঝতে পারেননি৷ আর সেজন্যই উত্তমবাবুর দেহের ময়নাতদন্ত করাতে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু অনির্বাণ ও অ্যাম্বুলেন্স চালক রূপেশ রাজি হয়নি৷ এরপরই উত্তমবাবুর দেহটি বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়৷ আর রূপেশ চিকিৎসক ধনঞ্জয় চতুর্বেদীকে ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য উত্তমবাবুর ভাড়াবাড়িতে নিয়ে যায়৷
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, জেরায় লিপিকা যে সব দাবি করছে সেগুলি ঠিক কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ পাশাপাশি লিপিকা ও ধৃত চিকিৎসক ধনঞ্জয় চতুর্বেদী দু’জনই রূপেশ নামের অ্যাম্বুলেন্স চালকের নাম নেওয়ায় গোটা ঘটনায় তার কি ভূমিকা বা স্বার্থ তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷
এ দিকে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তমবাবুর মৃত্যুর পর অনেক রাত পর্যন্ত ওই বাড়িতেই ছিল অনির্বাণ৷ কিন্তু যখনই উত্তমবাবুর বাড়ির লোকেরা বিষয়টি নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হবেন বলে সে বুঝতে পারে, তখনই পালিয়ে যায়৷ পুলিশের একাংশের ধারণা, খুব বেশি দূরে পালিয়ে যায়নি অনির্বাণ৷ তার খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চলছে৷
জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy