Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

খুনি প্রেমিকই, দাবি লিপিকার

গত বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি কদমতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভাড়াবাড়িতে মৃত্যু হয় এলআইসি-র ডেভেলপমেন্ট অফিসার উত্তম মোহান্তর৷ তাকে খুনের অভিযোগে পরদিন গ্রেফতার করা হয় তাঁর স্ত্রী লিপিকাকে৷ লিপিকার প্রেমিক অনির্বাণ রায়ের খোঁজেও জোর তল্লাশি চলছে।

জলপাইগুড়ি আদালত চত্বরে লিপিকা। —ফাইল চিত্র।

জলপাইগুড়ি আদালত চত্বরে লিপিকা। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৭ ০২:১৬
Share: Save:

প্রেমিক অনির্বাণই তার স্বামীকে বিষ খাইয়ে খুন করেছে বলে পুলিশি জেরায় দাবি করল লিপিকা৷

পুলিশ জানিয়েছে, তার দাবি, বেশ কিছুদিন ধরেই অনির্বাণ তার স্বামীকে মারতে চাইছিল৷ ঘটনার দিন সকাল থেকে তাঁর আচরণও ছিল অন্যরকম৷ অনির্বাণের কথাতেই সে দিন ময়নাতদন্ত না করেই উত্তমবাবুর দেহ নিয়ে তারা বাড়ি ফিরে গিয়েছিল, এমনটাও দাবি লিপিকার।

গত বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি কদমতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভাড়াবাড়িতে মৃত্যু হয় এলআইসি-র ডেভেলপমেন্ট অফিসার উত্তম মোহান্তর৷ তাকে খুনের অভিযোগে পরদিন গ্রেফতার করা হয় তাঁর স্ত্রী লিপিকাকে৷ লিপিকার প্রেমিক অনির্বাণ রায়ের খোঁজেও জোর তল্লাশি চলছে।

উত্তমবাবুর ভাইদের অভিযোগ, অনির্বাণের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল লিপিকার। দু’বার পালিয়েও গিয়েছিল তারা। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, উত্তমবাবুর চাকরি ও ভেটাগুড়িতে তাঁর নামে থাকা সাত কাঠা জমি হাতিয়ে নিয়ে বিয়ে করবে বলেই লিপিকা ও অনির্বাণ বিষ মেশানো খাবার খাইয়ে তাকে খুন করে৷

তবে পুলিশ সূত্রের খবর, জেরায় এ দিন লিপিকা দাবি করেন, তিনি কখনই স্বামীকে মারতে চাননি৷ বরং চেয়েছিলেন স্বামীর সঙ্গে থেকেই অনির্বাণের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে৷ কিন্তু অনির্বাণ চাইছিল তার স্বামীকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে৷ একই সঙ্গে পুলিশের কাছে লিপিকার দাবি, তার স্বামীকে যে বিষ খাওয়ানো হয়েছে তা প্রথমে তিনি বুঝতে পারেননি৷ আর সেজন্যই উত্তমবাবুর দেহের ময়নাতদন্ত করাতে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু অনির্বাণ ও অ্যাম্বুলেন্স চালক রূপেশ রাজি হয়নি৷ এরপরই উত্তমবাবুর দেহটি বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়৷ আর রূপেশ চিকিৎসক ধনঞ্জয় চতুর্বেদীকে ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য উত্তমবাবুর ভাড়াবাড়িতে নিয়ে যায়৷

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, জেরায় লিপিকা যে সব দাবি করছে সেগুলি ঠিক কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ পাশাপাশি লিপিকা ও ধৃত চিকিৎসক ধনঞ্জয় চতুর্বেদী দু’জনই রূপেশ নামের অ্যাম্বুলেন্স চালকের নাম নেওয়ায় গোটা ঘটনায় তার কি ভূমিকা বা স্বার্থ তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷

এ দিকে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তমবাবুর মৃত্যুর পর অনেক রাত পর্যন্ত ওই বাড়িতেই ছিল অনির্বাণ৷ কিন্তু যখনই উত্তমবাবুর বাড়ির লোকেরা বিষয়টি নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হবেন বলে সে বুঝতে পারে, তখনই পালিয়ে যায়৷ পুলিশের একাংশের ধারণা, খুব বেশি দূরে পালিয়ে যায়নি অনির্বাণ৷ তার খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চলছে৷

জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE